আমাদের দেশে শিল্প প্রতিষ্ঠা করার জন্য অনেকগুলো বিষয় গুরুত্বপূর্ণ। সেসব বিষয় জানা ছাড়া আপনি আপনার শিল্প প্রতিষ্ঠা করতে পারবেন না। আজকে আমি আপনাদেরকে সেগুলো সম্পর্কেই বিস্তারিত বর্ণনা করব। আমি আপনাদেরকে শিল্প প্রতিষ্ঠা করার জন্য কম উৎপাদন খরচ, পরিবহন সুবিধা, উন্নত প্রযুক্তি, সরকারী ভর্তুকি, কম শ্রম ব্যয় এবং কৌশলগত অবস্থানের গুরুত্ব সম্পর্কে বলব। এই বিষয়গুলো জানার পর আপনি শিল্প প্রতিষ্ঠা করার জন্য নিজে থেকেই একটি পরিকল্পনা তৈরি করতে সক্ষম হবেন। তাই, আপনি যদি শিল্প প্রতিষ্ঠা করার কথা ভাবছেন তবে এই লেখাটি আপনার জন্য খুবই গুরুত্বপূর্ণ। এই লেখাটি পড়ার পর আপনি শিল্প প্রতিষ্ঠার জন্য প্রয়োজনীয় বিষয়গুলো সম্পর্কে সম্যক ধারণা পাবেন।
কম উৎপাদন খরচ
চাইনিজ কোম্পানিগুলি খুব কম দামে পণ্য বিক্রি করতে পারার কারণগুলি খুবই জটিল এবং বহুমুখী। এই বিষয়টি বোঝার জন্য, আমাদের তাদের ব্যবসায়িক মডেল, উৎপাদন প্রক্রিয়া এবং বাজারে তাদের অবস্থানের দিকে নজর দিতে হবে।
চাইনিজ কোম্পানিগুলি প্রায়শই ব্যাপক মাপের উৎপাদন করে, যা তাদের কাঁচামাল এবং শ্রম খরচ কমাতে সাহায্য করে। তারা স্বয়ংক্রিয়তা এবং প্রযুক্তির ব্যবহারের মাধ্যমে উৎপাদন কার্যকفاءও বাড়ায়, যা খরচ আরও কমাতে সাহায্য করে।
এছাড়াও, চীন একটি নিম্ন-মজুরি দেশ, যা চাইনিজ কোম্পানিগুলিকে সস্তাতে শ্রমিক নিয়োগ করার অনুমতি দেয়। সরকারি ভর্তুকি এবং অনুদানও কিছু চাইনিজ কোম্পানিকে তাদের খরচ কম রাখতে সাহায্য করে।
বাজারের ক্ষেত্রে, চাইনিজ কোম্পানিগুলি প্রায়শই নিম্ন-মূল্যের পণ্যগুলির উপর দৃষ্টি নিবদ্ধ করে, যা খরচ সচেতন গ্রাহকদের আকর্ষণ করে। তারা বৃহৎ পরিমাণে পণ্য বিক্রি করে অর্থনীতির সুযোগও নেয়, যা তাদের আরও দক্ষতা অর্জন এবং খরচ আরও কমাতে সাহায্য করে।
পরিবহন সুবিধা
একটি সফল ব্যবসার জন্য অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ। এটি দ্রুত এবং দক্ষতার সাথে পণ্য সরবরাহ করতে সহায়তা করে, যা গ্রাহক সন্তুষ্টি এবং ব্যবসার সামগ্রিক সাফল্য নিশ্চিত করে। সঠিক নির্বাচন করার সময় বিবেচনা করার কিছু গুরুত্বপূর্ণ বিষয় হল দ্রুত পণ্য সরবরাহ, নির্ভরযোগ্যতা এবং ব্যয়। বিভিন্ন ধরণের রয়েছে, যেমন সড়ক, রেল, বিমান এবং জলপথ। আপনার ব্যবসার প্রয়োজনীয়তার জন্য কোনটি সবচেয়ে উপযুক্ত তা নির্ধারণ করার জন্য আপনার প্রতিটি বিকল্পের সুবিধা এবং অসুবিধাগুলি বিবেচনা করা উচিত। উদাহরণস্বরূপ, সড়ক পরিবহন দ্রুত এবং সুবিধাজনক, যেখানে রেল পরিবহন বৃহত্তর পরিমাণের পণ্য পরিবহনের জন্য আরও উপযুক্ত হতে পারে। বিমান পরিবহন দ্রুততম বিকল্প, তবে এটি সাধারণত আরও ব্যয়বহুল। জলপথ পরিবহন সবচেয়ে কম ব্যয়বহুল বিকল্প হতে পারে, তবে এটি ধীর। আপনার ব্যবসার প্রয়োজনীয়তা এবং বাজেট বিবেচনা করে সঠিক নির্বাচন করা একটি লাভজনক ব্যবসা পরিচালনার চাবিকাঠি।
উন্নত প্রযুক্তি
চীনা সংস্থাগুলি অত্যন্ত কম দামে পণ্য বিক্রি করে কীভাবে? এটি একটি প্রশ্ন যা আমি প্রায়ই নিজেকে জিজ্ঞাসা করি। কিভাবে তারা অন্যান্য সংস্থাগুলির তুলনায় তাদের পণ্যের দাম এত কম রাখতে সক্ষম হয়? এই প্রশ্নের উত্তরটি জটিল বটে, তবে কারণগুলি বোঝা বেশ গুরুত্বপূর্ণ, যাতে আমরা আমাদের ব্যবসায়ের দক্ষতা আরও ভালভাবে বুঝতে পারি।
সরকারী ভর্তুকি
আমার মতো অনেক সাধারণ মানুষের মনেই একটা প্রশ্ন ঘুরপাক খায় যে চাইনিজ কোম্পানিগুলো খুব কম দামে পণ্য বিক্রি করে কীভাবে? আসলে এর পেছনে রয়েছে মূলত দুটি কারণ।
প্রথমত, চীনা সরকার তাদের দেশীয় কোম্পানিগুলোকে রপ্তানিমুখী পণ্য উৎপাদনে বিভিন্ন ধরনের ভর্তুকি দেয়। এই ভর্তুকিগুলির মধ্যে রয়েছে:
- কাঁচামাল এবং সরঞ্জামের জন্যে কর ছাড়
- শুল্ক অব্যাহতি
- রপ্তানি ক্রেডিট গ্যারান্টি
- সরকারি সহায়তাপুষ্ট ঋণ
কম শ্রম ব্যয়
চাইনিজ কোম্পানিগুলো খুব কম দামে পণ্য বিক্রি করার পেছনে অনেকগুলো কারণ রয়েছে। প্রথমত, তাদের কাছে কাঁচামাল এবং শ্রমের খরচ কম। চীন একটি বিশাল দেশ এবং এটি বিভিন্ন ধরনের কাঁচামালের উৎস। এছাড়াও, চীনে শ্রমের খরচ অন্যান্য দেশের তুলনায় অনেক কম।
দ্বিতীয়ত, চাইনিজ কোম্পানিগুলি পণ্যগুলিকে বৃহৎ আকারে উৎপাদন করে। এটি তাদের প্রতি ইউনিট পণ্যের জন্য উৎপাদন খরচ কমাতে সহায়তা করে। এছাড়াও, চাইনিজ কোম্পানিগুলির প্রায়শই উন্নত সরঞ্জাম এবং প্রযুক্তি থাকে, যা তাদের পণ্যগুলি আরও দক্ষতার সাথে উৎপাদন করতে সহায়তা করে।
তৃতীয়ত, চাইনিজ কোম্পানিগুলির প্রায়শই সরকারী সহায়তা থাকে। চীনা সরকার শিল্পকে সমর্থন করার জন্য বিভিন্ন ধরনের অনুদান এবং কর ছাড়ের প্রস্তাব দেয়। এটি চাইনিজ কোম্পানিগুলিকে তাদের পণ্যগুলি কম দামে বিক্রি করতে সহায়তা করে।
শেষ অবধি, চাইনিজ কোম্পানিগুলি প্রায়শই বিদেশী বাজারে রপ্তানি করে। এর অর্থ তাদের দেশীয় বাজারে তাদের পণ্যগুলি বিক্রি করার চেয়ে কম মুনাফার মার্জিন গ্রহণ করতে হবে। এটি তাদের পণ্যগুলিকে বিদেশী গ্রাহকদের কাছে আরও সাশ্রয়ী করে তোলে।
কৌশলগত অবস্থান
চাইনিজ কোম্পানিগুলো খুব কম দামে পণ্য বিক্রি করার পেছনে একাধিক রয়েছে। প্রথমত, চীনে শ্রমের খরচ তুলনামূলকভাবে কম, যা তাদের পণ্যের উত্পাদন খরচ কমিয়ে দেয়। দ্বিতীয়ত, চীনের কাছে কাঁচামাল এবং উপাদানের একটি বিশাল সরবরাহ রয়েছে, যা তাদের উৎপাদন খরচ আরও কমিয়ে দেয়। তৃতীয়ত, চীনা সরকার রপ্তানিকারকদের বিভিন্ন প্রণোদনা এবং সুবিধা প্রদান করে, যেমন কর ছাড় এবং সাবসিডি। চতুর্থত, চীনা কোম্পানিগুলি প্রায়শই বৃহত আকারের উত্পাদন করে, যা তাদের ইউনিট প্রতি খরচ কমাতে সহায়তা করে। অবশেষে, চীনা কোম্পানিগুলি প্রায়শই উচ্চ-দক্ষতাযুক্ত শ্রমশক্তির প্রবেশাধিকার রাখে, যা তাদের পণ্যের উচ্চমান অর্জন করতে সহায়তা করে। এই সব একত্রে চাইনিজ কোম্পানিগুলিকে খুব কম দামে পণ্য বিক্রি করতে সক্ষম করে।
Leave a Reply