ঢাকা শহরে পুরাতন বাইসাইকেল কেনাবেচার সেরা জায়গা | অবস্থান, দাম ও টিপস

ঢাকা শহরে পুরাতন বাইসাইকেল কেনাবেচার সেরা জায়গা | অবস্থান, দাম ও টিপস

আমি একজন বাইসাইকেল উৎসাহী এবং সেকেন্ড-হ্যান্ড বাইসাইকেলের ভক্ত। আমি মনে করি যে এই চাকার যানবাহনগুলি পরিবেশের জন্য দুর্দান্ত, আপনার স্বাস্থ্যের জন্য দুর্দান্ত এবং আপনার মানসিক স্বাস্থ্যের জন্য দুর্দান্ত। তাই আমি আজ আপনাদের জন্য ঢাকার পুরানো বাইসাইকেলের হাট নিয়ে লিখছি।

এই ব্লগ পোস্টে, আমি আপনাদের ঢাকায় পুরানো বাইসাইকেলের হাটের ঠিকানা দেব, পুরানো বাইসাইকেল ক্রয়ের আগে বিবেচ্য দিক সমূহ নিয়ে আলোচনা করব, পুরানো বাইসাইকেল বিক্রেতাদের খুঁজে পেতে টিপস দেব এবং পুরানো বাইসাইকেল চালানোর আগে নিরাপত্তা বিষয়ক সতর্কতা সম্পর্কে কথা বলব। তাই আপনি যদি পুরাতন বাইসাইকেল কেনার কথা বিবেচনা করছেন, তাহলে এই পোস্টটি আপনার জন্য।

ঢাকার পুরনো বাইসাইকেলের হাটের ঠিকানা

ঢাকার পুরনো বাইসাইকেলের আড়ত কিংবা হাট বলতে প্রাচীনকালে গড়ে ওঠা ‘কামারপুকুর’ অঞ্চলটিকেই বুঝায়। তবে এর আধুনিক ঠিকানা হলো পোস্তগোলা এলাকায়। এই পোস্তগোলা অঞ্চলটি কাওরানবাজারের পোস্তগোলা রেলক্রসিং-এর পাশেই। কামারপুকুরে যেখানে প্রাচীনকালে পেশাদার কাঁসাড়িদের কারখানা ছিল, সেখানেই এখন বসেছে প্রায় তিন শতাধিক বাইসাইকেলের মেরামতের কারখানা এবং পুরোনো বাইসাইকেলের হাট। এক সময় কাঁসার ঘণ্টা, বাসন, অস্ত্রশস্ত্র, সাজসজ্জার সামগ্রী তৈরির জন্য এই এলাকা বিখ্যাত ছিল।

আমাদের দেশের বাইসাইকেল উৎপাদন শুরু হওয়ার আগে প্রায় ১৯৫০-এর দশক থেকেই এই কামারপুকুর বাইসাইকেল সংস্কারের কারখানা হিসেবে কাজ করছিল। পরবর্তী সময়ে দেশে বাইসাইকেল উৎপাদন শুরু হলে ক্রমশই এখানকার কারিগররা পুরোনো বাইসাইকেল রি-জেনারেশনের দিকে মনোযোগ দিতে শুরু করেন। ফলে বর্তমানে কামারপুকুর বা পুরোনো নামানুসারে ‘পোস্তগোলার বাইসাইকেলের হাট’ হিসেবেই বেশি পরিচিত।

পুরাতন বাইসাইকেল ক্রয়ের আগে বিবেচ্য দিকসমূহ

পুরানো বাইসাইকেল কেনার আগে বিবেচ্য দিকসমূহ
যদিও একটি পুরানো বাইসাইকেল কেনা একটি সাশ্রয়ী মূল্যের বিকল্প হতে পারে, তবে ক্রয় করার আগে কয়েকটি বিষয় বিবেচনা করা গুরুত্বপূর্ণ। প্রথমত, বাইকের সাধারণ অবস্থাটি দেখুন। ফ্রেমে কোনো ফাটল বা জং আছে কি না তা পরীক্ষা করুন এবং চাকা সোজা কিনা তা নিশ্চিত করুন। দ্বিতীয়ত, ড্রাইভট্রেন পরীক্ষা করুন। গিয়ারগুলি সঠিকভাবে শিফ্ট হচ্ছে কিনা তা পরীক্ষা করুন এবং চেইনটি প্রসারিত বা জংযুক্ত কিনা তা দেখুন। তৃতীয়ত, ব্রেকগুলি পরীক্ষা করুন। তারা সঠিকভাবে কাজ করছে কিনা তা পরীক্ষা করুন এবং প্যাডগুলি খুব বেশি পাতলা কিনা তা দেখুন। শেষ পর্যন্ত, সাসপেনশন পরীক্ষা করুন। ফর্ক এবং শক অ্যাবজরবার সঠিকভাবে কাজ করছে কিনা তা নিশ্চিত করুন।

See also  গার্মেন্টসে একজন মার্চেন্ডাইজারের করণীয় কী কী?

পুরানো বাইসাইকেল বিক্রেতাদের খোঁজে পেতে টিপস

যদিও ঢাকা শহরে নতুন বাইসাইকেলের দোকানের কোন অভাব নেই, পুরাতন বাইসাইকেলের জন্য জায়গা খোঁজা একটু কঠিন হতে পারে। তবে, কিছু টিপস অনুসরণ করে আপনি আপনার পছন্দের পুরানো বাইকটি খুঁজে পেতে পারেন। প্রথমত, স্থানীয় বাজার এবং দোকানগুলি পরীক্ষা করুন। কখনও কখনও, আপনি সেখানে পুরানো বাইসাইকেল বিক্রি করতে দেখতে পাবেন। দ্বিতীয়ত, অনলাইন মার্কেটপ্লেস, যেমন বিডবাই, চেক করুন। এই প্ল্যাটফর্মগুলির সাধারণত পুরানো বাইসাইকেল বিক্রি করার জন্য একটি নির্দিষ্ট বিভাগ থাকে। তৃতীয়ত, সোশ্যাল মিডিয়া গ্রুপ এবং পেজগুলি অনুসন্ধান করুন যেখানে মানুষ পুরানো জিনিস বিক্রি এবং কেনাবেচা করে। অবশেষে, আপনি বাইসাইকেল মেরামতের দোকানগুলিতেও খোঁজ করতে পারেন। তাদের প্রায়শই বিক্রির জন্য পুরানো বাইক থাকে।

পরিবেশবান্ধব পরিবহন হিসেবে পুরানো বাইসাইকেলের সুবিধাসমূহ

পুরোনো বাইসাইকেলগুলি ফিট থাকার এবং পরিবেশের পক্ষে ভালো থাকার একটি দুর্দান্ত উপায়। তারা খুব কম খরচে যাতায়াতের একটি সুবিধাজনক উপায়ও। যদি তুমি ঢাকায় থাকো এবং একটি পুরাতন বাইসাইকেল কিনতে বা বিক্রি করতে চাও, তাহলে এখানে কয়েকটি জায়গা রয়েছে যেখানে তুমি তা করতে পারো:

  • ফেসবুক মার্কেটপ্লেস: ফেসবুক মার্কেটপ্লেসটি একটি অনলাইন মার্কেটপ্লেস যেখানে তুমি নতুন এবং পুরনো জিনিস কিনতে এবং বিক্রি করতে পারো। তুমি “ঢাকা পুরানো বাইসাইকেল” অনুসন্ধান করে পুরানো বাইসাইকেলের জন্য বিজ্ঞাপন খুঁজে পেতে পারো।

  • সাইকেল স্টেশন: সাইকেল স্টেশনটি কলাবাগানে অবস্থিত একটি সাইকেল শপ যা পুরানো বাইসাইকেল কেনাবেচা করে। তারা বাইসাইকেল সংস্কার এবং রক্ষণাবেক্ষণও করে।

  • চকবাজার: চকবাজার ঢাকার একটি বড় বাজার যেখানে তুমি প্রায় সবকিছু পেতে পারো, তোমার পুরানো বাইসাইকেল সহ। বাজারটি পুরানো বাইসাইকেলের জন্য কিছু নির্দিষ্ট দোকান রয়েছে।

  • আগারগাঁও: আগারগাঁও ঢাকায় একটি এলাকা যেখানে বেশ কয়েকটি সাইকেল দোকান রয়েছে। এই দোকানগুলির মধ্যে কিছু পুরানো বাইসাইকেল কেনাবেচা করে।

  • বনানী: বনানী ঢাকায় একটি সমৃদ্ধ এলাকা যেখানে বেশ কয়েকটি দোকান রয়েছে যেখানে তুমি পুরানো বাইসাইকেল কিনতে পারো। এই দোকানগুলি সাধারণত আরও ব্যয়বহুল, তবে তারা ভালো মানের বাইসাইকেল বিক্রি করে।

See also  কার ভরসা করা যায়, আর কার ভরসা করা যায় না: ঠকবেন না

আমি আশা করি এই তথ্যটি তোমার জন্য সহায়ক হবে। যদি তুমি ঢাকায় একটি পুরাতন বাইসাইকেল কিনতে বা বিক্রি করতে চাও, তাহলে এই স্থানগুলি তোমার খুঁজছো তা খুঁজে পেতে একটি দুর্দান্ত জায়গা।

সুরক্ষা বিষয়ক সতর্কতা: পুরানো বাইসাইকেল চালানোর আগে

ঢাকা শহরে পুরাতন বাইসাইকেল কেনাবেচার জন্য বিখ্যাত কিছু এলাকা হলো-

  • ঢাকার তেজগাঁও এলাকার বড় মনির হক সড়কে সাইকেল কেনার দোকান বেশ কিছু রয়েছে।
  • শাহবাগের মিরপুর রোডে বেশ কিছু সাইকেলের দোকান রয়েছে, যেখানে পুরাতন বাইসাইকেল পাওয়া যায়।
  • ফার্মগেটের কাছের দোয়েল চত্বর এলাকায়ও পুরাতন বাইসাইকেলের বেচাকেনা হয়।
  • পুরান ঢাকার চকবাজার এলাকার পুরাতন মোটর সাইকেলের দোকানগুলোতেও কিছু কিছু পুরাতন বাইসাইকেল পাওয়া যেতে পারে।
  • রমনা পার্কের আশপাশের এলাকায়ও পুরাতন বাইসাইকেল পাওয়া যায়।

এছাড়াও আপনি অনলাইন মার্কেটপ্লেস যেমন- Bikroy.com, OLX, Facebook Marketplace ইত্যাদিতেও পুরাতন বাইসাইকেল খুঁজে পেতে পারেন। ঢাকার বাইরেও পুরাতন বাইসাইকেলের দোকান রয়েছে। তবে ঢাকায় সবচেয়ে বেশি পুরাতন বাইসাইকেলের দোকান পাওয়া যায়।

ঢাকার পুরাতন বাইসাইকেলের বাজারের প্রবণতা

ঢাকায় পুরোনো বাইসাইকেলের বাজার অনেকটাই লুকিয়ে। শহরের ব্যস্ততার মধ্যে ছড়িয়ে ছিটিয়ে আছে কিছু অলিগলি, যেখানে কয়েক দশকের পুরোনো এই যানটি কেনাবেচার হদিস পাওয়া যায়। এমন একটি গলিই হলো ফকিরাপুলের কাছে গোলাপ শাহ মাজারের পাশে অবস্থিত পুরানো বাইসাইকেল মার্কেট। এই বাজার ঘুরে আমি দেখেছি, এখানে নানা ধরনের সাইকেল পাওয়া যায়। ৫০০ থেকে শুরু করে ২০ হাজার টাকা পর্যন্ত দামে মিলছে এগুলো। বেশিরভাগ সাইকেলই দ্বিতীয় বা তৃতীয় হাতের। তবে কিছু নতুন সাইকেলও বিক্রি হয় এখানে।

Rani Avatar

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *