তৃতীয় বিশ্বের দেশ: কী দেশগুলো এই শ্রেণীভুক্ত, কেন এবং এর অর্থ কী?

তৃতীয় বিশ্বের দেশ: কী দেশগুলো এই শ্রেণীভুক্ত, কেন এবং এর অর্থ কী?

আমাদের পৃথিবীর দেশগুলিকে বিভিন্ন উপায়ে শ্রেণীবদ্ধ করা হয়ে থাকে। এর মধ্যে অন্যতম হল উন্নত, উন্নয়নশীল এবং তৃতীয় বিশ্বের দেশ। এই শ্রেণিবিন্যাসটি সাধারণত অর্থনৈতিক, সামাজিক এবং রাজনৈতিক উন্নয়নের উপর ভিত্তি করে করা হয়। আজ আমরা তৃতীয় বিশ্বের দেশ সম্পর্কে আলোচনা করব। এই নিবন্ধে আমরা তৃতীয় বিশ্বের দেশের সংজ্ঞা, ঐতিহাসিক প্রেক্ষাপট, বৈশিষ্ট্য, উদাহরণ, তৃতীয় বিশ্ব থেকে উন্নত বিশ্বে উত্তরণের চ্যালেঞ্জ এবং বাংলাদেশের তৃতীয় বিশ্বের দেশ হিসেবে অবস্থান সম্পর্কে বিস্তারিতভাবে জানব। তাই, যদি আপনি তৃতীয় বিশ্বের দেশ সম্পর্কে বিস্তারিতভাবে জানতে আগ্রহী হন, তাহলে এই নিবন্ধটি আপনার জন্য অবশ্যই পঠনীয়।

তৃতীয় বিশ্বের দেশের সংজ্ঞা

তৃতীয় বিশ্বের দেশ বলতে এমন দেশগুলোকে বোঝানো হয় যারা অর্থনৈতিকভাবে উন্নত নয়, কিন্তু দ্বিতীয় বিশ্বের দেশগুলোর চেয়ে উন্নত। এই দেশগুলোর সাধারণত কম মাথাপিছু আয়, উচ্চ বেকারত্বের হার এবং দুর্বল অবকাঠামো রয়েছে। তৃতীয় বিশ্বের দেশগুলো প্রায়ই রাজনৈতিক অস্থিতিশীলতা এবং দুর্নীতির সম্মুখীন হয়, যা তাদের অর্থনৈতিক উন্নয়নে বাধা সৃষ্টি করে।

তৃতীয় বিশ্বের দেশগুলোর একটি সাধারণ বৈশিষ্ট্য হলো কৃষির উপর তাদের অত্যধিক নির্ভরতা। এই দেশগুলোর অধিকাংশ মানুষ কৃষিকাজে নিযুক্ত, কিন্তু কৃষি উৎপাদন প্রায়ই আধুনিক প্রযুক্তির অভাবে এবং প্রাকৃতিক দুর্যোগের কারণে সীমিত। এর ফলে খাদ্য নিরাপত্তাহীনতা এবং দারিদ্র্যের সৃষ্টি হয়।

তৃতীয় বিশ্বের দেশগুলোর অর্থনৈতিক উন্নয়নে আর একটি বাধা হলো শিল্পের অভাব। এই দেশগুলোতে প্রায়ই প্রযুক্তিগত দক্ষতা এবং পুঁজির অভাব থাকে যা শিল্প স্থাপনের জন্য প্রয়োজনীয়। ফলস্বরূপ, তারা কাঁচামাল রপ্তানি এবং বিদেশি পণ্য আমদানির উপর নির্ভরশীল হয়ে পড়ে, যা তাদের অর্থনীতিকে বৈশ্বিক বাজারের উত্থান-পতনের প্রতি সংবেদনশীল করে তোলে।

তৃতীয় বিশ্বের দেশগুলোর উন্নয়নের জন্য শিক্ষা এবং স্বাস্থ্যসেবার উন্নতি অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ। শিক্ষা মানুষদের দক্ষতা এবং জ্ঞান অর্জন করতে সাহায্য করে, যা তাদের উচ্চ আয়ের কাজ পেতে এবং অর্থনৈতিক উন্নয়নে অবদান রাখতে সক্ষম করে। অন্যদিকে, স্বাস্থ্যসেবা মানুষকে সুস্থ এবং উৎপাদনশীল রাখে, যা অর্থনৈতিক প্রবৃদ্ধিকে উন্নীত করে এবং দারিদ্র্য হ্রাসে সহায়তা করে।

তৃতীয় বিশ্বের দেশগুলোর উন্নয়নে দাতা দেশ এবং আন্তর্জাতিক সংস্থাগুলোর সহায়তাও গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করে। এই সহায়তা অবকাঠামো উন্নয়ন, শিক্ষা এবং স্বাস্থ্যসেবার উন্নতি এবং অর্থনৈতিক সংস্কারের মতো ক্ষেত্রে ব্যবহার করা যেতে পারে। তবে, এই সহায়তা যথাযথভাবে ব্যবহার করা এবং দুর্নীতি এবং অপব্যবহার এড়ানো গুরুত্বপূর্ণ।

See also  মেসি VS রোনালদো: এই যুগের সেরা কে?

তৃতীয় বিশ্বের দেশগুলোর উন্নয়ন একটি জটিল এবং দীর্ঘমেয়াদী প্রক্রিয়া। এই দেশগুলোকে উন্নতিতে সহায়তা করার জন্য অর্থনৈতিক সংস্কার, শিক্ষা এবং স্বাস্থ্যসেবার উন্নতি এবং দাতা দেশ এবং আন্তর্জাতিক সংস্থাগুলোর সহায়তা প্রয়োজন। দারিদ্র্য এবং অর্থনৈতিক অনগ্রসরতা মোকাবেলা করে এই দেশগুলো তাদের নাগরিকদের জন্য একটি উন্নত এবং সমৃদ্ধ ভবিষ্যত গড়ে তুলতে পারে।

ঐতিহাসিক প্রেক্ষাপট

তৃতীয় বিশ্বের দেশ বলতে এমন দেশগুলোকে বোঝানো হয় যারা অর্থনৈতিকভাবে উন্নত নয়, কিন্তু দ্বিতীয় বিশ্বের দেশগুলোর চেয়ে উন্নত। এই দেশগুলোর সাধারণত কম মাথাপিছু আয়, উচ্চ বেকারত্বের হার এবং দুর্বল অবকাঠামো রয়েছে। তৃতীয় বিশ্বের দেশগুলো প্রায়ই রাজনৈতিক অস্থিতিশীলতা এবং দুর্নীতির সম্মুখীন হয়, যা তাদের অর্থনৈতিক উন্নয়নে বাধা সৃষ্টি করে।

তৃতীয় বিশ্বের দেশগুলোর একটি সাধারণ বৈশিষ্ট্য হলো কৃষির উপর তাদের অত্যধিক নির্ভরতা। এই দেশগুলোর অধিকাংশ মানুষ কৃষিকাজে নিযুক্ত, কিন্তু কৃষি উৎপাদন প্রায়ই আধুনিক প্রযুক্তির অভাবে এবং প্রাকৃতিক দুর্যোগের কারণে সীমিত। এর ফলে খাদ্য নিরাপত্তাহীনতা এবং দারিদ্র্যের সৃষ্টি হয়।

তৃতীয় বিশ্বের দেশগুলোর অর্থনৈতিক উন্নয়নে আর একটি বাধা হলো শিল্পের অভাব। এই দেশগুলোতে প্রায়ই প্রযুক্তিগত দক্ষতা এবং পুঁজির অভাব থাকে যা শিল্প স্থাপনের জন্য প্রয়োজনীয়। ফলস্বরূপ, তারা কাঁচামাল রপ্তানি এবং বিদেশি পণ্য আমদানির উপর নির্ভরশীল হয়ে পড়ে, যা তাদের অর্থনীতিকে বৈশ্বিক বাজারের উত্থান-পতনের প্রতি সংবেদনশীল করে তোলে।

তৃতীয় বিশ্বের দেশগুলোর উন্নয়নের জন্য শিক্ষা এবং স্বাস্থ্যসেবার উন্নতি অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ। শিক্ষা মানুষদের দক্ষতা এবং জ্ঞান অর্জন করতে সাহায্য করে, যা তাদের উচ্চ আয়ের কাজ পেতে এবং অর্থনৈতিক উন্নয়নে অবদান রাখতে সক্ষম করে। অন্যদিকে, স্বাস্থ্যসেবা মানুষকে সুস্থ এবং উৎপাদনশীল রাখে, যা অর্থনৈতিক প্রবৃদ্ধিকে উন্নীত করে এবং দারিদ্র্য হ্রাসে সহায়তা করে।

তৃতীয় বিশ্বের দেশগুলোর উন্নয়নে দাতা দেশ এবং আন্তর্জাতিক সংস্থাগুলোর সহায়তাও গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করে। এই সহায়তা অবকাঠামো উন্নয়ন, শিক্ষা এবং স্বাস্থ্যসেবার উন্নতি এবং অর্থনৈতিক সংস্কারের মতো ক্ষেত্রে ব্যবহার করা যেতে পারে। তবে, এই সহায়তা যথাযথভাবে ব্যবহার করা এবং দুর্নীতি এবং অপব্যবহার এড়ানো গুরুত্বপূর্ণ।

See also  কার্যদিবস কি? কয়টা কার্যদিবস থাকে ১ সপ্তাহ/১ মাসে?

তৃতীয় বিশ্বের দেশগুলোর উন্নয়ন একটি জটিল এবং দীর্ঘমেয়াদী প্রক্রিয়া। এই দেশগুলোকে উন্নতিতে সহায়তা করার জন্য অর্থনৈতিক সংস্কার, শিক্ষা এবং স্বাস্থ্যসেবার উন্নতি এবং দাতা দেশ এবং আন্তর্জাতিক সংস্থাগুলোর সহায়তা প্রয়োজন। দারিদ্র্য এবং অর্থনৈতিক অনগ্রসরতা মোকাবেলা করে এই দেশগুলো তাদের নাগরিকদের জন্য একটি উন্নত এবং সমৃদ্ধ ভবিষ্যত গড়ে তুলতে পারে।

তৃতীয় বিশ্বের দেশের বৈশিষ্ট্য

তৃতীয় বিশ্বের দেশগুলি সাধারণত উন্নয়নশীল দেশগুলিকে বোঝায় যেগুলি সাধারণত দারিদ্র্য, অসমানতা এবং জীবনযাত্রার নিম্নমানের দ্বারা চিহ্নিত করা হয়। এই দেশগুলির মাথাপিছু আয় কম, সাক্ষরতার হার কম এবং স্বাস্থ্যসেবা এবং শিক্ষার মতো মৌলিক সুযোগ-সুবিধার অভাব রয়েছে। তাদের প্রায়ই রাজনৈতিক অস্থিরতা, দুর্নীতি এবং দুর্বল শাসনের দ্বারা চিহ্নিত করা হয়। তৃতীয় বিশ্বের দেশগুলির মধ্যে রয়েছে ভারত, চীন, ব্রাজিল, মেক্সিকো এবং ইন্দোনেশিয়া।

তৃতীয় বিশ্বের দেশের উদাহরণ

আমরা প্রায়ই ‘তৃতীয় বিশ্ব’ শব্দটি শুনতে পাই, কিন্তু এর আসল অর্থ কী? তৃতীয় বিশ্ব শব্দটি দ্বিতীয় বিশ্বযুদ্ধের সময় ব্যবহৃত হতো সেসব দেশকে বোঝাতে যারা ন্যাটো বা ওয়ারস শক্তির জোটে অন্তর্ভুক্ত ছিল না। এরপর থেকে, তৃতীয় বিশ্ব শব্দটি সেসব দেশকে বোঝাতে ব্যবহৃত হয় যাদের অর্থনৈতিক ও রাজনৈতিক উন্নয়ন তুলনামূলকভাবে কম।

এই দেশগুলোর সাধারণ বৈশিষ্ট্য হলো দারিদ্র্য, অশিক্ষা, অপুষ্টি এবং রাজনৈতিক অস্থিরতা। তৃতীয় বিশ্বের দেশগুলো প্রায়ই উন্নত দেশগুলোর উপর নির্ভরশীল, বিশেষ করে আর্থিক সহায়তা এবং বাজারের জন্য। তাদের নিজেদের অর্থনীতি এবং রাজনৈতিক ব্যবস্থাও প্রায়ই উন্নত দেশগুলোর দ্বারা প্রভাবিত হয়।

তৃতীয় বিশ্বের দেশগুলোর উন্নয়নশীল দেশ বলা হয় কারণ তারা উন্নতির পথে রয়েছে। তবে, এই দেশগুলোর উন্নয়ন প্রক্রিয়া প্রায়ই দীর্ঘ এবং কঠিন। তৃতীয় বিশ্বের দেশগুলোকে উন্নত দেশগুলোর সহায়তা এবং সহযোগিতার প্রয়োজন, যাতে তারা দারিদ্র্য এবং অন্ধকার থেকে বেরিয়ে আসতে পারে।

তৃতীয় বিশ্ব থেকে উন্নত বিশ্বে উত্তরণের চ্যালেঞ্জ

তৃতীয় বিশ্বের দেশ বলতে সাধারণত সেই সমস্ত দেশকে বোঝানো হয় যাদের অর্থনৈতিক উন্নয়ন এবং মানববিকাশের সূচক অন্যান্য দেশের তুলনায় কম। এই দেশগুলি প্রায়ই দারিদ্রতা, রাজনৈতিক অস্থিরতা এবং সীমিত অবকাঠামো দ্বারা চিহ্নিত করা হয়। তৃতীয় বিশ্বের দেশগুলিতে মাথাপিছু আয় সাধারণত কম হয়, শিক্ষা এবং স্বাস্থ্যসেবা ব্যবস্থা দুর্বল থাকে এবং অর্থনৈতিক প্রবৃদ্ধির হারও কম থাকে। এই দেশগুলি প্রায়ই ঋণের বোঝায় জর্জরিত থাকে এবং দুর্নীতি ও অপরাধের মতো সমস্যাগুলির দ্বারাও প্রভাবিত হয়।

See also  বাংলাদেশের শস্য ভান্ডার: মহান জেলাটির সন্ধান করুন

তৃতীয় বিশ্বের দেশগুলির মধ্যে অনেকগুলিই আফ্রিকা, এশিয়া এবং লাতিন আমেরিকায় অবস্থিত। এই দেশগুলির মধ্যে কয়েকটি হলো: আফগানিস্তান, বাংলাদেশ, বতসোয়ানা, বুরুন্ডি, কম্বোডিয়া, ক্যামেরুন, কঙ্গো, মিশর, এল স্যালভাদর, ঘানা, গিনি, হাইতি, ভারত, ইন্দোনেশিয়া, কেনিয়া, লেসোথো, লাইবেরিয়া, মাদাগাস্কার, মালাউই, মালি, মোজাম্বিক, মিয়ানমার, নেপাল, নাইজেরিয়া, পাকিস্তান, পাপুয়া নিউ গিনি, রুয়ান্ডা, সিয়েরা লিওন, সোমালিয়া, দক্ষিণ সুদান, শ্রীলঙ্কা, সুদান, সিরিয়া, তানজানিয়া, থাইল্যান্ড, টোগো, উগান্ডা, ভিয়েতনাম, ইয়েমেন এবং জিম্বাবুয়ে।

তৃতীয় বিশ্বের দেশগুলির অবস্থা উন্নত করার জন্য বিভিন্ন উদ্যোগ নেওয়া হচ্ছে। এই উদ্যোগগুলির মধ্যে রয়েছে: আর্থিক সহায়তা, প্রযুক্তিগত সহায়তা, শিক্ষা এবং স্বাস্থ্যসেবার উন্নতি এবং সুশাসন প্রতিষ্ঠা। এই উদ্যোগগুলি তৃতীয় বিশ্বের দেশগুলিকে তাদের অর্থনৈতিক এবং সামাজিক উন্নয়নের লক্ষ্য অর্জনে সহায়তা করার লক্ষ্যে নিয়ে নেওয়া হয়েছে।

বাংলাদেশের তৃতীয় বিশ্বের দেশ হিসেবে অবস্থান

এই তৃতীয় বিশ্বের কথা যখন শুনলাম তো হিসেব কষতে শুরু করলাম, তৃতীয় বিশ্বে ঠিক কী কী দেশ আছে? তাও আবার কাদের ভাগে পড়েছে এই তৃতীয় বিশ্বের দেশ হওয়ার অপকীর্তি?

এবার আসি মূল প্রশ্নে। তৃতীয় বিশ্বের দেশ বলতে বোঝানো হয় সেসব দেশকে, যেগুলো আর্থ-সামাজিক উন্নয়নের দিক দিয়ে পিছিয়ে আছে। সাধারণত এই দেশগুলোর অর্থনীতি কৃষিনির্ভর, শিল্পায়নের হার কম, স্বাস্থ্য ও শিক্ষার মানও নিম্ন। রাজনৈতিক অস্থিরতাও এইসব দেশে বেশি দেখা যায়।

একটা সময় ছিল যখন তৃতীয় বিশ্বের দেশগুলোকে তিনটি ভাগে ভাগ করা হতো। যেমন- প্রথম বিশ্ব, দ্বিতীয় বিশ্ব এবং তৃতীয় বিশ্ব। প্রথম বিশ্বে ছিল উন্নত দেশগুলো, যাদের অর্থনীতি ছিল শিল্পনির্ভর এবং উন্নত। দ্বিতীয় বিশ্বে ছিল কমিউনিস্ট দেশগুলো, যাদের অর্থনীতি ছিল কেন্দ্রীয়ভাবে নিয়ন্ত্রিত। আর তৃতীয় বিশ্বে ছিল উন্নয়নশীল দেশগুলো, যাদের অর্থনীতি ছিল কৃষিনির্ভর এবং অপেক্ষাকৃত পিছিয়ে ছিল।

তবে বর্তমানে এই ভাগ নেই। এখন শুধু দুটি বিশ্ব আছে। উন্নত দেশ এবং উন্নয়নশীল দেশ। তবে তৃতীয় বিশ্বের দেশ শব্দটি এখনও প্রচলিত আছে এবং এটি দিয়ে বোঝানো হয় সেসব দেশকে, যেগুলো উন্নয়নের দিক দিয়ে পিছিয়ে আছে।

Pavel Avatar

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *