আমার নাকের ভিতরে লাল হয়ে যায় এবং জ্বলে যায়। এর কারণ কী হতে পারে? এই প্রশ্নটি আপনার মনেও ঘুরে বেড়াচ্ছে কি? যদি তাই হয়, তবে আপনি সঠিক জায়গায় এসেছেন। এই ব্লগ পোস্টে, আমরা নাকের ভিতরে লাল হয়ে যাওয়া এবং জ্বালাপোড়া করার কারণগুলি খুঁজে বের করব। আমরা সাধারণ কারণগুলি থেকে শুরু করে এলার্জি, সংক্রমণ, নাকের শুষ্কতা এবং অন্যান্য কারণগুলিও আলোচনা করব। এছাড়াও, আমরা এই সমস্যাটির চিকিৎসা সম্পর্কেও আলোচনা করব। তাই পড়তে থাকুন এবং আপনার নাকের সমস্যা সম্পর্কে আরও জেনে নিন।
নাকের ভিতরে লাল হয়ে জ্বালাপোড়া করে, এর কারণ কি?
নাকের ভেতর লাল হয়ে যাওয়া এবং জ্বালাপোড়া করার সমস্যা অনেকেরই হয়ে থাকে। এই সমস্যা হঠাৎ হতে পারে আবার দীর্ঘস্থায়ীও হতে পারে। নাকের ভেতর লাল হয়ে জ্বালাপোড়া করার কারণ হিসেবে সাধারণত নিম্নলিখিত কারণগুলো পাওয়া যায়:
অ্যালার্জি: ধূলিকণা, পরাগরেণু, পশুর লোম ইত্যাদির মতো অ্যালার্জেনের সংস্পর্শে আসার ফলে নাকের ভেতরের ঝিল্লি প্রদাহিত হয়ে লাল হয়ে যায় এবং জ্বালাপোড়া করে।
সর্দি বা ফ্লু: সর্দি বা ফ্লু ভাইরাসের সংক্রমণের ফলে নাকের ভেতরের ঝিল্লি প্রদাহিত হয়ে লাল হয়ে যায় এবং জ্বালাপোড়া করে।
ব্যাকটেরিয়াল সংক্রমণ: স্ট্রেপ্টোককাস বা স্টাফিলোককাসের মতো ব্যাকটেরিয়ার সংক্রমণের ফলেও নাকের ভেতর লাল হয়ে জ্বালাপোড়া করতে পারে।
নাকে আঘাত: নাকে আঘাত পেলেও নাকের ভেতর লাল হয়ে জ্বালাপোড়া করতে পারে।
নাকের অন্যান্য সমস্যা: নাকের সিপটাম ডেভিয়েশন, ন্যাজাল পলিপস বা অন্যান্য নাকের সমস্যাগুলির ফলেও নাকের ভেতর লাল হয়ে জ্বালাপোড়া করতে পারে।
নাশক অথবা বাষ্প ব্যবহার: বেশি মাত্রায় নাশক বা বাষ্প ব্যবহার করলে নাকের ভেতর লাল হয়ে জ্বালাপোড়া করতে পারে।
শুষ্কতা: পরিবেশে আর্দ্রতা কম থাকলে নাকের ভেতর শুষ্ক হয়ে জ্বালাপোড়া এবং লাল হয়ে যেতে পারে।অন্য কারণ: কিছুক্ষেত্রে, হরমোন পরিবর্তন, গর্ভাবস্থা বা কিছু ওষুধের পার্শ্বপ্রতিক্রিয়ার কারণেও নাকের ভিতর লাল হয়ে জ্বালাপোড়া করতে পারে।
যদি তোমার নাকের ভিতর লাল হয়ে জ্বালাপোড়া করে এবং এই সমস্যা দীর্ঘস্থায়ী হয়, তাহলে অবশ্যই ডাক্তারের পরামর্শ নেওয়া উচিত। ডাক্তার সমস্যার কারণ নির্ণয় করে তদনুযায়ী চিকিৎসা দিতে পারবেন।
সাধারণ কারণ
নাকের ভিতরে লাল হয়ে জ্বালাপোড়া করার কারণ সম্পর্কে আমাদের সকলেরই অবগত হওয়া উচিত। নাকের ভিতর সাধারণত ঠান্ডা, শুষ্ক এবং সূক্ষ্ম পর্দা দ্বারা আবৃত থাকে। কিছু কারণে এই পর্দাটি ক্ষতিগ্রস্ত হলে বা প্রদাহিত হলে নাকের ভিতরে লালভাব এবং জ্বালাপোড়া দেখা দেয়।
নাকের ভিতরে লালভাব এবং জ্বালাপোড়ার কারণ হতে পারে সংক্রমণ, এলার্জি বা শুষ্কতা। সর্দি, ফ্লু বা সাইনাস সংক্রমণের মতো ভাইরাল বা ব্যাকটেরিয়াল সংক্রমণ নাকের ভিতরের পর্দাকে প্রদাহিত করে লালচে করে তুলতে পারে। এছাড়াও, ধুলো, পোষা প্রাণীর পশম বা পরাগরেণুর মতো এলার্জেনের সংস্পর্শে আসলে নাকের ভিতরে হিস্টামিন নিঃসরণ হয়, যা প্রদাহ এবং জ্বালাপোড়ার কারণ হয়। আবার, শুষ্ক বাতাস বা অতিরিক্ত নাক ফুঁকার কারণে নাকের ভিতরের পর্দা শুষ্ক হয়ে ফেটে যেতে পারে, যার ফলে লালভাব এবং জ্বালাপোড়া দেখা দেয়।
এলার্জি
নাকের ভিতরে লাল হয়ে জ্বালাপোড়া করার অনেকগুলো কারণ থাকতে পারে। এগুলোর মধ্যে সর্বাধিক সাধারণ কারণ হল অ্যালার্জি। যখন শরীর একটি অ্যালার্জেনের সংস্পর্শে আসে, তখন এটি হিস্টামিন নামক একটি রাসায়নিক নিঃসরণ করে। হিস্টামিন রক্তনালীগুলিকে প্রসারিত করে এবং তরল নিঃসরণ বাড়ায়, ফলে নাকের ভিতরের আস্তরণ লাল, ফোলা এবং চুলকানি হয়ে যায়।
অ্যালার্জির সাধারণ লক্ষণগুলির মধ্যে রয়েছে:
- নাক চুলকানি, পানি পড়া এবং/বা বন্ধ হওয়া
- চোখের জল, চুলকানি এবং/বা লাল হওয়া
- গলা খুশখুশি, চুলকানি এবং/বা ফোলা
- কাশি এবং ফুসফুসে শব্দ হওয়া
- মাথাব্যথা
- ক্লান্তি
যদি তোমার নাকের ভিতরে লাল হয়ে জ্বালাপোড়া করছে, তবে এটি অ্যালার্জির লক্ষণ হতে পারে। অ্যালার্জি নির্ণয় করার জন্য তোমার ডাক্তার তোমার লক্ষণ, চিকিৎসা ইতিহাস এবং শারীরিক পরীক্ষার বিষয়ে জিজ্ঞাসা করবেন। তিনি অ্যালার্জি নিশ্চিত করতে ত্বকের পরীক্ষা বা রক্ত পরীক্ষারও পরামর্শ দিতে পারেন।
সংক্রমণ
নাকের ভিতরে লাল হয়ে জ্বালাপোড়া করার উপসর্গটি বিভিন্ন কারণের দ্বারা সৃষ্টি হতে পারে।
অ্যালার্জি: ধূলো, পশম, গাছপালা বা অন্যান্য অ্যালার্জেনের সংস্পর্শে আসলে শরীর হিস্টামিন নিঃসরণ করে, যা নাকের ভিত্তির প্রদাহ, লালভাব এবং জ্বালাপোড়া সৃষ্টি করতে পারে।
সর্দি বা ফ্লু: ভাইরাসজনিত কারণে নাকের ভিতরে প্রদাহ হতে পারে, যা লালচে এবং জ্বালাপোড়া করতে পারে।
সাইনাসাইটিস: সাইনাস ক্যাভিটির ফলে সাইনাসাইটিস হতে পারে, যা নাকের ভিত্তির ত্বকের লালচে এবং জ্বালাপোড়া সৃষ্টি করতে পারে।
নাকের সেপ্টামের বক্রতা: নাকের মধ্যচ্ছদা একটি কার্টিলিজ এবং হাড়ের দেয়াল যা নাকের গহ্বরকে দুটি নাসা পথে বিভক্ত করে। দেয়ালটি বক্র হলে এটি এক দিকে বাতাসের প্রবাহকে বাধা দিতে পারে এবং অন্য দিকে প্রদাহ, লালচে এবং জ্বালাপোড়া সৃষ্টি করতে পারে।
নাকের অভ্যন্তরীণ গঠন: নাকের ভিতরে ছোট ছোট লোম এবং গ্রন্থি রয়েছে যা বাতাসকে ফিল্টার করতে এবং আর্দ্র করতে সাহায্য করে। এই কাঠামোগুলি ক্ষতিগ্রস্ত বা প্রদাহিত হলে এটি নাকের ভিত্তির লালচে এবং জ্বালাপোড়া সৃষ্টি করতে পারে।
অন্যান্য কারণ সমূহ
নাকের ভিতর লাল হয়ে জ্বালাপোড়া করার বিভিন্ন কারণ রয়েছে। এই সমস্যাটির কয়েকটি সাধারণ কারণ এখানে দেওয়া হলো:
- নাকের শ্লেষ্মাঝিল্লি শুষ্ক হয়ে গেলে, এটি জ্বালাতন এবং জ্বলন সৃষ্টি করতে পারে। এটি বিশেষ করে শীতের মাসগুলি এবং নিম্ন আর্দ্রতার পরিবেশে ঘটতে পারে।
- অ্যালার্জি: এলার্জি যেমন ঘাস, গাছপালা, ধূলো বা পোষা প্রাণীর পশমের প্রতিক্রিয়ায় নাকের ভিতর লাল এবং জ্বালাপোড়া হতে পারে।
- সাইনাস সংক্রমণ: সাইনাসে সংক্রমণের ফলে নাকের ভিতরে জ্বালা, লালভাব এবং ব্যথা হতে পারে।
- ঠান্ডা বা ফ্লু: ঠান্ডা বা ফ্লু নাকের ভিতরের শ্লেষ্মাঝিল্লির প্রদাহ সৃষ্টি করতে পারে, যা জ্বালা এবং জ্বলন সৃষ্টি করতে পারে।
- নাকের পলিপস: নাকের ভিতরে মাংসল বৃদ্ধি, যাকে পলিপ বলা হয়, নাকের ভিতরের জ্বালা এবং জ্বলনে অবদান রাখতে পারে।
Leave a Reply