পাঞ্চশীল নীতি প্রথম কে ঘোষণা করেন? পাঁচটি নীতির বিস্তারিত আলোচনা

পাঞ্চশীল নীতি প্রথম কে ঘোষণা করেন? পাঁচটি নীতির বিস্তারিত আলোচনা

আমরা সকলেই জানি যে, আজকের আধুনিক বিশ্বে দেশগুলোর মধ্যে সহযোগিতা এবং সুসম্পর্ক অনেক বেশি গুরুত্বপূর্ণ হয়ে দাঁড়িয়েছে। আর এই সহযোগিতা ও সুসম্পর্ক বজায় রাখার জন্য রয়েছে কিছু নিয়মনীতি, যেগুলোকে বলা হয় ‘আন্তর্জাতিক সম্পর্কের মূলনীতি’। এই মূলনীতিগুলোর মধ্যে অন্যতম হলো ‘পাঞ্চশীল নীতি’। আজ আমি আপনাদের সাথে এই পাঞ্চশীল নীতি সম্পর্কেই কথা বলবো। এই আর্টিকেলটি পড়ে আপনি জানতে পারবেন, পাঞ্চশীল নীতি কী, এর উদ্ভাবক কারা, কখন এবং কোথায় এটি ঘোষণা করা হয়েছিল, কীভাবে এটি আন্তর্জাতিক সম্পর্কের ক্ষেত্রে প্রভাব ফেলেছে, এবং বর্তমানে এর গুরুত্ব কতখানি।

পাঞ্চশীল নীতির উদ্ভব

পাঞ্চশীল হল পাঁচটি নীতির একটি সেট যা ১৯৫৪ সালে ইন্দোনেশিয়া, মিয়ানমার, ভারত, পাকিস্তান এবং শ্রীলঙ্কা দ্বারা প্রণীত হয়েছিল। এই নীতিগুলি হল:

  1. পারস্পরিক সম্মানের সহাবস্থান
  2. আক্রমণ না করা
  3. অ-হস্তক্ষেপ
  4. সমতা এবং পারস্পরিক সুবিধা
  5. শান্তিপূর্ণ সহাবস্থান

পাঞ্চশীল নীতিটি প্রথমবার ১৯৫৪ সালের এপ্রিল মাসে ইন্দোনেশিয়ার বান্দুং শহরে অনুষ্ঠিত এশিয়া-আফ্রিকা সম্মেলনে ঘোষণা করা হয়েছিল। এই সম্মেলনে ২৯টি দেশ অংশগ্রহণ করেছিল এবং এর লক্ষ্য ছিল ঔপনিবেশিক শাসন থেকে মুক্ত হওয়া এবং বিশ্বে শান্তি ও সহযোগিতা প্রচার করা।

পাঞ্চশীল নীতিটি একটি গুরুত্বপূর্ণ নথি কারণ এটি একটি স্বাধীন এবং শান্তিপূর্ণ এশিয়া গড়ার জন্য একটি ফ্রেমওয়ার্ক সরবরাহ করে। এই নীতিগুলি বিশ্বের অন্যান্য অংশেও প্রভাব ফেলেছে এবং আন্তর্জাতিক সম্পর্কের একটি গুরুত্বপূর্ণ অংশ হয়ে উঠেছে।

পাঞ্চশীল নীতির প্রথম ঘোষণাকারী

ভারতের প্রধানমন্ত্রী হিসেবে পঞ্চশীল নীতির প্রথম ঘোষণাকারী হলেন জওহরলাল নেহরু। তিনি ১৯৪৭ সালে ভারতের স্বাধীনতার পর এই নীতিগুলি ঘোষণা করেছিলেন। এই নীতিগুলি ভারতের পররাষ্ট্রনীতির ভিত্তি ছিল এবং বহু বছর ধরে ভারত সরকার কর্তৃক অনুসরণ করা হয়েছে।

পঞ্চশীল নীতিগুলি হল:

  • অন্য দেশের অভ্যন্তরীণ বিষয়ে হস্তক্ষেপ না করা।
  • আগ্রাসন বা হুমকির প্রয়োগ না করা।
  • সমস্ত বিরোধ শান্তিপূর্ণ উপায়ে সমাধান করা।
  • অন্য দেশের সার্বভৌমত্ব এবং অখণ্ডতার প্রতি সম্মান প্রদর্শন করা।
  • পরস্পর অসহযোগিতা এবং পারস্পরিক সুবিধা।
See also  আমাদের মিশরের ক্লিওপেট্রা, নীল নদের রানি

এই নীতিগুলি ভারতকে একটি শান্তিপূর্ণ এবং অহস্তক্ষেপমূলক দেশ হিসাবে প্রতিষ্ঠা করতে সাহায্য করেছে। এটি ভারতকে বিভিন্ন দেশের সাথে ভাল সম্পর্ক বজায় রাখতেও সাহায্য করেছে। পঞ্চশীল নীতিগুলি আন্তর্জাতিক সম্পর্কের ক্ষেত্রে একটি গুরুত্বপূর্ণ অবদান।

বান্দুং সম্মেলন

১৯৫৫ সালের ১৮ থেকে ২৪শে এপ্রিল ইন্দোনেশিয়ার বান্দুং শহরে অনুষ্ঠিত হয়। এই সম্মেলনটি এশিয়া ও আফ্রিকার ২৯টি দেশের প্রতিনিধিদের নিয়ে অনুষ্ঠিত হয়। সম্মেলনের উদ্দেশ্য ছিল ঔপনিবেশিক শাসন থেকে মুক্ত হওয়া এশিয়া ও আফ্রিকার দেশগুলোর মধ্যে ঐক্য ও সহযোগিতা বৃদ্ধি করা।

ে পাঞ্চসীল নীতি ঘোষণা করা হয়েছিল। এই নীতির পাঁচটি মূলনীতি হলো:

  • পারস্পরিক সম্মানের ভিত্তিতে সব জাতির সমতা
  • সার্বভৌমত্ব ও আঞ্চলিক অখণ্ডতা
  • অভ্যন্তরীণ বিষয়ে অহস্তক্ষেপ
  • সমস্যা সমাধানে সহযোগিতা
  • সীমান্তের শান্তিপূর্ণ সহাবস্থান

পাঞ্চসীল নীতি বিশ্বের অনেক দেশের শান্তি ও সহযোগিতার ভিত্তি হিসেবে গ্রহণ করা হয়েছে। এটি জাতিসংঘের অন্যতম মূলনীতি এবং অনেক আন্তর্জাতিক চুক্তিতে অন্তর্ভুক্ত হয়েছে।

পঞ্চ এশিয়ান দেশের প্রতিনিধিরা

১৯৫৫ সালের ১৮ থেকে ২৪শে এপ্রিল ইন্দোনেশিয়ার বান্দুং শহরে অনুষ্ঠিত হয়। এই সম্মেলনটি এশিয়া ও আফ্রিকার ২৯টি দেশের প্রতিনিধিদের নিয়ে অনুষ্ঠিত হয়। সম্মেলনের উদ্দেশ্য ছিল ঔপনিবেশিক শাসন থেকে মুক্ত হওয়া এশিয়া ও আফ্রিকার দেশগুলোর মধ্যে ঐক্য ও সহযোগিতা বৃদ্ধি করা।

ে পাঞ্চসীল নীতি ঘোষণা করা হয়েছিল। এই নীতির পাঁচটি মূলনীতি হলো:

  • পারস্পরিক সম্মানের ভিত্তিতে সব জাতির সমতা
  • সার্বভৌমত্ব ও আঞ্চলিক অখণ্ডতা
  • অভ্যন্তরীণ বিষয়ে অহস্তক্ষেপ
  • সমস্যা সমাধানে সহযোগিতা
  • সীমান্তের শান্তিপূর্ণ সহাবস্থান

পাঞ্চসীল নীতি বিশ্বের অনেক দেশের শান্তি ও সহযোগিতার ভিত্তি হিসেবে গ্রহণ করা হয়েছে। এটি জাতিসংঘের অন্যতম মূলনীতি এবং অনেক আন্তর্জাতিক চুক্তিতে অন্তর্ভুক্ত হয়েছে।

পাঞ্চশীল নীতির প্রভাব এবং গুরুত্ব

আন্তর্জাতিক সম্পর্ক এবং কূটনীতিতে পাঞ্ছশীল নীতিটি একটি গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করে। এই নীতিটি প্রথমবারের মতো ১৯৫৪ সালে ইন্দোনেশিয়ার বান্দুং শহরে অনুষ্ঠিত এশীয় ও আফ্রিকান রাষ্ট্রসমূহের সম্মেলনে ঘোষণা করা হয়েছিল। এই সম্মেলনে পাঁচটি মূলনীতি গৃহীত হয়েছিল, যা পরবর্তীকালে পাঞ্ছশীল নীতি নামে পরিচিত হয়।

See also  কনফুসিয়াস কে ছিলেন? জীবন, দর্শন এবং উত্তরাধিকার

পাঞ্ছশীল নীতির মূলনীতিগুলি হল:

  1. পারস্পরিক সম্মান এবং অখণ্ডতার ভিত্তিতে সমস্ত দেশের সার্বভৌমত্ব ও অখণ্ডতা।
  2. আক্রমণ না করা এবং অন্য দেশের অভ্যন্তরীণ বিষয়ে হস্তক্ষেপ না করা।
  3. সকল দেশের স্ব-নির্ধারণের অধিকার।
  4. পরস্পরের স্বার্থ ও সহযোগিতার ভিত্তিতে সমস্যা সমাধান।
  5. শান্তিপূর্ণ সহাবস্থান।

পাঞ্ছশীল নীতি বেশ কয়েকটি দেশের পররাষ্ট্র নীতিতে অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করেছে। এটি বিশেষ করে ভারত ও ইন্দোনেশিয়ার মতো অনেক উন্নয়নশীল দেশের মধ্যে বন্ধুত্বপূর্ণ সম্পর্ক প্রতিষ্ঠায় সহায়ক হয়েছে। এটি অ-গুটনিরপেক্ষতার নীতির ভিত্তি হিসাবেও কাজ করেছে, যা শীতল যুদ্ধের সময় অনেক দেশ দ্বারা গৃহীত হয়েছিল।

সিদ্ধান্ত

পাঞ্চশীল নীতি প্রথম ঘোষণা করেন ইন্দোনেশিয়ার রাষ্ট্রপতি সুকর্ণো। তিনি ১৯৫৫ সালের ২৪ এপ্রিল বাণ্ডুং সম্মেলনে এই নীতিকে প্রথম জনসমক্ষে উপস্থাপন করেন। এই নীতিটি এশিয়া ও আফ্রিকার নব্য-স্বাধীন দেশগুলির মধ্যে সহযোগিতা ও সংহতি প্রচারের জন্য তৈরি করা হয়। পাঞ্চশীলের পাঁচটি মূলনীতি হল:

  1. পারস্পরিক সম্মান এবং অখণ্ডতার ভিত্তিতে সমস্ত জাতির মধ্যে সহযোগিতা।
  2. উপনিবেশিকতা ও সাম্রাজ্যবাদের সমস্ত রূপের বিরুদ্ধে সংগ্রাম।
  3. সকল দেশের অভ্যন্তরীণ বিষয়ে হস্তক্ষেপ না করা।
  4. সকল দেশের সার্বভৌমত্ব এবং আঞ্চলিক অখণ্ডতার প্রতি সম্মান।
  5. শান্তিপূর্ণ সহাবস্থানের প্রতিশ্রুতি।

পাঞ্চশীল নীতিটি আন্তর্জাতিক সম্পর্কের ক্ষেত্রে একটি গুরুত্বপূর্ণ অবদান হিসাবে বিবেচিত হয়। এটি এমন একটি সময়ে ঘোষণা করা হয় যখন এশিয়া এবং আফ্রিকার অনেক দেশ উপনিবেশিক শাসনের শৃঙ্খল থেকে মুক্তি লাভ করছিল। পাঞ্চশীল নীতি তাদেরকে ঐক্যবদ্ধ হতে এবং স্বাধীনতার নতুন যুগে সহযোগিতা করতে সাহায্য করে।

Pritom Avatar

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *