বাংলাদেশকে ব-দ্বীপ বলা হয় কেন? জানুন আজই!

বাংলাদেশকে ব-দ্বীপ বলা হয় কেন? জানুন আজই!

বাংলাদেশকে ব-দ্বীপ বলা হয়। তবে আপনি কি জানেন বাংলাদেশকে ব-দ্বীপ বলা হয় কেন? না জেনে থাকলে এই আর্টিকেলটি আপনার জন্যই। কেননা এখানে জানতে পারবেন সে বিষয়েই।

আমি প্রায়ই গানটি গুনগুন করি, “আমার সোনার বাংলা, আমি তোমায় ভালবাসি।” কিন্তু কীভাবে আমরা আমাদের দেশকে সত্যিই ভালবাসতে পারি যদি আমরা তার ভৌগোলিক অবস্থান এবং বিশেষত্বগুলি না জানি? এই ব্লগ পোস্টে, আমি বাংলাদেশের ভৌগোলিক অবস্থান সম্পর্কে বিস্তারিতভাবে আলোচনা করব, পদ্মা-মেঘনার সঙ্গমস্থলের তাৎপর্য, গঙ্গা-ব্রহ্মপুত্র ব-দ্বীপের অংশ হওয়ার গুরুত্ব, সমুদ্র থেকে বিপুল পরিমাণ পলি জমে সৃষ্টি এবং ব-দ্বীপের বৈশিষ্ট্যসমূহ। এছাড়াও, আমি উল্লেখ করব যে কীভাবে আন্তর্জাতিকভাবে বাংলাদেশকে একটি ব-দ্বীপ হিসেবে স্বীকৃতি দেওয়া হয়েছে। আমার লক্ষ্য হল আপনাকে আমাদের দেশের ভৌগোলিক বৈশিষ্ট্য সম্পর্কে একটি স্পষ্ট ধারণা দেওয়া যাতে আপনি বাংলাদেশকে আরও ভালভাবে বুঝতে এবং তার প্রতি আপনার ভালবাসা আরও গভীর করতে পারেন।

বাংলাদেশের ভৌগোলিক অবস্থান

আমি জন্মেছি এবং বড় হয়েছি উত্তরের একটি নদী বন্দরে। ছোটবেলায় নদীর ঘাটে খেলাধুলা করতাম। নদীকে ঘিরেই আমাদের দিন কাটত। সে নদীর পাড়ে দাঁড়িয়েই দেখেছি বিশাল বিশাল জাহাজ নদী ভেঙে সমুদ্রের দিকে যায়। আর ইলিশ মাছের ডিঙি নৌকা গুলো ঘাটে ভীড় করে মাছ বিক্রি করে। দূরের পাড়ে দাঁড়িয়ে থাকা জাহাজ গুলোকে হাতের মুঠোয় মনে হলেও তাদের কাছে যাওয়া যায় না। সেইসময় বড়দের কাছে জানতে চাইতাম, ‌‘ওই জাহাজ গুলো কোথায় যাচ্ছে’? উত্তরে শুনতাম, ‘ওরা সমুদ্রে যাচ্ছে’। আবার জিজ্ঞেস করতাম, ‘সমুদ্র কি’? তখন আবার উত্তর আসত, ‘সমুদ্র এক বিশাল পানির ভান্ডার। এতো বড় যে তার কোন শেষ নেই। তবে তার অবস্থান ভূমির চেয়ে অনেক নিচে’। এই উত্তরেই আমার মনে জেঁকে বসেছিল সমুদ্র এক বিশাল জলরাশি। সমুদ্রের পানিতে ডুবে যাওয়ার ভয়ে কখনও আর মাঝ নদীতে যাওয়ার সাহস করিনি।

See also  কেন বাংলাদেশকে ছয় ঋতুর দেশ বলা হয়? এর বিশেষ কারণ জেনে নিন!

পদ্মা-মেঘনার সঙ্গমস্থল

আমি জন্মেছি এবং বড় হয়েছি উত্তরের একটি নদী বন্দরে। ছোটবেলায় নদীর ঘাটে খেলাধুলা করতাম। নদীকে ঘিরেই আমাদের দিন কাটত। সে নদীর পাড়ে দাঁড়িয়েই দেখেছি বিশাল বিশাল জাহাজ নদী ভেঙে সমুদ্রের দিকে যায়। আর ইলিশ মাছের ডিঙি নৌকা গুলো ঘাটে ভীড় করে মাছ বিক্রি করে। দূরের পাড়ে দাঁড়িয়ে থাকা জাহাজ গুলোকে হাতের মুঠোয় মনে হলেও তাদের কাছে যাওয়া যায় না। সেইসময় বড়দের কাছে জানতে চাইতাম, ‌‘ওই জাহাজ গুলো কোথায় যাচ্ছে’? উত্তরে শুনতাম, ‘ওরা সমুদ্রে যাচ্ছে’। আবার জিজ্ঞেস করতাম, ‘সমুদ্র কি’? তখন আবার উত্তর আসত, ‘সমুদ্র এক বিশাল পানির ভান্ডার। এতো বড় যে তার কোন শেষ নেই। তবে তার অবস্থান ভূমির চেয়ে অনেক নিচে’। এই উত্তরেই আমার মনে জেঁকে বসেছিল সমুদ্র এক বিশাল জলরাশি। সমুদ্রের পানিতে ডুবে যাওয়ার ভয়ে কখনও আর মাঝ নদীতে যাওয়ার সাহস করিনি।

গঙ্গা-ব্রহ্মপুত্র ব-দ্বীপের অংশ

হওয়ার কারণে বাংলাদেশকে ব-দ্বীপ বলা হয়। গঙ্গা ও ব্রহ্মপুত্র নদীর ব-দ্বীপে অবস্থিত হওয়ায় আমাদের দেশের ভূমিরূপের প্রধান বৈশিষ্ট্য হলো – নিম্নাঞ্চল, সমভূমি এবং জলাভূমি। গঙ্গা ও ব্রহ্মপুত্র নদী হাজার হাজার বছর ধরে তাদের পলি দিয়ে এই ব-দ্বীপটি গঠন করেছে। এই নদীগুলি হিমালয়ের তুষার গলানো পানি দ্বারা পুষ্ট হয় এবং প্রচুর পরিমাণে পলি বহন করে। যখন এই নদীগুলি সমুদ্রের কাছে পৌঁছায়, তখন তাদের গতি কমে যায় এবং সেগুলি তাদের বহন করা পলি জমা করে। এই পলির স্তরগুলি ক্রমশ জমা হয়ে উঁচু ভূমির সৃষ্টি করে, যাকে ব-দ্বীপ বলা হয়।

সমুদ্র থেকে বিপুল পরিমাণ পলি জমে সৃষ্টি

হওয়া দেশ বাংলাদেশকে ব-দ্বীপ বলা হয়। ব-দ্বীপ দুটি শব্দ দ্বারা গঠিত, ‘ব’ অর্থ ডেল্টা এবং ‘দ্বীপ’ অর্থ জল দ্বারা বেষ্টিত ভূখণ্ড। বাংলাদেশের দক্ষিণাঞ্চলে গঙ্গা, ব্রহ্মপুত্র ও মেঘনা নদীর সংযোগস্থলে পলি জমে বিশাল একটি ত্রিভুজাকার ভূমির সৃষ্টি হয়েছে, যাকে গঙ্গা ব্রহ্মপুত্র ব-দ্বীপ বলা হয়। এই বিশাল অঞ্চল জুড়ে অনেক ছোট বড় দ্বীপ ও চর রয়েছে। প্রতিবছর বর্ষাকালে নদীগুলো পাহাড় থেকে প্রচুর পলি ও পানি নিয়ে আসে এবং সেই পলিগুলো সমুদ্রে মিশে গিয়ে নতুন চর ও দ্বীপের সৃষ্টি করে। এভাবেই সময়ের সাথে সাথে বাংলাদেশ ভূখণ্ডের আয়তনও বাড়ছে।

See also  বাংলার প্রথম জনক: অজানা ইতিহাসের রহস্য উদঘাটন করুন

ব-দ্বীপের বৈশিষ্ট্যসমূহ

বাংলাদেশকে ব-দ্বীপ বলা হয় কারণ এর অধিকাংশ এলাকা নদী ও সাগরের মধ্যে অবস্থিত। দেশের প্রায় ৮০% এলাকা সমুদ্রপৃষ্ঠ থেকে মাত্র ৬ মিটার উঁচু। এ ছাড়াও, বাংলাদেশের তিন দিকে রয়েছে বিশ্বের বৃহত্তম ব-দ্বীপ সুন্দরবন। সুন্দরবন প্রায় ১০,০০০ বর্গ কিলোমিটার এলাকা জুড়ে বিস্তৃত, যা বাংলাদেশের মোট ভূখণ্ডের প্রায় ১৫%। এসব ভৌগোলিক কারণে বাংলাদেশকে ব-দ্বীপ বলা হয়।

আন্তর্জাতিকভাবে ব-দ্বীপ হিসেবে স্বীকৃতি

যখন কোনো দেশের বেশির ভাগ এলাকা সমুদ্র তলের নিচে অবস্থান করে এবং সেই এলাকাটি সাধারণত প্লাবিত, তখন তাকে ব-দ্বীপ বলা হয়। বাংলাদেশ বিশ্বের অন্যতম বৃহৎ ব-দ্বীপ। দেশটির প্রায় 80% এলাকা সমুদ্র তল থেকে মাত্র 10 মিটার উচ্চতায় অবস্থিত। এ কারণে বাংলাদেশ ব-দ্বীপ নামে পরিচিত।

এছাড়াও, দেশটির উপকূলরেখা ব্যাপকভাবে দ্বীপপুঞ্জ, খাঁড়ি এবং জোয়ারের প্রবাহ দ্বারা চিহ্নিত করা হয়। বাংলাদেশের উপকূলরেখা বিশ্বের সবচেয়ে দুর্বল উপকূলরেখার মধ্যে একটি বলে বিবেচিত হয়। সাইক্লোন, জলোচ্ছ্বাস এবং ভূমিধ্বসের মতো প্রাকৃতিক দুর্যোগের জন্য দেশটি অত্যন্ত ঝুঁকিপূর্ণ।

বাংলাদেশকে ব-দ্বীপ হিসাবে আন্তর্জাতিকভাবে স্বীকৃতি দেওয়া হয়েছে। জাতিসংঘ এবং অন্যান্য আন্তর্জাতিক সংস্থাগুলি দেশটিকে একটি ব-দ্বীপ হিসাবে স্বীকৃতি দেয়। এ স্বীকৃতি বাংলাদেশকে আন্তর্জাতিক সহায়তা এবং তহবিলের জন্য যোগ্য করে তোলে।

Pavel Avatar

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *