বেকারত্বের প্রকৃতির খুঁটিনাটি বিশ্লেষণ: বিভিন্ন শ্রেণীবিভাগ উন্মোচন

বেকারত্বের প্রকৃতির খুঁটিনাটি বিশ্লেষণ: বিভিন্ন শ্রেণীবিভাগ উন্মোচন

বেকারত্ব: একটি সামাজিক রোগ

বেকারত্ব হলো আমাদের সমাজে একটি চিরন্তন সমস্যা। প্রতিটি দেশ, প্রতিটি প্রজন্ম এই সমস্যার মুখোমুখি হয়। বেকারত্ব শুধুমাত্র অর্থনৈতিক সমস্যা নয়, এটি একটি সামাজিক রোগ। এটি ব্যক্তি, সমাজ এবং দেশ উভয়ের জন্যই ক্ষতিকর। বেকারত্বের প্রভাব দূরব্যাপী হতে পারে, ব্যক্তিগত আর্থিক সংকট থেকে সামাজিক অস্থিরতা পর্যন্ত। এই ব্লগ পোস্টে, আমি বেকারত্বের বিভিন্ন প্রকার এবং এর প্রভাবগুলি অন্বেষণ করব। আমি বেকারত্বের সম্ভাব্য কারণ এবং সমাধানও আলোচনা করব। আমার লক্ষ্য হল বেকারত্ব সম্পর্কে আরও বোঝার সরবরাহ করা এবং আমাদের সমাজ থেকে এই সামাজিক রোগ নির্মূল করার উপায়গুলি অন্বেষণ করা।

বেকারত্বের সংজ্ঞা

ঃ বেকারত্ব বলতে সেই অবস্থাকে বোঝায় যেখানে সক্ষম এবং ইচ্ছুক শ্রমিকরা রুটিরুজি খুঁজে পায় না। বেকারত্বের হার বেকারদের সংখ্যাকে শ্রমশক্তির শতাংশের সাথে ভাগ করে গণনা করা হয়। বেকারত্ব একটি গুরুতর সমস্যা কারণ এটি ব্যক্তি, সমাজ এবং অর্থনীতির উপর নেতিবাচক প্রভাব ফেলে।

বেকারত্বের প্রকৃতিকে তিনটি প্রধান ভাগে ভাগ করা যায়: ঘর্ষণজনিত বেকারত্ব, চক্রীয় বেকারত্ব এবং স্ট্রাকচারাল বেকারত্ব।

  • ঘর্ষণজনিত বেকারত্ব: এটি অস্থায়ী বেকারত্ব যা ঘটে যখন শ্রমিকরা একটি চাকরি থেকে অন্য চাকরিতে স্থানান্তরিত হয়। এটি স্বাভাবিক এবং অর্থনীতির একটি সুস্থ অংশ বলে বিবেচনা করা হয়।
  • চক্রীয় বেকারত্ব: এটি অর্থনৈতিক মন্দার সময় ঘটে যখন ব্যবসাগুলি কম উৎপাদন করে এবং কর্মীদের ছাঁটাই করে। চক্রীয় বেকারত্ব মন্দার গভীরতা এবং দৈর্ঘ্যের উপর নির্ভর করে।
  • স্ট্রাকচারাল বেকারত্ব: এটি ঘটে যখন শ্রমশক্তির দক্ষতা প্রযুক্তিগত উন্নতি বা অর্থনৈতিক পুনর্গঠনের কারণে প্রয়োজনীয় দক্ষতাগুলির সাথে মেলে না। স্ট্রাকচারাল বেকারত্ব দীর্ঘমেয়াদী হতে পারে এবং এটি মোকাবেলা করা কঠিন।

বেকার প্রকারের বিভাজন

বেকারত্বের প্রকৃতিকে বিভাজিত করলে প্রধানত তিনটি প্রকার দেখা যায়:

  • ঘর্ষণাত্মক বেকারত্ব: যখন শ্রমিকরা একটি চাকরি থেকে অন্য চাকরিতে যাওয়ার মধ্যে সাময়িক সময়ের জন্য বেকার হয়ে থাকে, তখন তাকে ঘর্ষণাত্মক বেকারত্ব বলা হয়। এটি অর্থনীতিতে স্বাভাবিক বলে বিবেচিত হয়, কারণ মানুষ কাজ পরিবর্তন করতে সময় নেয়।
  • চক্রবৃদ্ধি বেকারত্ব: যখন অর্থনীতিতে মন্দা বা অবনতির সময় দীর্ঘমেয়াদী বেকারত্ব দেখা দেয়, তখন তাকে চক্রবৃদ্ধি বেকারত্ব বলা হয়। এটি অর্থনৈতিক সংকোচনের ফলে হতে পারে এবং বেকারত্বের হার ব্যাপকভাবে বাড়িয়ে তুলতে পারে।
  • কাঠামোগত বেকারত্ব: যখন প্রযুক্তিগত অগ্রগতি বা শিল্পের পরিবর্তনের কারণে শ্রমিকদের দক্ষতা আর প্রাসঙ্গিক থাকে না তখন কাঠামোগত বেকারত্ব দেখা দেয়। এই বেকারত্বের ক্ষেত্রে বেকার ব্যক্তিদের নতুন দক্ষতা অর্জন করতে প্রশিক্ষণের প্রয়োজন হতে পারে।
See also  একজন বিমানবাহিনীর কর্মকর্তার আকর্ষণীয় সুযোগ-সুবিধাগুলি জানুন

ইচ্ছাকৃত বেকারত্ব

বেকারত্বের প্রকৃতিকে কী কী ভাগে ভাগ করা যায়, সেই প্রশ্নের উত্তর খুঁজছ? আজকে আমরা তোমাদের সাথে সেই সম্পর্কেই আলোচনা করব।

বেকারত্বকে মূলত দুই ভাগে ভাগ করা যায়:

১) স্বেচ্ছাকৃত বেকারত্ব (Voluntary Unemployment):
এই ধরনের বেকারত্ব তখন ঘটে যখন কোনো ব্যক্তি সচেতনভাবে কাজ করতে রাজি হয় না। উদাহরণস্বরূপ, একজন শিক্ষার্থী বা একজন গৃহকর্মী যিনি শিশুদের দেখাশোনা বা ঘরের কাজ করার জন্য কাজ করা এড়িয়ে যান।

২) অনৈচ্ছিক বেকারত্ব (Involuntary Unemployment):
এই ধরনের বেকারত্ব তখন ঘটে যখন কোনো ব্যক্তি কাজে যোগদানের জন্য ইচ্ছুক এবং সক্ষম, কিন্তু তিনি কোনো কাজ পান না। উদাহরণস্বরূপ, একজন বেকার যিনি মাসের পর মাস কাজের খোঁজ করছেন কিন্তু কোনো সুযোগ পাচ্ছেন না।

অনিচ্ছাকৃত বেকারত্ব

ের প্রকৃতিকে নিম্নলিখিত ভাগে ভাগ করা যায়:

অর্থনৈতিক বেকারত্ব: যখন অর্থনীতির মন্দার সময় কারখানাগুলি বন্ধ হয়ে যায় বা কর্মী সংখ্যা হ্রাস পায়, তখন এই ধরণের বেকারত্ব ঘটে।

কাঠামোগত বেকারত্ব: প্রযুক্তির উন্নতি বা শিল্পের পরিবর্তনের কারণে যখন একটি নির্দিষ্ট দক্ষতাবিশিষ্ট কর্মীদের প্রয়োজন থাকে না, তখন এই ধরণের বেকারত্ব ঘটে।

ঘর্ষণাত্মক বেকারত্ব: যখন কর্মীরা চাকরি খুঁজছে বা একটি চাকরি থেকে অন্য চাকরিতে যাচ্ছে, তখন এই ধরণের বেকারত্ব ঘটে। এটি সাধারণত অস্থায়ী হয়।

প্রান্তিক বেকারত্ব: যখন কর্মীদের বয়স, অভিজ্ঞতা বা শিক্ষার ঘাটতির কারণে চাকরি খুঁজে পাওয়া কঠিন হয়ে পড়ে, তখন এই ধরণের বেকারত্ব ঘটে।

প্রচ্ছন্ন বেকারত্ব: যখন কর্মীরা খণ্ডকালীন বা কম বেতনের চাকরিতে নিযুক্ত হন, যা তাদের দক্ষতা বা শিক্ষার সাথে মেলে না, তখন এই ধরণের বেকারত্ব ঘটে।

ঘর্ষণমূলক বেকারত্ব

হল যখন অর্থনৈতিক পরিস্থিতির কারণে তোমার জন্য উপযুক্ত কাজ করার ইচ্ছা এবং খোঁজার ক্ষমতা থাকা সত্ত্বেও তুমি কাজ পাচ্ছ না। এটি সাধারণত অর্থনৈতিক মন্দার মতো বৃহত্তর অর্থনৈতিক শক্তির ফল। বিভিন্ন কারণে হতে পারে, যেমন প্রযুক্তিগত অগ্রগতির কারণে শিল্পে চাকরির হ্রাস, শিল্পের মধ্যে স্থানান্তর বা অর্থনৈতিক নীতিতে পরিবর্তন। সাধারণত অস্থায়ী হয়, কারণ অর্থনীতি পুনরুদ্ধারের সাথে সাথে মানুষ কাজ খুঁজে পায়। তবে, কিছু ক্ষেত্রে, দীর্ঘস্থায়ী হতে পারে, যা ব্যক্তি এবং অর্থনীতি উভয়ের জন্যই বিধ্বংসী হতে পারে।

See also  একটি বিয়োগ অংকের সর্বোচ্চ সংখ্যা কত? জেনে নিন সহজে

যদি তুমি ের শিকার হও, তাহলে তোমার জন্য কাজ খুঁজতে বিভিন্ন পদক্ষেপ নেওয়া গুরুত্বপূর্ণ। তুমি প্রথমে নেটওয়ার্কিং ইভেন্ট এবং জব বোর্ডের মাধ্যমে তোমার সারসংকলন এবং কভার লেটার বিতরণ করা শুরু করতে পার। তুমি ভলান্টিয়ারিং বা ইন্টার্নশিপের মতো অভিজ্ঞতা অর্জন করতেও বিবেচনা করতে পার, যা তোমাকে সম্ভাব্য নিয়োগকর্তাদের কাছে আরও আকর্ষণীয় করে তুলবে। অবশেষে, তুমি তোমার দক্ষতা এবং জ্ঞানকে উন্নত করার জন্য কোর্স বা প্রশিক্ষণ কার্যক্রম গ্রহণ করতে পার, যা তোমাকে আরও প্রতিযোগিতামূলক করতে সাহায্য করবে।

কাঠামোগত বেকারত্ব

ের বিকাশের পেছনে কয়েকটি কারণ রয়েছে। প্রথমত, প্রযুক্তিগত অগ্রগতি এবং যান্ত্রিকীকরণের কারণে শ্রম বাজারে শ্রমের চাহিদা হ্রাস পায়। দ্বিতীয়ত, বিশ্বায়ন এবং মুক্ত বাণিজ্য চুক্তিগুলি বিভিন্ন শিল্পে বিদেশে উৎপাদন স্থানান্তরিত করে এবং এর ফলে ঘরোয়া বাজারে চাকরি হারায়। তৃতীয়ত, সরকারী নীতি, যেমন সর্বনিম্ন মজুরি আইন, কখনও কখনও শ্রমের চাহিদাকে হ্রাস করতে পারে যদি নियोक्ताদের উচ্চ মজুরি প্রদানের সামর্থ্য না থাকে। পরিশেষে, শিক্ষা এবং দক্ষতা ঘাটতির কারণে শ্রমিকরা শ্রম বাজারের চাহিদা পূরণ করতে অক্ষম হতে পারে। এই সব কারণ ের ক্রমবর্ধমান হারে অবদান রাখে।

Torik Avatar

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *