যখনই হারানোর ভয় হয়, সেটা আগে হারিয়ে যায় কেন?

যখনই হারানোর ভয় হয়, সেটা আগে হারিয়ে যায় কেন?

আমি গত পাঁচ বছর ধরে ডেটা সায়েন্টিস্ট হিসাবে কাজ করছি এবং এই সময়ে আমি অনেক সফলতার সাক্ষী হয়েছি। তবে, আমি ব্যর্থতার সম্মুখীন হয়েছি এবং এ থেকে অনেক কিছু শিখেছি। আমি বুঝতে পেরেছি যে সফলতা এবং ব্যর্থতার মধ্যে একটি পাতলা রেখা রয়েছে এবং প্রায়শই আমাদের নিজেদের মন মস্তিষ্কই আমাদের সাফল্য অর্জন বা ব্যর্থ হওয়ার ক্ষেত্রে একটি বড় ভূমিকা পালন করে।

এই ব্লগ পোস্টে, আমি এমন কিছু সাইকোলজিক্যাল ফ্যাক্টর নিয়ে আলোচনা করব যা আমাদের সাফল্য অর্জনে বাধা দিতে পারে। আমি এগুলি সনাক্ত করার উপায়ও ব্যাখ্যা করব এবং প্রতিটি ক্ষেত্রে কীভাবে এই বাধাগুলি কাটিয়ে উঠতে হয় তার কিছু কার্যকরী টিপস দেব। এই ফ্যাক্টরগুলি বোঝার এবং তাদের প্রভাব কাটিয়ে ওঠার মাধ্যমে, আমরা আমাদের সাফল্যের সম্ভাবনা উল্লেখযোগ্যভাবে বাড়াতে পারি।

সাইকোলজিক্যাল ফ্যাক্টর: ‘লস এভারশন’

মৌলিক অধিকার হল এমন সুরক্ষা ও স্বাধীনতা, যা আমাদের সরকারের কাছ থেকে পাওয়া উচিত এবং যা আমাদের জীবন, স্বাধীনতা এবং সম্পত্তির সুরক্ষার জন্য অপরিহার্য। আমরা সবাই মৌলিক অধিকারের অধিকারী, যা আমাদের জাত, ধর্ম, লিঙ্গ, বর্ণ বা জাতীয়তার নির্বিশেষে প্রাপ্য।

মৌলিক অধিকার আমাদেরকে বাকস্বাধীনতা, ধর্মীয় স্বাধীনতা এবং প্রেস স্বাধীনতার মতো গুরুত্বপূর্ণ বিষয়গুলির সুরক্ষা প্রদান করে। তারা আমাদের নিরাপত্তা এবং শান্তির জন্যও অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ, কারণ তারা আমাদের অভিযুক্ত হওয়ার আগে বিচারের অধিকার এবং নিষ্ঠুর ও অস্বাভাবিক শাস্তি থেকে সুরক্ষার অধিকারের মতো অধিকার প্রদান করে।

ব্যক্তি হিসাবে আমাদের অধিকার রক্ষা করা আমাদের দায়িত্ব এবং এই অধিকারগুলির প্রতি ঘৃণা প্রদর্শন করা গণতন্ত্রের প্রতি ঘৃণা প্রদর্শনেরই নামান্তর। সুতরাং, আমাদের মৌলিক অধিকারগুলিকে সম্মান করা এবং তাদের রক্ষার জন্য নিরলস প্রচেষ্টা চালিয়ে যাওয়া অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ।

ইন্টারন্যালাইজড পজিটিভ বিলিফ

মানে হলো নিজেকে সবসময় ভালো কিছু বিশ্বাস করানো। এটা সব সময় ভাবা যে তোমার জীবনে সবকিছু ঠিক আছে এবং ভালোভাবেই চলছে। এটা এমন একধরনের আত্মবিশ্বাস যা তোমাকে জীবনের কঠিন সময়গুলোতেও মোকাবেলা করতে সাহায্য করে।

See also  কম দামের মধ্যে একজন শিক্ষককে কি কি উপহার বই দিতে পারেন?

যখন তুমি নিজেকে কিছু ইতিবাচক বিশ্বাস করাতে থাকো, তখন তুমি সেগুলোকে আত্মস্থ করে ফেলো। এবং একবার তুমি যখন সেগুলোকে আত্মস্থ করে ফেলো, তখন তুমি সেগুলোকে তোমার জীবনে প্রতিফলিত হতে দেখতে শুরু করো। তুমি দেখতে পাবে যে তোমার জীবনে ভালো জিনিসগুলো ঘটতে শুরু করছে। তুমি আরো সফল হতে শুরু করো, তোমার সম্পর্কগুলো আরো ভালো হয় এবং তুমি সাধারণভাবে জীবনকে আরো বেশি উপভোগ করো।

তবে সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ জিনিসটি হলো, তোমাকে এই ইতিবাচক বিশ্বাসগুলোকে সত্যিকার অর্থেই বিশ্বাস করতে হবে। তুমি যদি শুধুমাত্র তাদের বলো কিন্তু তাদের বিশ্বাস না করো, তাহলে তারা কাজ করবে না। তাই নিশ্চিত করো যে তুমি তোমার বিশ্বাসগুলোকে আত্মস্থ করে ফেলেছো এবং তুমি তাদের প্রতি সত্যনিষ্ঠ। যদি তুমি এটা করতে পারো, তাহলে তুমি তোমার জীবনে অসাধারণ পরিবর্তন দেখতে শুরু করবে।

অ্যাটেনশনাল বায়াস

এটা কি তোমার সঙ্গেও হয়েছে যে, তুমি সবসময় যে জিনিস হারানোর ভয় পাচ্ছো, সেটাই তোমার হারিয়ে যায়? যখন তুমি ব্যস্ত থাকো এবং মনোযোগ কম থাকে, তখন এই ধরণের ঘটে। যখন আমাদের মন সর্বদা একটি নির্দিষ্ট ফলাফলের ওপর দৃষ্টি নিবদ্ধ করে, তখন আমাদের অন্যান্য জিনিস লক্ষ্য করার সম্ভাবনা কমে যায়। ফলে, আমরা যে জিনিসগুলি হারানোর ভয় পাচ্ছি সেগুলির প্রতিই আমাদের মনোযোগ কমে যায় এবং এটিই হারিয়ে যাওয়ার কারণ হয়ে দাঁড়ায়।

এখানে একটি উদাহরণ দেওয়া যেতে পারে: যদি তুমি তোমার গাড়ির চাবি হারানোর ভয় পাও, তাহলে তুমি সম্ভবত এটি কোথায় রেখেছো বা এটি সাথে আছে কি না সেদিকে তোমার মনোযোগ থাকবে না। ফলে, তুমি চাবি হারানোর সম্ভাবনা বেশি করবে কারণ তুমি তা খুঁজতে যথেষ্ট মনোযোগ দিচ্ছো না।

এই টি আমাদের জীবনের অন্যান্য ক্ষেত্রেও প্রভাব ফেলতে পারে-যেমন, পরীক্ষায় ভালো করার ভয় বা কোনো প্রতিযোগিতায় জেতার ভয়। যখন আমরা এই ধরণের ভয় দ্বারা নিয়ন্ত্রিত হই, তখন আমরা প্রায়ই আমাদের লক্ষ্য অর্জনের জন্য প্রয়োজনীয় পদক্ষেপগুলি নিতে অক্ষম হই।

See also  গাছের পাতাগুলো কেন লাল হয়ে যায়? বিস্তারিত জানুন

তাই, যদি তুমি দেখো যে তুমি সবসময় যে জিনিস হারানোর ভয় পাচ্ছো সেটাই হারাচ্ছো, তাহলে জানো যে এটি একটি সাধারণ । এই বায়াসের প্রভাব কমানোর জন্য, তোমার উদ্বেগের কারণ শনাক্ত করার চেষ্টা কর এবং তারপর এমন কৌশলগুলি অনুশীলন কর যা তোমাকে মনোযোগী থাকতে এবং সচেতন হতে সাহায্য করবে।

সেলফ-ফুলফিলিং প্রফেসি

আমাদের মনের যে দিকটা আমরা প্রাধান্য দিই, যে দিকটা নিয়ে বেশি ভাবি, সে দিকটা সচরাচর ঘটে থাকে। এটা একটা মানসিক প্রক্রিয়া। যেমন, যদি আমরা মনে করি আমরা কোনো কাজে পটু নই, তখন আমরা সেটা করার আগেই ভয় পেতে শুরু করি, আর এটাই আমাদের সেই কাজে ব্যর্থ হওয়ার কারণ হয়ে দাঁড়ায়। আমাদের দ্বারা যখন এটা ঘটে তখন এটাকে বলা হয়, ‘সেলফ-লিমিটিং বিলিফ’।

যে জিনিসটি হারানোর ভয় সবচেয়ে বেশি থাকে তা সবার আগে হারিয়ে যায় কেন?কারণ, যখন আমরা কোনোকিছু হারানোর ভয় পাই, তখন আমাদের মন সব সময় সেই জিনিসটিকে খোয়ানোর আশঙ্কা নিয়ে থাকে। এটা আমাদের মনকে এতটা প্রভাবিত করে যে, আমরা সেই জিনিসটিকে রক্ষা করার জন্য কার্যকর পদক্ষেপ নিতেও ব্যর্থ হই। ফলে, আমাদের ভয়ের জিনিসটা আমাদের কাছ থেকে সহজেই হারিয়ে যায়।

সেলফ-সাবোটেজ

যা হারানোর ভয় থাকে, সেটাই কেন সবার আগে হারিয়ে যায়?
একটি কিছুটা জটিল প্রক্রিয়া যা আমাদের সকলের জীবনে বিভিন্ন সময়ে মাথাচাড়া দেয়। এটি কীভাবে কাজ করে তা বোঝা গেলে এর প্রভাব কমিয়ে নিজেদের আরও বেশি নিয়ন্ত্রণ রাখা সম্ভব। এই অনুচ্ছেদে, আমরা ের প্রক্রিয়াটি এবং কীভাবে তা আমাদের জীবনকে বিরূপভাবে প্রভাবিত করতে পারে সে সম্পর্কে আলোকপাত করব। আমরা এটির প্রভাব কীভাবে প্রশমিত করতে পারি সে সম্পর্কেও কয়েকটি টিপস নিয়ে আসব যাতে আপনি নিজের মধ্যে এই অবাঞ্ছিত আচরণটির প্রভাব কমাতে পারেন।

See also  পুষ্পা সিনেমাটি এত জনপ্রিয় কেন? জেনে নিন এর কারণগুলো

ব্যবহারিক টিপস: লস এভারশন কাটিয়ে ওঠা

হারানোর ভয় যা আমাদেরকে জড়িয়ে রাখে, তা শুধু আমাদের সীমাবদ্ধই করে না, তা আমাদের লক্ষ্যে পৌঁছানোর পথও ব্যাহত করে। কিন্তু কেন যে জিনিস হারানোর ভয় থাকে সেটাই সবার আগে হারিয়ে যায়, তা কি তুমি ভেবে দেখেছ? এটা কি শুধুমাত্র দুর্ভাগ্য, নাকি এর পেছনে রয়েছে আরও কিছু গভীর কারণ?

আসলে, লস এভারশন আমাদের মনস্তাত্ত্বিক প্রকৃতির একটি অংশ। আমাদের মস্তিষ্ক ক্ষতি এড়াতে এবং লাভ অর্জন করতে প্রোগ্রাম করা হয়েছে। এই প্রবৃত্তি আমাদেরকে বিপদ থেকে দূরে রাখতে সাহায্য করে এবং আমাদের বেঁচে থাকতে দেয়। তবে, যখন আমরা অতিরিক্ত লস এভারশন অনুভব করি, তখন এটি আমাদের পক্ষপাতিত্ব তৈরি করে এবং কার্যকর সিদ্ধান্ত নেওয়া কঠিন করে তোলে। এর ফলে আমরা আত্মবিশ্বাস হারাতে পারি, ঝুঁকি নিতে ভয় পাই এবং এমনকি ব্যর্থতার প্রত্যাশায় কাজ শুরু করার আগেই হাল ছেড়ে দিতে পারি।

Rani Avatar

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *