জিনগত তত্ত্বে, টেস্টক্রস এবং বেকক্রস হল দুটি গুরুত্বপূর্ণ প্রকারের পরীক্ষা ক্রস যা একটি প্রভাবী জিনের জন্য একটি হেটেরোজাইগাস ব্যক্তির জিনোটাইপ নির্ধারণ করতে ব্যবহৃত হয়। এই নিবন্ধে, আমি টেস্টক্রস এবং বেকক্রসের সংজ্ঞা, তাদের মধ্যে পার্থক্য এবং কেন সকল টেস্টক্রস বেকক্রস নয় এবং সকল বেকক্রস টেস্টক্রস নয় সে সম্পর্কে আলোচনা করব। উদাহরণের মাধ্যমে, আমি এই ধারণাগুলিকে আরও স্পষ্ট করব এবং জিনগত পরীক্ষায় এই ধরনের ক্রসের গুরুত্ব ব্যাখ্যা করব।
টেস্টক্রস ও বেকক্রসের সংজ্ঞা
পরীক্ষণে, আমাদের প্রায়শই দুটি ধরণের ক্রস ব্যবহার করতে হয় – টেস্টক্রস এবং ব্যাকক্রস। উভয়ই জিনোটাইপ निर्धारणের শক্তিশালী সরঞ্জাম, তবে তাদের মধ্যে গুরুত্বপূর্ণ পার্থক্য রয়েছে যা বোঝা গুরুত্বপূর্ণ।
একটি টেস্টক্রস হল একটি জিনোটাইপ সনাক্ত করার জন্য ব্যবহৃত একটি ক্রস যেখানে একটি হেটেরোজাইগাস প্রশ্নীয় জিনোটাইপের সাথে একটি হোমোজাইগাস রিসেসিভ প্রকারের সাথে প্রজনন করা হয়। এই ক্রসের ফলাফলের উপর ভিত্তি করে, আমরা প্রশ্নীয় জিনোটাইপ নির্ধারণ করতে পারি। যদি সব সন্তানের প্রকাশক ফেনোটাইপ থাকে, তবে প্রশ্নীয় জিনোটাইপ হবে হোমোজাইগাস ডমিন্যান্ট (AA)। অন্যদিকে, যদি অর্ধেক সন্তান প্রকাশক এবং অর্ধেক রিসেসিভ ফেনোটাইপ থাকে, তবে প্রশ্নীয় জিনোটাইপটি হেটেরোজাইগাস (Aa) হবে।
একটি ব্যাকক্রস হল একটি ক্রস যেখানে একটি হেটেরোজাইগাস প্রশ্নীয় জিনোটাইপের সাথে তার হোমোজাইগাস রিসেসিভ সন্তানের সাথে প্রজনন করা হয়। এই ক্রসটি প্রজননের মাধ্যমে প্রাপ্ত রিসেসিভ অ্যালিলগুলির সংখ্যা বাড়াতে ব্যবহৃত হয়। ব্যাকক্রসের ফলাফলের উপর ভিত্তি করে, আমরা প্রশ্নীয় জিনোটাইপের অ্যালিলিক কম্পোজিশন সম্পর্কে আরও তথ্য পেতে পারি।
টেস্টক্রস এবং বেকক্রসের মধ্যে পার্থক্য
এটি সত্য যে, সকল টেস্টক্রসই বেকক্রস, কিন্তু সকল বেকক্রস টেস্টক্রস নয়। এর কারণ হলো, টেস্টক্রস এবং বেকক্রসে কয়েকটি মৌলিক পার্থক্য রয়েছে।
টেস্টক্রসটি একটি জিনোটাইপ নির্ধারণ করার জন্য একটি বিশেষ ধরনের বংশগতিগত সংক্রমণ। এটি একটি হেটেরোজাইগাস ব্যক্তিকে একটি হোমোজাইগাস রিসেসিভ ব্যক্তির সাথে সংক্রমিত করে করা হয়। ফলাফলের অনুপাতটি জেনোটাইপ নির্ধারণ করে।
অপরদিকে, বেকক্রস হলো একটি ধরনের বংশগতিগত সংক্রমণ যেখানে একটি হেটেরোজাইগাস ব্যক্তিকে একটি হোমোজাইগাস রিসেসিভ ব্যক্তির সাথে সংক্রমিত করা হয়। তবে, টেস্টক্রসের বিপরীতে, বেকক্রসের উদ্দেশ্য হলো হেটেরোজাইগাস ব্যক্তির জিনোটাইপ নির্ধারণ করা নয়। বরং, এটি হলো রিসেসিভ অ্যালিল বহনকারী সন্তানের উৎপাদন বাড়ানোর একটি উপায়।
সুতরাং, সকল টেস্টক্রসই বেকক্রস হতে পারে, কিন্তু সকল বেকক্রস টেস্টক্রস নয়। পার্থক্যটি হলো উদ্দেশ্য এবং ফলাফলের ব্যাখ্যা। টেস্টক্রস জিনোটাইপ নির্ধারণের জন্য ব্যবহৃত হয়, যখন বেকক্রস রিসেসিভ অ্যালিল বহনকারী সন্তানের উৎপাদন বাড়ানোর জন্য ব্যবহৃত হয়।
সকল টেস্টক্রস কেন বেকক্রস?
সকল বেকক্রস টেস্টক্রস নয় কেন?
আমরা সবাই জানি যে সব টেস্টক্রসই বেকক্রস কিন্তু সব বেকক্রস টেস্টক্রস নয়। কারণ, টেস্টক্রস এমন একটি পদ্ধতি যেখানে আমরা একটি অজানা জিনোটাইপের হোমোজাইগাস প্রভাবী ব্যক্তিকে একটি অন্য একটি জিনোটাইপের রিসেসিভ ব্যক্তির সাথে ক্রস করি। এই ক্রসের ফলে যে অপত্য উৎপन्न হয়, তাদের জিনোটাইপ বোঝার জন্যই টেস্টক্রস করা হয়। অন্যদিকে, বেকক্রস এমন একটি ক্রসিং পদ্ধতি যেখানে একটি F1 হেটেরোজাইগাস ব্যক্তিকে এর মাতা বা পিতার যেকোনো একজনের সাথে ক্রস করা হয়। এই ক্রসিং পদ্ধতির মূল উদ্দেশ্য হলো F1 প্রজন্মের জিনোটাইপ পরীক্ষা করা। সুতরাং, টেস্টক্রস এবং বেকক্রসের মূল লক্ষ্য ভিন্ন হওয়ার কারণে সব বেকক্রসকে টেস্টক্রস বলা যায় না।
সকল বেকক্রস কেন টেস্টক্রস নয়?
সকল বেকক্রস কেন টেস্টক্রস নয়? উত্তরটি জানতে আমাদের বেকক্রস এবং টেস্টক্রসের মধ্যে পার্থক্য বুঝতে হবে।
বেকক্রস হলো একটি জেনেটিক পরীক্ষা যা নির্দিষ্ট জিন বা অ্যালেলের উপস্থিতি বা অনুপস্থিতি নির্ধারণ করে। এটি প্রায়শই রোগের বহনকারীদের শনাক্ত করতে ব্যবহৃত হয়, যারা রোগটি প্রকাশ না করেও তার বংশধরদের কাছে তা প্রেরণ করতে পারে।
টেস্টক্রস, অন্যদিকে, একটি জিনোটাইপ নির্ধারণ করার একটি জেনেটিক পরীক্ষা। এটি একটি হেটেরোজাইগাস ব্যক্তিকে (যার দুটি ভিন্ন অ্যালেল রয়েছে) একটি হোমোজাইগাস প্রত্যাধিকারী ব্যক্তির (যার একটি জিনের দুটি একই অ্যালেল রয়েছে) সাথে ক্রস করে সম্পন্ন করা হয়। যদি সন্তানদের মধ্যে প্রত্যাধিকারী ফেনোটাইপ দেখা যায়, তাহলে মূল ব্যক্তি হোমোজাইগাস প্রত্যাধিকারী; যদি রিসেসিভ ফেনোটাইপ দেখা যায়, তাহলে মূল ব্যক্তি হেটেরোজাইগাস।
এই সংজ্ঞা থেকে, আমরা দেখতে পাচ্ছি যে সকল টেস্টক্রসই বেকক্রস, কারণ এগুলি নির্দিষ্ট অ্যালেলের উপস্থিতি বা অনুপস্থিতি নির্ধারণ করে। তবে সকল বেকক্রস টেস্টক্রস নয়, কারণ বেকক্রসগুলি রোগের বহনকারীদের শনাক্ত করার জন্যও ব্যবহৃত হয়, যখন টেস্টক্রসগুলি জিনোটাইপ নির্ধারণের জন্য ব্যবহৃত হয়।
উদাহরণের মাধ্যমে ব্যাখ্যা
যে সকল টেস্টক্রস বেকক্রসের মধ্যে পড়ে সেগুলোকে বেকক্রস বলে। কিন্তু সকল বেকক্রস টেস্টক্রস নয়। কেননা, বেকক্রস হওয়ার জন্যে কিছু নির্দিষ্ট শর্ত পূরণ করতে হয়। সেই শর্তগুলো হলো:
-
টেস্টার হোমোজাইগাস রিসেসিভ (tt) হতে হবে।
-
টেস্টারের সঙ্গে হেটেরোজাইগাস (Tt) অনুজীব ক্রস করতে হবে।
-
উদ্দীষ্ট বৈশিষ্ট্যটি যদি প্রকাশ পায়, তাহলে তা বেকক্রস হবে।
অন্যদিকে, টেস্টক্রস হলো এমন একটি ক্রসিং, যেখানে কোনো একটি অনুজীবের জিনোটাইপ নির্ধারণ করার জন্য তা হোমোজাইগাস রিসেসিভ টেস্টারের সঙ্গে ক্রস করা হয়।
তাই এটা স্পষ্ট যে বেকক্রস হলো টেস্টক্রসেরই একটি বিশেষ ধরনের ক্রস। কিন্তু সকল বেকক্রস টেস্টক্রস নয়।
Leave a Reply