রেডিও আবিষ্কারের গল্প: জগদীশচন্দ্র বসু নাকি গুগ্লিয়েলমো মার্কনি?

রেডিও আবিষ্কারের গল্প: জগদীশচন্দ্র বসু নাকি গুগ্লিয়েলমো মার্কনি?

আমার এই ব্লগ পোস্টটি রেডিও আবিষ্কারের একটা আলোকপাত করবে, একটি ঘটনা যা যোগাযোগের জগতে বিপ্লব ঘটিয়েছে। আমরা জগদীশ চন্দ্র বসু এবং গুগলিয়েলমো মার্কোনি, দুই পথিকৃৎ ব্যক্তিত্বের অবদান অনুসন্ধান করব, যাদের গবেষণা এবং উদ্ভাবন এই অত্যাধুনিক প্রযুক্তির বিকাশে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করেছে।

বসু, একজন ভারতীয় বিজ্ঞানী, তড়িৎচুম্বকীয় তরঙ্গের বেতার সংক্রমণে অগ্রগামী হন। মার্কোনি, একজন ইতালী আবিষ্কারক, ওয়্যারলেস টেলিগ্রাফির বিকাশে তাঁর কাজের জন্য পরিচিত। একসাথে, তাদের গবেষণা এবং পরীক্ষা-নিরীক্ষাগুলি রেডিওর আবিষ্কারের দিকে পরিচালিত করে, যা আমাদের যোগাযোগ, তথ্য প্রেরণ এবং বিনোদনের উপায়ে আমূল পরিবর্তন ঘটিয়েছে।

এই ব্লগ পোস্টটিতে, আমরা বসুর কোহেরার আবিষ্কার এবং এর রেডিও তরঙ্গ শনাক্তকরণে ব্যবহার, মার্কনির ওয়্যারলেস টেলিগ্রাফির উন্নয়ন এবং প্রথম ট্রান্সআটলান্টিক সিগন্যালের প্রেরণ, এবং তাদের অবদানের মধ্যে ক্রমবর্ধমান প্রতিযোগিতা সহ রেডিওর আবিষ্কারে তাদের নির্দিষ্ট ভূমিকাগুলি অন্বেষণ করব। এছাড়াও, আমরা আধুনিক যোগাযোগ ব্যবস্থার ভিত্তি প্রস্তুত করতে তাদের অগ্রগামী কাজের প্রভাব এবং ঐতিহাসিক স্বীকৃতি সম্পর্কে আলোচনা করব।

রেডিও আবিষ্কারের গল্প

রেডিও আবিষ্কারের মূলে দুজন পথিকৃৎ ব্যক্তিত্ব, জগদীশ চন্দ্র বসু এবং গুগলিয়েলমো মার্কোনি। এই ব্লগ পোস্টটি তাদের অবদান এবং রেডিও আবিষ্কারের ক্ষেত্রে তাদের ভূমিকা তুলে ধরবে।

জগদীশ চন্দ্র বসু এবং গুগলিয়েলমো মার্কোনি উভয়ই রেডিওর আবিষ্কারে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করেছিলেন। বসু ১৮৯৫ সালে তার “দূরত্বের অল্পসময়ে বিদ্যুতের ক্রিয়া” শিরোনামের একটি গবেষণাপত্রে রেডিও তরঙ্গের অস্তিত্ব প্রমাণ করেছিলেন। অন্যদিকে, মার্কোনি ১৮৯৬ সালে প্রথম বেতার যোগাযোগ স্থাপন করেছিলেন।

বসুর গবেষণা রেডিও তরঙ্গের প্রকৃতি বোঝার ভিত্তি স্থাপন করেছিল। তিনি দেখিয়েছিলেন যে রেডিও তরঙ্গ আলোর তরঙ্গের মতোই তড়িৎচুম্বকীয় তরঙ্গ, তবে তাদের তরঙ্গদৈর্ঘ্য অনেক বেশি। তিনি এটিও দেখিয়েছিলেন যে এই তরঙ্গগুলি বস্তুর মধ্য দিয়ে প্রেরণ করা যেতে পারে এবং এগুলি ধাতব পৃষ্ঠ দ্বারা প্রতিফলিত হয়।

মার্কোনির অবদান ছিল আরও ব্যবহারিক। তিনি বের করলেন কিভাবে রেডিও তরঙ্গকে সংক্রমণ এবং গ্রহণ করা যায়। তিনি একটি স্পার্ক-গ্যাপ ট্রান্সমিটার এবং একটি কোহেরার রিসিভার উদ্ভাবন করেছিলেন, যা বেতার যোগাযোগের জন্য ব্যবহৃত প্রথম ব্যবহারিক ডিভাইস ছিল। তিনি ১৮৯৬ সালে ইংল্যান্ডের ব্রিস্টল চ্যানেলে আট কিমি দূরে দুইটি জাহাজের মধ্যে প্রথম সফল বেতার সংকেত প্রেরণ করেছিলেন।

সুতরাং, উভয় বসু এবং মার্কোনিই রেডিওর আবিষ্কারে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করেছিলেন। বসুর গবেষণা রেডিও তরঙ্গের প্রকৃতি বুঝতে সাহায্য করেছিল, যখন মার্কোনির অবদানগুলি বেতার যোগাযোগকে একটি বাস্তব সম্ভাবনা তৈরি করেছিল।

রেডিও এর আবিষ্কার কে – জগদীশ চন্দ্র বসু নাকি মার্কনি?

যাইহোক, এটি লক্ষ করা গুরুত্বপূর্ণ যে তিনি রেডিওর আবিষ্কারক ছিলেন না। রেডিও আবিষ্কারের জন্য সাধারণত ইতালীয় উদ্ভাবক গুগলিয়েলমো মার্কনিকে দায়ী করা হয়, যিনি 1894 সালে প্রথম ব্যবহারিক রেডিও সিস্টেম তৈরি করেছিলেন।

বসু রেডিও এবং মাইক্রোওয়েভ অপটিক্সের ক্ষেত্রে গুরুত্বপূর্ণ অবদান রাখেন। তিনি 1895 সালে একটি সংবেদনশীল রেডিও রিসিভার আবিষ্কার করেছিলেন, যা মার্কোনির আবিষ্কারের আগে ছিল। তিনি মাইক্রোওয়েভ অপটিক্সের ক্ষেত্রে গুরুত্বপূর্ণ গবেষণাও পরিচালনা করেছিলেন এবং 1902 সালে তিনি একটি পদ্ধতি আবিষ্কার করেছিলেন যার মাধ্যমে একটি বস্তুর দূরত্ব পরিমাপ করতে মাইক্রোওয়েভ ব্যবহার করা যেতে পারে। এই আবিষ্কার রাডার প্রযুক্তির বিকাশের পথ তৈরি করে।

See also  ইলেকট্রন: আধুনিক পদার্থবিজ্ঞানের ভিত্তি

বসু রেডিওর উদ্ভাবক না হলেও তিনি এই ক্ষেত্রে গুরুত্বপূর্ণ অবদান রেখেছিলেন। তার কাজ রেডিও এবং মাইক্রোওয়েভ অপটিক্সের ক্ষেত্রে আমাদের বোঝার অগ্রগতিতে সহায়ক হয়েছে এবং তার উত্তরাধিকার আজও বৈজ্ঞানিক সম্প্রদায়ে অব্যাহত রয়েছে।

কোহেরারের আবিষ্কার এবং তার রেডিও তরঙ্গ শনাক্তকরণে ব্যবহার

রেডিও আবিষ্কারের ক্ষেত্রে জগদীশ চন্দ্র বসু এবং গুগলিয়েলমো মার্কনির অবদান নিয়ে বহুদিন ধরেই বিতর্ক চলছে। কে প্রথম রেডিও আবিষ্কার করেছিলেন, তা নিয়ে দুটি দেশই দাবিদার।

ভারত দাবি করে যে প্রফেসর জগদীশ চন্দ্র বসুই প্রথম রেডিও আবিষ্কার করেছিলেন। তিনি ১৮৯৫ সালে একটি যন্ত্র তৈরি করেছিলেন যা মাইক্রোওয়েভ ব্যবহার করে সিগন্যাল প্রেরণ করতে এবং গ্রহণ করতে সক্ষম ছিল। তিনি এই যন্ত্রটিকে “রেডিওকন্ডাক্টর” নাম দিয়েছিলেন। তবে বসু কখনই তার আবিষ্কারের জন্য পেটেন্ট দায়ের করেননি।

অন্যদিকে, ইতালি দাবি করে যে গুগলিয়েলমো মার্কনিই রেডিওর প্রকৃত আবিষ্কারক। ১৮৯৬ সালে মার্কনি রেডিও তরঙ্গের পেটেন্ট দায়ের করেছিলেন এবং ১৮৯৭ সালে তিনি ইংল্যান্ডের ব্রিস্টল চ্যানেলে প্রথম সফল বেতার সংযোগ স্থাপন করেছিলেন।

আজ, আধুনিক রেডিও প্রযুক্তি মার্কনির আবিষ্কারের উপর ভিত্তি করে গড়ে উঠেছে। তবে বসুর অবদানও অস্বীকার করা যায় না। তাঁর “রেডিওকন্ডাক্টর” রেডিও প্রযুক্তির প্রাথমিক পর্যায়ের একটি গুরুত্বপূর্ণ অগ্রগতি ছিল। তাই বলা যায়, রেডিও আবিষ্কারের ক্ষেত্রে জগদীশ চন্দ্র বসু এবং গুগলিয়েমো মার্কনি উভয়েরই গুরুত্বপূর্ণ অবদান রয়েছে।

মার্কনির অবদান

রেডিওর আবিষ্কারের কৃতিত্ব নিয়ে দ্বন্দ্ব অনেক দিনের। অনেকের দাবি, প্রথম রেডিও তৈরি করেছিলেন ভারতের বিজ্ঞানী জগদীশ চন্দ্র বসু। অন্যদিকে, অনেকেই বলেন, রেডিও আবিষ্কারের প্রকৃত কৃতিত্ব গুলিয়েলমো মার্কনির। তবে এ নিয়ে দ্বন্দ্বের সুরাহা হয়েছে অনেক আগেই। তবে, রেডিও আবিষ্কারে অস্বীকার করা যায় না।

মার্কনি প্রথম ব্যক্তি যিনি সফলভাবে দূরত্বের উপর তারবিহীন যোগাযোগ ব্যবস্থা স্থাপন করেছিলেন। তিনি ১৮৯৫ সালে প্রথমবারের মতো বেতার তরঙ্গ ব্যবহার করে মর্স কোডের সাহায্যে বার্তা প্রেরণ করতে সক্ষম হয়েছিলেন। এরপর তিনি ১৮৯৯ সালে ইংল্যান্ড থেকে ফ্রান্সে বেতার তরঙ্গের মাধ্যমে প্রথম বার্তা প্রেরণ করেন। এইসব অর্জনের স্বীকৃতি হিসেবে ১৯০৯ সালে পদার্থবিজ্ঞানে নোবেল পুরস্কার লাভ করেন মার্কনি।

ওয়্যারলেস টেলিগ্রাফির উন্নয়ন এবং প্রথম ট্রান্সআটলান্টিক সিগন্যালের প্রেরণ

রেডিওর আবিষ্কারকের খেতাব পেয়েছিলেন গুগ্লিয়েলমো মার্কোনি। তবে এই আবিষ্কারে ভারতেরও গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা ছিল। ১৮৯৫ সালে ভারতের বিজ্ঞানী জগদীশচন্দ্র বসু তড়িৎচুম্বকীয় তরঙ্গ ব্যবহার করে বেতার সংকেত প্রেরণে সফল হয়েছিলেন। তিনি একটি বেতার গ্রহণকারীরও উদ্ভাবন করেন। তবে বসুর এই আবিষ্কার ব্যাপক প্রচার পায়নি। কারণ তিনি সেই সময় তাঁর গবেষণা নিয়ে একটি বৈজ্ঞানিক পত্রিকায় প্রবন্ধ প্রকাশ করেননি। যার ফলে তিনি এই আবিষ্কারের স্বীকৃতি পাননি।

এরপর ১৮৯৬ সালে ইতালীয় উদ্ভাবক গুগ্লিয়েলমো মার্কোনি রেডিওর পেটেন্ট পান। তিনিও বেতার সংকেত প্রেরণ ও গ্রহণে সফল হন। তিনি তার আবিষ্কার নিয়ে একটি বৈজ্ঞানিক পত্রিকায় প্রবন্ধ প্রকাশ করেন। তাই তিনিই রেডিওর আবিষ্কারক হিসাবে স্বীকৃত হন। তবে জগদীশচন্দ্র বসুর অবদানও খুবই গুরুত্বপূর্ণ। তিনি বেতার প্রযুক্তির বিকাশে অনেক অবদান রেখেছেন।

See also  সেলসিয়াস থার্মোমিটার কে আবিষ্কার করেছিলেন?

বসু বনাম মার্কনি: কে রেডিও আবিষ্কার করেছিলেন?

রেডিও আবিষ্কারের দাবিদার দু’জন বিজ্ঞানী হলেন জগদীশচন্দ্র বসু এবং গুগল্যিমো মার্কনি। দু’জনেই দাবী করেছিলেন যে তারাই প্রথম রেডিও তরঙ্গ আবিষ্কার করেছেন এবং প্রেরণ করেছেন।

জগদীশচন্দ্র বসু ছিলেন একজন ভারতীয় বিজ্ঞানী যিনি ১৮৯৫ সালের ৩০ নভেম্বর কলকাতার টাউন হলে একটি যন্ত্র দিয়ে রেডিও তরঙ্গ আবিষ্কার করেছিলেন। তিনি যন্ত্রটির নাম দিয়েছিলেন “কোহেরার”। এই যন্ত্রটির সাহায্যে তিনি প্রায় দুই কিলোমিটার দূরে একটি ঘণ্টা বাজিয়েছিলেন।

গুগল্যিমো মার্কনি ছিলেন একজন ইতালীয় উদ্ভাবক যিনি ১৮৯৬ সালের ২ জুন রেডিও তরঙ্গ আবিষ্কারের দাবি করেছিলেন। তিনি স্পার্ক গ্যাপ ট্রান্সমিটার এবং কোহেরার রিসিভার ব্যবহার করেছিলেন। মার্কনি ১৮৯৭ সালে যুক্তরাজ্যে প্রথম বাণিজ্যিক রেডিও স্টেশন প্রতিষ্ঠা করেছিলেন।

আজকের দিনে, বেশিরভাগ বিশেষজ্ঞ একমত যে মার্কনি রেডিওর প্রযুক্তিগত দিকগুলির বিকাশে বেশি অবদান রেখেছিলেন, যা আধুনিক রেডিওর ভিত্তি স্থাপন করেছিল। অন্যদিকে, বসু রেডিও তরঙ্গের মৌলিক বৈশিষ্ট্যগুলির অগ্রণী গবেষণার জন্য পরিচিত। তিনি রেডিও তরঙ্গের প্রতিফলন এবং প্রতিসরণের উপর গবেষণা করেছিলেন এবং প্রথমবারের মতো দেখিয়েছিলেন যে এগুলি বিদ্যুত চৌম্বকীয় তরঙ্গ।

রেডিওর আবিষ্কারে সহযোগিতামূলক প্রচেষ্টা

যখন রেডিও আবিষ্কারের কথা আসে, তখন দুটি নাম অবিলম্বে মনে আসে: জগদীশ চন্দ্র বসু এবং গুগlielmo মার্কনি। তবে রেডিওর আবিষ্কারকে একজন ব্যক্তির কৃতিত্ব হিসেবে দাবি করা খুবই সরলীকরণ হবে। রেডিও আবিষ্কারের পথটি আসলে ছিল অনেকগুলো ছোট ছোট পদক্ষেপের সমষ্টি, যা বিভিন্ন বিজ্ঞানী এবং আবিষ্কারকরা নিয়েছিলেন।

বসু এবং মার্কোনির আগে, অনেক বিজ্ঞানী ইলেক্ট্রোম্যাগনেটিক তরঙ্গের সাথে পরীক্ষা-নিরীক্ষা করেছিলেন। ১৮২০ সালে, ড্যানিশ পদার্থবিজ্ঞানী হানস ক্রিশ্চিয়ান এরস্টেড আবিষ্কার করেছিলেন যে একটি বৈদ্যুতিক প্রবাহ একটি চৌম্বক ক্ষেত্র তৈরি করে। এই আবিষ্কারটি ইলেকট্রোম্যাগনেটিক তরঙ্গগুলি সম্পর্কে আমাদের বোঝার ভিত্তি স্থাপন করেছিল। ১৮৩১ সালে, মাইকেল ফ্যারাডে আবিষ্কার করেছিলেন যে একটি পরিবর্তনশীল চৌম্বক ক্ষেত্র একটি তড়িৎ প্রবাহ তৈরি করতে পারে। এই আবিষ্কার ইলেকট্রোম্যাগনেটিক ইনডাকশন নামে পরিচিত এবং এটি ট্রান্সফরমার এবং জেনারেটরের ভিত্তি তৈরি করেছিল।

এই প্রাথমিক আবিষ্কারগুলির ভিত্তিতে, বসু এবং মার্কোনি উভয়ই স্বাধীনভাবে রেডিও তরঙ্গের ব্যবহারিক ব্যবহার বিকাশ করেছিলেন। ১৮৯৫ সালে, বসু সর্বপ্রথম একটি ডিভাইস তৈরি করেছিলেন যা রেডিও তরঙ্গগুলি প্রেরণ এবং গ্রহণ করতে পারে। তিনি রেডিও তরঙ্গগুলির বিভিন্ন বৈশিষ্ট্যগুলিও নির্ধারণ করেছিলেন, যেমন তাদের প্রচারের গতি এবং দিক। ১৮৯৬ সালে, মার্কোনি প্রথম ব্যক্তি যিনি রেডিও তরঙ্গ ব্যবহার করে দূরবর্তী দুটি বিন্দুর মধ্যে একটি বার্তা প্রেরণ করতে সক্ষম হন। এই কৃতিত্ব তাকে রেডিওর আবিষ্কারকের খ্যাতি এনে দেয়।

তবে, এটা মনে রাখা গুরুত্বপূর্ণ যে রেডিওর আবিষ্কার একজন ব্যক্তির কৃতিত্ব নয়। এটি ছিল অনেক বিজ্ঞানী এবং আবিষ্কারকদের একটি সহযোগিতামূলক প্রচেষ্টার ফল, যারা ইলেকট্রোম্যাগনেটিক তরঙ্গগুলি সম্পর্কে আমাদের বোঝার ভিত্তি স্থাপন করেছিলেন। বসু এবং মার্কোনি উভয়ই এই প্রচেষ্টায় গুরুত্বপূর্ণ অবদান রেখেছেন, তবে তারা রেডিওর একমাত্র আবিষ্কারক নন।

See also  পোলিও টিকা আবিষ্কারের গল্প: অচল পঙ্গুত্বের ভয়াবহতা থেকে মুক্তির পথ

উপসংহার

যখন রেডিও আবিষ্কারের কথা আসে, তখন দুটি নাম অবিলম্বে মনে আসে: জগদীশ চন্দ্র বসু এবং গুগlielmo মার্কনি। তবে রেডিওর আবিষ্কারকে একজন ব্যক্তির কৃতিত্ব হিসেবে দাবি করা খুবই সরলীকরণ হবে। রেডিও আবিষ্কারের পথটি আসলে ছিল অনেকগুলো ছোট ছোট পদক্ষেপের সমষ্টি, যা বিভিন্ন বিজ্ঞানী এবং আবিষ্কারকরা নিয়েছিলেন।

বসু এবং মার্কোনির আগে, অনেক বিজ্ঞানী ইলেক্ট্রোম্যাগনেটিক তরঙ্গের সাথে পরীক্ষা-নিরীক্ষা করেছিলেন। ১৮২০ সালে, ড্যানিশ পদার্থবিজ্ঞানী হানস ক্রিশ্চিয়ান এরস্টেড আবিষ্কার করেছিলেন যে একটি বৈদ্যুতিক প্রবাহ একটি চৌম্বক ক্ষেত্র তৈরি করে। এই আবিষ্কারটি ইলেকট্রোম্যাগনেটিক তরঙ্গগুলি সম্পর্কে আমাদের বোঝার ভিত্তি স্থাপন করেছিল। ১৮৩১ সালে, মাইকেল ফ্যারাডে আবিষ্কার করেছিলেন যে একটি পরিবর্তনশীল চৌম্বক ক্ষেত্র একটি তড়িৎ প্রবাহ তৈরি করতে পারে। এই আবিষ্কার ইলেকট্রোম্যাগনেটিক ইনডাকশন নামে পরিচিত এবং এটি ট্রান্সফরমার এবং জেনারেটরের ভিত্তি তৈরি করেছিল।

এই প্রাথমিক আবিষ্কারগুলির ভিত্তিতে, বসু এবং মার্কোনি উভয়ই স্বাধীনভাবে রেডিও তরঙ্গের ব্যবহারিক ব্যবহার বিকাশ করেছিলেন। ১৮৯৫ সালে, বসু সর্বপ্রথম একটি ডিভাইস তৈরি করেছিলেন যা রেডিও তরঙ্গগুলি প্রেরণ এবং গ্রহণ করতে পারে। তিনি রেডিও তরঙ্গগুলির বিভিন্ন বৈশিষ্ট্যগুলিও নির্ধারণ করেছিলেন, যেমন তাদের প্রচারের গতি এবং দিক। ১৮৯৬ সালে, মার্কোনি প্রথম ব্যক্তি যিনি রেডিও তরঙ্গ ব্যবহার করে দূরবর্তী দুটি বিন্দুর মধ্যে একটি বার্তা প্রেরণ করতে সক্ষম হন। এই কৃতিত্ব তাকে রেডিওর আবিষ্কারকের খ্যাতি এনে দেয়।

তবে, এটা মনে রাখা গুরুত্বপূর্ণ যে রেডিওর আবিষ্কার একজন ব্যক্তির কৃতিত্ব নয়। এটি ছিল অনেক বিজ্ঞানী এবং আবিষ্কারকদের একটি সহযোগিতামূলক প্রচেষ্টার ফল, যারা ইলেকট্রোম্যাগনেটিক তরঙ্গগুলি সম্পর্কে আমাদের বোঝার ভিত্তি স্থাপন করেছিলেন। বসু এবং মার্কোনি উভয়ই এই প্রচেষ্টায় গুরুত্বপূর্ণ অবদান রেখেছেন, তবে তারা রেডিওর একমাত্র আবিষ্কারক নন।

রেডিওর আবিষ্কারে বসু এবং মার্কনির ঐতিহাসিক অবদানের স্বীকৃতি

রেডিওর আবিষ্কারের ক্ষেত্রে জগদীশ চন্দ্র বসু এবং গুলিয়েলমো মার্কনির অবদান অপরিসীম। বসু প্রথম ওয়্যারলেস সংকেত প্রেরণ এবং গ্রহণের একটি যন্ত্র তৈরি করেন, যা রেডিওর প্রাথমিক রূপ হিসেবে বিবেচিত হয়। তবে, মার্কনিই প্রথম ব্যক্তিগত তথ্যের ওয়্যারলেস ট্রান্সমিশন সফলভাবে সম্পাদন করেন, যা রেডিওর আনুষ্ঠানিক সূচনা হিসেবে চিহ্নিত। এই আবিষ্কারগুলি যোগাযোগের ক্ষেত্রে বিপ্লব ঘটিয়েছে এবং আজকের সমাজে তা অপরিহার্য হয়ে উঠেছে।

তাদের অগ্রগামী কাজের প্রভাব এবং আধুনিক যোগাযোগ ব্যবস্থার ভিত্তি প্রস্তুত করা

জগদীশ চন্দ্র বসু একজন ভারতীয় উদ্ভাবক এবং বিজ্ঞানী ছিলেন, যিনি ১৮৯৫ সালে একটি ডিভাইস তৈরি করেছিলেন যা বেতার তরঙ্গ সম্প্রচার করতে সক্ষম ছিল। তিনি এই ডিভাইসটিকে “বজ্রশিখা” নাম দিয়েছিলেন এবং দাবি করেছিলেন যে এটি রেডিওর প্রথম উদাহরণ। তবে, বসুর আবিষ্কারটি ব্যাপকভাবে স্বীকৃত হয়নি, কারণ তিনি এটির জন্য পেটেন্ট নিবন্ধন করেননি।

অন্যদিকে, গুগলিয়েলমো মার্কনি একজন ইতালীয় উদ্ভাবক এবং উদ্যোক্তা ছিলেন, যিনি ১৮৯৬ সালে একটি রেডিও ট্রান্সমিটার এবং রিসিভার তৈরি করেছিলেন। তিনি তার আবিষ্কারটির জন্য পেটেন্ট নিবন্ধন করেন এবং এটিকে “রেডিও” নাম দেন। মার্কনির আবিষ্কারটি ব্যাপকভাবে স্বীকৃত হয় এবং তাকে “রেডিওর পিতা” হিসাবে বিবেচনা করা হয়।

Ucchal Avatar

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *