সবাই চায় মনে রাখার ক্ষমতা ভালো হোক। কোন কিছু যদি ভালো করে মনে থাকে তাহলে তা খুব ভালো। আর তার জন্য কি কি করতে হবে তা আমরা সকলেই খুঁজে বেড়াই। আমার কাছেও তেমনি একটি কৌশল আছে। আমি কিভাবে রঙ মনে রাখি তা নিয়ে এই লেখা। আমি আমার পদ্ধতিটি ভাগ করে নিব এবং রঙ মনে রাখার অন্যান্য পদ্ধতিগুলিও আলোচনা করব। তাই যদি তুমিও রঙ মনে রাখার ভালো পদ্ধতি খুঁজছ তাহলে এই লেখাটি তোমার জন্য। আমি আশা করি এই লেখাটি তোমাকে রঙ মনে রাখতে সাহায্য করবে।
রঙের বর্ণানুক্রমিক পদ্ধতি
আমরা সবাই স্কুলের টা জানি। আমরা এটা শিখেছিলাম বেনীআসহকলা নামে। তবে কখনো ভেবে দেখেছ এটা কে বের করেছিলেন বা কেন?
বেনীআসহকলা পদ্ধতি আবিষ্কৃত হয়েছিল স্যার আইজ্যাক নিউটন কর্তৃক ১৭ শতকে। নিউটন যখন সূর্যের আলোর অভ্যন্তরে উপস্থিত রঙগুলির পরীক্ষা করছিলেন, তখন তিনি দেখেছিলেন যে যখন সূর্যের আলো একটি প্রিজম দিয়ে প্রতিস্যক্ষিত হয়, তখন এটি সাতটি রঙে বিভক্ত হয়ে যায়। তিনি এই রংগুলির বর্ণানুক্রমে নাম দিয়েছিলেন: সবুজ, হলুদ, কমলা, লাল, নীল, আসমানি এবং বেগুনি।
নিউটন এই পদ্ধতিটিকে বেনীআসহকলা নাম দিয়েছিলেন কারণ এটি একটি বর্ণানুক্রমিক সংক্ষিপ্ত রূপ হিসেবে তৈরি করা হয়েছিল এবং ল্যাটিন শব্দ “ভায়োলেটাস” (বেগুনি) শব্দটির প্রথম অক্ষরগুলি থেকে এসেছে। এই পদ্ধতিটি রং মনে রাখার এবং চিহ্নিত করার একটি সহজ উপায় হিসাবে সারা বিশ্বে ব্যবহৃত হয়ে আসছে।
বর্ণানুক্রমিক পদ্ধতির কার্যকারিতা
আমরা অনেকেই বেগুনি, আসমানি, লাল, সবুজ ইত্যাদি রঙের নাম মনে রাখতে হিমশিম খাই। তবে বর্ণানুক্রমিক পদ্ধতি ব্যবহার করে রঙের নাম মনে রাখা খুবই সহজ। এই পদ্ধতিতে তুমি রঙের নামগুলোকে বর্ণানুক্রমিক ক্রমে সাজিয়ে মনে রাখবে। যেমন- আকাশি, বেগুনি, লাল, সবুজ। এইভাবে রঙের নামগুলো মনে রাখলে পরে সেগুলো ভুলে যাওয়ার সম্ভাবনা কম থাকে। সুতরাং, রঙের নাম মনে রাখার জন্য বর্ণানুক্রমিক পদ্ধতি একটি কার্যকর উপায়।
রঙ মনে রাখার অন্যান্য পদ্ধতি
রঙ মনে রাখার আরেকটি পদ্ধতি হল প্রতিমূর্তি তৈরি করা। এই পদ্ধতিটি আপনাকে রঙগুলিকে বিশেষ বিষয় বা বস্তুর সাথে যুক্ত করার জন্য বলে। উদাহরণস্বরূপ, আপনি লাল রংকে আগুনের শিখা বা পাকা স্ট্রবেরির সাথে এবং সবুজ রংকে ঘাসের মাঠ বা পাতার সাথে যুক্ত করতে পারেন। এইভাবে, যখন আপনি লাল রংটি দেখতে পাবেন, তখন আপনি স্বয়ংক্রিয়ভাবে আগুনের শিখা বা পাকা স্ট্রবেরির কথা ভাববেন, যা আপনাকে রংটি মনে রাখতে সহায়তা করবে।
বেনীআসহকলা রঙের বর্ণানুক্রমিক পদ্ধতি ব্যবহারের সুবিধা
বর্ণানুক্রমিক পদ্ধতি হল একটি মেমোরাইজেশন টেকনিক যেখানে আমরা বেনিআসহকলা রঙের নাম মনে রাখার জন্য রঙের প্রথম অক্ষরগুলির একটি শব্দ বা বাক্য তৈরি করি। এই পদ্ধতিটি একটি উপযুক্ত পদ্ধতি কারণ এটি আমাদের সাতটি রঙের নাম একসাথে স্মরণ করতে সাহায্য করে, যা অন্যথায় কঠিন হতে পারে। এই পদ্ধতিটি বিশেষ করে শিশুদের জন্য উপকারী যারা এখনও রঙের নাম শিখছে।
যে শব্দ বা বাক্যটি আপনি তৈরি করবেন তা হল: “বেগুনি, ইন্ডিগো, আকাশী, সবুজ, হলুদ, কমলা, লাল”। এই বাক্যটির প্রথম অক্ষরগুলি বর্ণানুক্রমিকভাবে বেনিআসহকলা রঙের প্রথম অক্ষরগুলির সাথে মেলে। এই বাক্যটি মনে রাখলে, আপনি সহজেই বেনিআসহকলা রঙের নামগুলি মনে রাখতে পারবেন।
বেনীআসহকলা রঙের বর্ণানুক্রমিক পদ্ধতি ব্যবহারের অসুবিধা
বেনীআসহকলা রঙের বর্ণানুক্রমিক পদ্ধতিকে বিভিন্ন নামে ডাকা হয়, যেমন রয়্যাল সোসাইটি অফ কেমিস্ট্রি কালার সিস্টেম বা আরএসসি কালার সিস্টেম। এই পদ্ধতিতে রঙগুলোকে ইংরেজি বর্ণানুক্রমের সাহায্যে নির্ধারিত করা হয়। প্রথমে একটি রঙের নাম স্থান অক্ষর দ্বারা নির্ধারিত হয়, তারপর একটি সংখ্যা দ্বারা। এতে রঙের সঠিক বৈশিষ্ট্য, যেমন হালকা, গাঢ় বা উজ্জ্বলতা প্রদর্শিত হয়। এই পদ্ধতির সুবিধা হল এটি একটি সুশৃঙ্খল এবং ব্যাপকভাবে গৃহীত পদ্ধতি যা রঙের যোগাযোগকে সহজ করে তোলে। যাইহোক, রঙের নাম মনে রাখা কঠিন হতে পারে, বিশেষ করে যদি আপনি অভ্যস্ত না হন। এটি আর্ট, ডিজাইন বা অন্যান্য ক্ষেত্রে কাজ করার সময় অসুবিধা হতে পারে যেখানে রঙের সঠিকতা গুরুত্বপূর্ণ।
রঙ মনে রাখার পদ্ধতিগুলির তুলনা
রঙ মনে রাখার অনেক পদ্ধতি আছে। বেনীজাসকলা রঙের নাম মনে রাখার যে পদ্ধতিটা আছে, তাকে বলা হয় মনিমনিক ছড়া। এটা হচ্ছে একটি স্মৃতির ফর্মুলা, যার সাহায্যে রংগুলোর নাম মনে রাখা যায়। একে সংক্ষেপে মনিমনিক ডিভাইস বা মনিমনিক টেকনিকও বলা হয়। মনে করার প্রক্রিয়ায় এটি একটি ব্যাপকভাবে ব্যবহৃত স্মৃতি কৌশল, যেখানে প্রতিটি শব্দের প্রথম অক্ষর থেকে চিঠি বা শব্দটিকে মনে রাখা হয়। “বেনীজাসকলা” ছড়াটি মনে রাখার মাধ্যমে, তুমি এই রঙগুলোর নাম সহজেই মনে রাখতে পারবে: বেগুনি, অরেঞ্জ, জলপাই, সবুজ, আকাশী, কমলা, লাল অ্যান্ড হলুদ। এই ছড়াটির প্রতিটি শব্দের প্রথম অক্ষর যথাক্রমে বেগুনি, অরেঞ্জ, জলপাই, সবুজ, আকাশী, কমলা, লাল এবং হলুদের প্রতিনিধিত্ব করে।
Leave a Reply