বৈশাখে জল নেই আমাদের ছোট নদীতে, ক্রমশ মরে যাচ্ছে নদীটি

বৈশাখে জল নেই আমাদের ছোট নদীতে, ক্রমশ মরে যাচ্ছে নদীটি

আমি একজন বাঙালি। আমি আমার জীবন কাটিয়েছি বাংলাদেশের নদীপাড়ে। নদী আমাদের জন্য খুবই গুরুত্বপূর্ণ। এটি আমাদের জীবনধারার একটি অংশ। আমরা আমাদের নদীকে ভালোবাসি এবং এটিকে রক্ষা করার জন্য আমরা সবকিছু করব।

এই ব্লগ পোস্টে, আমি আমাদের নদীর ইতিহাস, বর্তমান অবস্থা এবং ভবিষ্যত সম্পর্কে লিখব। আমি নদীর রক্ষণাবেক্ষণের প্রয়োজনীয়তাও আলোচনা করব।

আশা করি আপনারা এই ব্লগ পোস্টটি উপভোগ করবেন এবং এটি থেকে শিখবেন। আমাদের নদী আমাদের জন্য গুরুত্বপূর্ণ। আমরা সকলেই এটিকে রক্ষা করার জন্য কাজ করা উচিত।

আমাদের দেওয়া নদী

আমাদের ছোট নদী চলে বাকে বাকে, বৈশাখ মাসে তার হাটু জল থাকে। অথচ এই নদীটিই গর্জন করে বর্ষা মাসে, ভাসিয়ে নিয়ে যায় শত শত গ্রামকে। এই নদীর দুই পাশে কী অপরূপ দৃশ্য। নারিকেল গাছের সারি, তাল গাছের সারি, আম গাছের সারি, মেহগনি গাছের সারি। নদীর দুই পুলিনে দাঁড়িয়ে থাকতেই মন হয়ে যায় মুগ্ধ। বর্ষায় নদীর পানি যখন যায় বাড়তে, তখন নদীর দৃশ্য কী সুন্দর হয়ে ওঠে। তখন নদীর পানিতে ভেসে বেড়ায় শত শত নৌকা। দূর থেকে দেখতে মনে হয়, যেন জলে হাঁটছে অসংখ্য ঘরবাড়ি।

বৈশাখে হাটুজল

বৈশাখ এলেই ছোট নদীগুলো কি যেন আবেগী হয়ে ওঠে। এ সময় পানি প্রবাহ কমে গিয়ে প্রায় হাটুপানি অবস্থা হয়। এমন অবস্থাকেই বলে ”। এ সময় নদীর দু’পাড়ে থাকা গ্রামের ছেলেমেয়েরা দল বেঁধে নদীতে নামে। কেউ সাঁতার কাটে, কেউ কাদা নেড়ে খেলা করে, আবার কেউ মাছ ধরে। দুপুরে নদী তীরেই খাওয়া-দাওয়া সারা হয়। এরপর কিছুক্ষণ জলের মধ্যে গল্প-গুজব, গান-বাজনা চলে। বিকেলের দিকে আবার খেলাঘুটির পালা। এমনি করে সারাদিন কাটিয়ে সূর্য ডোবার মুখে সবাই নিজ ঘরে ফিরে যায়। বৈশাখের হাটুজল আমাদের স্মৃতিতে শুধুই একটি সুন্দর অভিজ্ঞতা হয়ে থেকে যায়। বৈশাখের এই হাটুজল নানান কবি-সাহিত্যিককে অনুপ্রাণিত করেছে। তারা তাদের রচনায় এই প্রাকৃতিক ঘটনাকে স্থান দিয়েছেন।

See also  পাসপোর্ট বানানোর পরে পুলিশ ভেরিফিকেশন কখন থানায় যাব?

নদীর প্রাচীন ইতিহাস

আমাদের ছোট নদী চলে বাকে বাকে বৈশাখ মাসে তার হাটু জল থাকে। কিন্তু বর্ষার শুরুতেই জলের প্রবাহে হাঁপিয়ে ওঠে নদী। বৃষ্টির ঝিরিধারে মাত্র কয়েক দিনেই নদী বুকের উপর উঠে দু’পাড় জুড়ে ছড়িয়ে পড়ে। এই নদী এক সময় অতীতে কত বড় ছিল তা আজ আমরা বুঝতে পারি খরার সময় নদীর দুই পাড়ে পলি পড়ে যে মাঠের সৃষ্টি হয়েছে তা থেকেই। নদীর দুই পাড়ের গ্রামগুলোর অনেক মাঠ ও বাড়িঘর এই পলিতেই হারিয়ে গেছে। তাতে বোঝা যায় নদী এক সময় কত বড় ছিল। কিন্তু বর্তমানে দিন দিন নদী যেন তার আয়তন হারাচ্ছে। অবৈধ দখলদারিত্ব ও বালি ভাঙন বেড়ে গেছে।

নদীর বর্তমান অবস্থা

আমাদের ছোট নদী চলে বাকে বাকে বৈশাখ মাসে তার হাটু জল থাকে। বর্ষার সময় নদী প্রাণ ফিরে পায়, সমস্ত গা থেকে রেশমী দাগ দিয়ে উঠে। কিন্তু বর্ষার পর তার এ রূপ আর থাকে না। আষাঢ় – শ্রাবণে, এমন কি ভাদ্রের প্রথম ভাগ অবধি যে নদীটি ছিল প্রাণবন্ত, আজ তা আর নেই। অগ্রহায়ণ পর্যন্ত নদীটি তার এই শুষ্ক রূপই ধরে রাখে। চৈত্রের শেষদিকে গ্রীষ্মের দহনে নদী শুকিয়ে যায়। তবে নদী শুকালেও নদীতল থেকে কচুরী পানার মূলের সন্ধান পাওয়া যায়। সুতরাং বলা যায় আমাদের নদীটি এখন মৃতপ্রায় অবস্থায় রয়েছে। নদীটির বর্তমান অবস্থা নিয়ে সরকার ও সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষের অবিলম্বে পদক্ষেপ গ্রহণ করা উচিত।

নদীর ভবিষ্যৎ

আমাদের ছোট নদীটি বাকে বাকে চলে বৈশাখ মাসে তার হাটু জল থাকে। তবে এখন সেই ছোট নদীর চেহারাই বদলেছে। বর্ষা মৌসুমেও নদীতে হাঁটুজল থাকে না। ছোটবেলায় আমরা নদীতে সাঁতার কাটতাম, মাছ ধরতাম আর নদীর তীরে খেলতাম। কিন্তু এখন সেই সব দৃশ্য আর দেখা যায় না। নদীর জল কমে যাওয়ার কারণে নদীর তলদেশে বালু জমে গেছে। ফলে নদীটি এখন আগের মতো আর নাব্য নয়। ছোট নৌকাও এখন নদীতে চলাচল করতে পারে না। নদীর জল কমে যাওয়ার কারণে নদীর পাড়ে বসবাসকারী মানুষের জীবনযাত্রার ওপরও প্রভাব পড়েছে। তারা আর আগের মতো নদীর জল ব্যবহার করতে পারে না। এছাড়াও, নদীর জল কমে যাওয়ায় মাছের সংখ্যাও কমে গেছে। ফলে, নদীর পাড়ে বসবাসকারী মানুষের আয়-রোজগারেও ভাটা পড়েছে।

See also  আজকালের পুরুষরা কেন লম্বা মেয়ে খুঁজছে বিয়ের জন্য?

নদীর রক্ষণাবেক্ষণের প্রয়োজনীয়তা

আমাদের দেশের ছোট নদীগুলোর অবস্থা খুবই করুণ। বর্ষাকালে এগুলো পানিতে ভরে বড় হয়ে উঠে, আর শীতকালে হাঁটু পানিতে দাঁড়িয়ে থাকে। আমাদের নদীর এই দুর্দশার কারণ হলো, আমরা এগুলো ঠিকমতো রক্ষণাবেক্ষণ করি না। আমরা নদীতে নানা রকম ময়লা ফেলি, যেগুলো নদীর তলদেশে জমা হয়ে নদীর পানির গতি কমিয়ে দেয়। এছাড়া, আমরা নদীর দু’পাশে অবৈধ স্থাপনা গড়ে তুলি, যেগুলো নদীর প্রবাহে বাধা সৃষ্টি করে।

এসব কারণে আমাদের নদীগুলো দিন দিন সংকুচিত হয়ে যাচ্ছে। নদীগুলো সংকুচিত হওয়ার ফলে পানি ধারণ করার ক্ষমতা কমে যায়, যার ফলে বর্ষায় বন্যা হয় এবং শুকনো মৌসুমে নদীতে পানির স্তর কমে যায়। এছাড়া, নদীর দূষণের ফলে জলজ জীববৈচিত্র হুমকির মুখে পড়ে।

তাই আমাদের ছোট নদীগুলোর রক্ষণাবেক্ষণ করা জরুরি। আমরা নদীতে ময়লা ফেলা বন্ধ করতে হবে এবং নদীর দু’পাশে কোনো অবৈধ স্থাপনা গড়ে তুলব না। আমাদের নদীগুলোকে পুনরুজ্জীবিত করতে সরকারকেও পদক্ষেপ নিতে হবে। আমরা সবাই মিলে কাজ করলে আমরা আমাদের ছোট নদীগুলোকে রক্ষা করতে পারব এবং ভবিষ্যৎ প্রজন্মের জন্য একটি সুস্থ পরিবেশ নিশ্চিত করতে পারব।

Omi Avatar

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *