আমরা যে বছরগুলোতে বাস করি সেগুলোকে গণনা করার জন্য আমরা একটি সালগণনা ব্যবস্থা ব্যবহার করি, যাতে আমরা সময়ের গতিবিধি ট্র্যাক করতে পারি এবং ঘটনাগুলোকে একে অপরের সাথে তুলনা করতে পারি। আমাদের বর্তমানে ব্যবহৃত সবচেয়ে সাধারণ সালগণনা ব্যবস্থা হল খ্রিস্টান সালগণনা, যা খ্রিস্টের জন্ম থেকে শুরু হয়। কিন্তু খ্রিস্টান সালগণনা সর্বদা ব্যবহৃত হত না; এর আগে অন্যান্য সালগণনা ব্যবস্থা ছিল। এই নিবন্ধে, আমি খ্রিস্টপূর্ব সালগণনার ইতিহাস এবং এটি কীভাবে বিকশিত হয়েছে তা নিয়ে আলোচনা করব। আমি খ্রিস্টপূর্ব এবং খ্রিস্টাব্দের মধ্যে পার্থক্য, প্রাচীন কালে ব্যবহৃত সালগণনা ব্যবস্থা এবং সাধারণ যুগের সালগণনা সম্পর্কেও আলোচনা করব। এই নিবন্ধটি পড়ার পরে, আপনি খ্রিস্টপূর্ব সালগণনা সম্পর্কে আরও বেশি জ্ঞান অর্জন করবেন এবং আমরা কীভাবে সময় গণনা করি তার বিবর্তন সম্পর্কে একটি ভাল বোধগম্যতা পাবেন।
খ্রিস্টপূর্ব সালগণনা কী?
ছেলেবেলায় এই ছড়াটি কে না শুনেছে? যদিও এখন অনেক বাচ্চারাই এই ছড়া সম্পর্কে কিছু জানে না। কিন্তু এক সময় এই ছড়াটি ছিল সর্বজনীন। শুধু যে বাচ্চারাই জানত তা নয়, বড়রাও এই ছড়াটির সঙ্গে পরিচিত ছিলেন। এমনকি অনেকেই এই ছড়াটি গুনগুন করে গাইতেন।
এই র পেছনে রয়েছে বিশেষ কারণ। প্রথমত, এই ছড়াটির ছন্দ খুবই মধুর। তাই এটি গাইতে খুবই সুখকর। দ্বিতীয়ত, এই ছড়াটির ভাষা খুবই সহজ ও সরল। ফলে এটি বাচ্চারাও সহজেই বুঝতে পারে। তৃতীয়ত, এই ছড়াটির বিষয়বস্তুও খুবই মজার। ছড়াটিতে বলা হয়েছে, একটা ছেলে ঘুমোলে তার ঘরের পাশে বহু বর্গী এসে হাজির হয়। এমন একটা অবাস্তব ঘটনাকে এত সুন্দরভাবে বলা হয়েছে যে, শুনে মনটা খুশিতে ভরে ওঠে।
আজকালকার বাচ্চাদের এই ছড়াটি জানা উচিত। কারণ, এটি শুধু একটি ছড়া নয়, এটি আমাদের সাহিত্যের একটা অংশ। এমন একটি সাহিত্য যা প্রজন্মের পর প্রজন্ম ধরে চলে আসছে।
খ্রিস্টপূর্ব সালগণনা কত সাল থেকে শুরু?
খ্রিস্টপূর্ব শুরু কত সাল বা সংখ্যা থেকে?
খ্রিস্টপূর্ব ক্যালেন্ডার, যা আধুনিক গ্রেগরিয়ান ক্যালেন্ডারের অনুরূপ, প্রথম শতাব্দী খ্রিস্টাব্দে রোমান ভিক্ষু ডায়নিসিয়াস এক্সিগুউস কর্তৃক তৈরি করা হয়েছিল। ক্যালেন্ডারটি যীশু খ্রিস্টের জন্ম তারিখ থেকে সময় হিসাব করার জন্য তৈরি করা হয়েছিল, যা তিনি 25 ডিসেম্বর খ্রিস্টপূর্ব 1 এ ঘটেছে বলে বিশ্বাস করতেন। তবে, আধুনিক গবেষণায় দেখা গেছে যে যীশু খ্রিস্টের প্রকৃত জন্ম তারিখ খ্রিস্টপূর্ব 4 সালের মধ্যে যেকোনো সময় হতে পারে।
ফলস্বরূপ, খ্রিস্টপূর্ব ক্যালেন্ডারটি কার্যত একটি কাল্পনিক ক্যালেন্ডার, যা প্রায় 2,000 বছর আগে একটি রোমান ভিক্ষুর ধারণা নিয়ে তৈরি করা হয়েছিল। ক্যালেন্ডারটি তৈরি করার সময় ডায়নিসিয়াস খ্রিস্টের জন্ম তারিখ সম্পর্কে নিশ্চিত ছিলেন না, তাই তিনি খ্রিস্টপূর্ব 1 সালকে মনোনীত করেন। এই সিদ্ধান্তটি যুগ যুগ ধরে অনুসরণ করা হয়েছে, এমনকি যদি এটি ঐতিহাসিকভাবে সঠিক নাও হয়।
আজকের দিনে, খ্রিস্টপূর্ব ক্যালেন্ডারটি ব্যাপকভাবে আধুনিক সময় গণনা পদ্ধতি হিসাবে ব্যবহৃত হয়। এটি পৃথিবীর বেশিরভাগ দেশের সরকারি ক্যালেন্ডার। অ্যাস্ট্রোনমিক্যাল ক্যালেন্ডার হিসাবেও এটি ব্যবহৃত হয়, যা তারা এবং গ্রহের অবস্থান ট্র্যাক করতে ব্যবহৃত হয়। যদিও এটি ঐতিহাসিকভাবে সঠিক নাও হতে পারে, কিন্তু খ্রিস্টপূর্ব ক্যালেন্ডারটি আজও একটি গুরুত্বপূর্ণ এবং ব্যাপকভাবে ব্যবহৃত ক্যালেন্ডার।
খ্রিস্টপূর্ব সালগণনার সৃষ্টি কে করেছিলেন?
খ্রিস্টপূর্ব যুগ হল একটি কালানুক্রমিক যুগ যা খ্রিস্টের জন্মের আগে সময়কে নির্দেশ করে। যেহেতু খ্রিস্টের জন্মের কোন সঠিক তারিখ নির্ণয় করা যায়নি, তাই খ্রিস্টপূর্ব যুগের শুরুও সঠিকভাবে নির্ধারণ করা যায় না। তবে, সাধারণত খ্রিস্টপূর্ব 1 সালকে খ্রিস্টপূর্ব যুগের শুরু হিসাবে ধরা হয়।
খ্রিস্টপূর্ব সালগণনা পদ্ধতিটি ষষ্ঠ শতাব্দীর শেষের দিকে রোমান সন্ন্যাসী ডিওনিসিয়াস এক্সিগুয়াস কর্তৃক তৈরি করা হয়েছিল। তিনি রোমান সম্রাট ভ্যালেন্টাইনের রাজত্বের বছর গণনা করার জন্য এই পদ্ধতিটি তৈরি করেছিলেন। ডিওনিসিয়াস বিশ্বাস করতেন যে খ্রিস্টের জন্ম হয়েছিল 25 ডিসেম্বর, 753 অ্যাবিউরব প্যান্ডেটো (রোম প্রতিষ্ঠার পর থেকে)। তিনি তার গণনাটি অকটেভিয়ান (পরে অগাস্টাস) সিজারের রাজত্বের শেষ বছর থেকে শুরু করেছিলেন, যা তিনি বিশ্বাস করতেন যে খ্রিস্টের জন্মের আগে দুই বছর ছিল।
যদিও ডিওনিসিয়াসের গণনা পরে ভুল প্রমাণিত হয়েছিল, তবে তাঁর খ্রিস্টপূর্ব সালগণনা পদ্ধতিটি ব্যাপকভাবে গৃহীত হয়েছিল এবং এখনও আজও ব্যবহৃত হচ্ছে।
খ্রিস্টপূর্ব এবং খ্রিস্টাব্দ সালগণনার মধ্যে পার্থক্য
বোঝার জন্য, আমাদের প্রথমে তাদের উৎপত্তি বুঝতে হবে। খ্রিস্টপূর্ব (বিসি) হল একটি লাতিন শব্দ যার অর্থ “খ্রীষ্টের জন্মের আগে”। এই ক্যালেন্ডারটির সূচনা খ্রীস্টান ধর্মযাজক ডিওনিসিয়াস এক্সিগুয়াস খ্রিস্টের জন্মের প্রায় 525 বছর পরে করেছিলেন। অন্যদিকে, খ্রিস্টাব্দ (এডি) মানে “খ্রীষ্টের জন্ম”। এটি একটি লাতিন শব্দ যা খ্রিস্টের জন্মের বছর থেকে শুরু হওয়া বর্তমান ক্যালেন্ডার সিস্টেমকে বোঝায়।
খ্রিস্টপূর্ব সালগণনা খ্রিস্টের জন্মের আগের বছরগুলিকে নির্দেশ করে, যখন খ্রিস্টাব্দ সালগণনা খ্রিস্টের জন্মের পরের বছরগুলিকে নির্দেশ করে। এই দুটি সালগণনার মধ্যে মূল পার্থক্য হল যে খ্রিস্টপূর্ব সালগণনায় বছরগুলিকে “খ্রীষ্টের জন্মের আগে” হিসাবে গণনা করা হয়, যখন খ্রিস্টাব্দ সালগণনায় বছরগুলিকে “খ্রীষ্টের জন্মের পরে” হিসাবে গণনা করা হয়। উদাহরণস্বরূপ, 1 খ্রিস্টপূর্ব হল খ্রিস্টের জন্মের আগে শেষ বছর, এবং 1 খ্রিস্টাব্দ হল খ্রিস্টের জন্মের পরের প্রথম বছর।
এই পার্থক্যগুলি বোঝা গুরুত্বপূর্ণ কারণ এটি আমাদের ঐতিহাসিক ঘটনাগুলিকে সঠিকভাবে তারিখ করতে সাহায্য করে। যখন আমরা ঐতিহাসিক ঘটনাগুলির কথা বলি, তখন আমাদের নিশ্চিত করতে হবে যে আমরা কোন সালগণনা ব্যবহার করছি, খ্রিস্টপূর্ব বা খ্রিস্টাব্দ, যাতে আমরা ঘটনাটির সঠিক সময়কাল বুঝতে পারি।
প্রাচীন যুগে সালগণনা ব্যবস্থা
আমাদের আজকের যুগে আধুনিক ক্যালেন্ডারের সঙ্গে আমরা অভ্যস্ত হয়ে গেছি। তবে প্রাচীন যুগে সালগণনা করার ব্যবস্থা ছিল একেবারে আলাদা। সেই সময় মানুষ সূর্য, চাঁদ এবং তারার গতিবিধির ওপর ভিত্তি করে সাল গণনা করত। প্রাচীন মিশরীয়রা প্রায় ৫,০০০ বছর আগে প্রথম সৌর ক্যালেন্ডার তৈরি করেছিল। এই ক্যালেন্ডারে বছর ছিল ৩৬৫ দিনের। তবে মিশরীয় ক্যালেন্ডারে কোনো অধিকবর্ষ ছিল না, ফলে প্রতিটি বছর ছিল সূর্যের চক্রের চেয়ে প্রায় সাড়ে ছয় ঘন্টা কম। এর ফলে প্রতি চার বছরেই ক্যালেন্ডারটি প্রায় এক দিন পিছিয়ে যেত। এই সমস্যাটি সমাধানের জন্য প্রাচীন রোমানরা খ্রিস্টপূর্ব ৪৫ বছরে জুলিয়ান ক্যালেন্ডার তৈরি করে। এই ক্যালেন্ডারে প্রতি চার বছরেই একটি অধিকবর্ষ ছিল, যার দ্বারা প্রতি চার বছরেই ক্যালেন্ডারটি সূর্যের চক্রের সঙ্গে খাপ খাইয়ে নিত। জুলিয়ান ক্যালেন্ডারটি প্রায় ১,৬০০ বছর ধরে ব্যবহৃত হয়েছিল, তবে এটিও সূক্ষ্মভাবে ভুল ছিল। প্রতি ১২৮ বছরে জুলিয়ান ক্যালেন্ডারটি প্রায় এক দিন এগিয়ে যেত। এই সমস্যাটি সমাধানের জন্য ১৫৮২ সালে পোপ গ্রেগরি XIII গ্রেগরিয়ান ক্যালেন্ডার তৈরি করেন। এই ক্যালেন্ডারটি আজও বিশ্বব্যাপী ব্যবহৃত হচ্ছে।
সাধারণ যুগ সালগণনা
আমাদের আজকের যুগে আধুনিক ক্যালেন্ডারের সঙ্গে আমরা অভ্যস্ত হয়ে গেছি। তবে প্রাচীন যুগে সালগণনা করার ব্যবস্থা ছিল একেবারে আলাদা। সেই সময় মানুষ সূর্য, চাঁদ এবং তারার গতিবিধির ওপর ভিত্তি করে সাল গণনা করত। প্রাচীন মিশরীয়রা প্রায় ৫,০০০ বছর আগে প্রথম সৌর ক্যালেন্ডার তৈরি করেছিল। এই ক্যালেন্ডারে বছর ছিল ৩৬৫ দিনের। তবে মিশরীয় ক্যালেন্ডারে কোনো অধিকবর্ষ ছিল না, ফলে প্রতিটি বছর ছিল সূর্যের চক্রের চেয়ে প্রায় সাড়ে ছয় ঘন্টা কম। এর ফলে প্রতি চার বছরেই ক্যালেন্ডারটি প্রায় এক দিন পিছিয়ে যেত। এই সমস্যাটি সমাধানের জন্য প্রাচীন রোমানরা খ্রিস্টপূর্ব ৪৫ বছরে জুলিয়ান ক্যালেন্ডার তৈরি করে। এই ক্যালেন্ডারে প্রতি চার বছরেই একটি অধিকবর্ষ ছিল, যার দ্বারা প্রতি চার বছরেই ক্যালেন্ডারটি সূর্যের চক্রের সঙ্গে খাপ খাইয়ে নিত। জুলিয়ান ক্যালেন্ডারটি প্রায় ১,৬০০ বছর ধরে ব্যবহৃত হয়েছিল, তবে এটিও সূক্ষ্মভাবে ভুল ছিল। প্রতি ১২৮ বছরে জুলিয়ান ক্যালেন্ডারটি প্রায় এক দিন এগিয়ে যেত। এই সমস্যাটি সমাধানের জন্য ১৫৮২ সালে পোপ গ্রেগরি XIII গ্রেগরিয়ান ক্যালেন্ডার তৈরি করেন। এই ক্যালেন্ডারটি আজও বিশ্বব্যাপী ব্যবহৃত হচ্ছে।
Leave a Reply