ছাত্রলীগ একটি ঐতিহাসিক এবং প্রভাবশালী ছাত্র সংগঠন যা বাংলাদেশের রাজনীতিতে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করেছে। ১৯৪৮ সালে প্রতিষ্ঠিত, ছাত্রলীগ শিক্ষার্থীদের অধিকার এবং স্বার্থের জন্য লড়াই করার জন্য কাজ করেছে। এই সংগঠন শিক্ষা ব্যবস্থার উন্নয়ন এবং বাংলাদেশের সামাজিক-রাজনৈতিক জীবনে অবদান রেখেছে।
এই ব্লগ পোস্টটিতে, আমি ছাত্রলীগের প্রতিষ্ঠা, প্রতিষ্ঠাতা সদস্য, প্রথম সভাপতি, প্রাথমিক লক্ষ্য এবং উদ্দেশ্য এবং সংগঠনের বর্তমান অবস্থা সম্পর্কে আলোচনা করব। আপনি ছাত্রলীগের ইতিহাস এবং বাংলাদেশের শিক্ষা ও রাজনীতিতে এর ভূমিকা সম্পর্কে জানতে পারবেন। তাছাড়া, আপনি সুরঞ্জিত সেনগুপ্তের জীবন এবং অবদান সম্পর্কে জানতে পারবেন, যিনি ছাত্রলীগের প্রথম সভাপতি এবং অন্যতম প্রধান প্রতিষ্ঠাতা সদস্য ছিলেন।
ছাত্রলীগ প্রতিষ্ঠার পটভূমি
বাংলাদেশ ছাত্রলীগ ১৯৪৮ সালের ৪ জানুয়ারি ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের তৎকালীন ছাত্রাবাস সলিমুল্লাহ মুসলিম হলে প্রতিষ্ঠিত হয়। এই সংগঠনের প্রথম সভাপতি ছিলেন আবুল হাসনাত মুহাম্মদ কামারুজ্জামান।
ছাত্রলীগের প্রতিষ্ঠার মূল উদ্দেশ্য ছিল পাকিস্তানের শাসকদের বিরুদ্ধে ছাত্রসমাজকে ঐক্যবদ্ধ করা এবং পূর্ব পাকিস্তানের অধিকার আদায়ের জন্য সংগ্রাম করা। ছাত্রলীগের প্রথম কমিটিতে আরও ছিলেন শেখ মুজিবুর রহমান, তাজউদ্দীন আহমদ, কামাল হোসেন, এম এ ওয়াদুদ, সৈয়দ নজরুল ইসলাম, আবদুল মতিন, সৈয়দ আজাদ প্রমুখ।
ছাত্রলীগ প্রতিষ্ঠার পর থেকেই পাকিস্তানের শাসকদের বিরুদ্ধে আন্দোলনের নেতৃত্ব দিয়েছে। ১৯৫২ সালে ভাষা আন্দোলন, ১৯৬৯ সালে গণঅভ্যুত্থান এবং ১৯৭১ সালের মুক্তিযুদ্ধে ছাত্রলীগের গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা ছিল। ছাত্রলীগের এই ঐতিহ্যবাহী ভূমিকা অব্যাহত রেখে স্বাধীন বাংলাদেশেও ছাত্রসমাজের অধিকার আদায়ের জন্য এবং গণতান্ত্রিক আন্দোলনে নেতৃত্ব দিয়ে যাচ্ছে।
ছাত্রলীগ প্রতিষ্ঠার উদ্যোক্তাগণ
ছাত্রলীগের প্রতিষ্ঠাতা সভাপতি শেখ মুজিবুর রহমান ছিলেন। তিনি ১৯৪৮ সালের ৪ জানুয়ারি ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের ছাত্রাবাসে প্রতিষ্ঠিত করেছিলেন ছাত্রলীগ। সে সময় তিনি ছিলেন ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের আইন বিভাগের শিক্ষার্থী। ছাত্রলীগের প্রতিষ্ঠাতা সাধারণ সম্পাদক ছিলেন জহুর আহম্মেদ চৌধুরী। তিনিও ছিলেন ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের আইন বিভাগের শিক্ষার্থী। ছাত্রলীগের প্রতিষ্ঠাকালীন অন্যান্য উদ্যোক্তাদের মধ্যে উল্লেখযোগ্য হলেন আব্দুল হামিদ খান ভাসানী, মওলানা আবদুল হামিদ খান ভাসানী, তাজউদ্দীন আহমেদ, কামাল হোসেন, সৈয়দ নজরুল ইসলাম, আবুল হাসনাত মোহাম্মদ কামারুজ্জামান, আব্দুর রাজ্জাক, তোফাজ্জল হোসেন মানিক মিয়া, সৈয়দ আলী আওসাত, রফিকুল ইসলাম, মনিরুল ইসলাম, খন্দকার গোলাম ফারুক, খন্দকার মোশতাক আহমদ, এম.এ. গফুর, শেখ মোহাম্মদ আলতাফ, কাজী আসাদ।
ছাত্রলীগের প্রথম সভাপতি
ছিলেন শেখ মুজিবুর রহমান। তিনিই ছিলেন বাংলাদেশের প্রধানমন্ত্রী এবং বাংলাদেশের স্বাধীনতা সংগ্রামের অন্যতম প্রধান নেতা। ১৯৪৮ সালের ৪ জানুয়ারি তৎকালীন পূর্ব পাকিস্তান ছাত্র সম্মেলনে ছাত্রলীগ প্রতিষ্ঠিত হয়। এই সম্মেলনে সভাপতি নির্বাচিত হন শেখ মুজিবুর রহমান। তিনি হিসেবে দায়িত্ব পালন করেন ১৯৫২ সাল পর্যন্ত। ছাত্রলীগ প্রতিষ্ঠার পর থেকেই শেখ মুজিবুর রহমান ছাত্র আন্দোলনে সক্রিয় ভূমিকা পালন করেছেন। তিনি ছাত্রদের অধিকার আদায়ের জন্য অনেক আন্দোলন-সংগ্রাম পরিচালনা করেছেন।
সুরঞ্জিত সেনগুপ্তর জীবন ও কর্ম
সুরঞ্জিত সেনগুপ্ত ছিলেন একজন বিশিষ্ট বাঙালি বিপ্লবী, রাজনীতিবিদ এবং সাংবাদিক। ১৮৭৫ সালের ৩রা জানুয়ারি বরিশালে তার জন্ম। কলকাতার প্রেসিডেন্সি কলেজ থেকে স্নাতক হওয়ার পর তিনি বিপ্লবী আন্দোলনে যোগ দেন। তিনি ছিলেন ছাত্রলীগের প্রথম সভাপতি এবং যুগান্তর পত্রিকার প্রতিষ্ঠাতা সম্পাদক। ১৯১৬ সালে তিনি ব্রিটিশ সরকার কর্তৃক গ্রেফতার হন এবং আন্দামান সেলুলার জেলে কারাবরণ করেন। দীর্ঘ কারাবাসের পর ১৯২১ সালে তিনি মুক্তি পান এবং সক্রিয় রাজনীতিতে ফিরে আসেন। তিনি ভারতের কমিউনিস্ট পার্টির প্রতিষ্ঠাতা সদস্য ছিলেন এবং ১৯৩০ সালে তিনি ভারতের কমিউনিস্ট পার্টি (মার্কসবাদী) গঠন করেন। সুরঞ্জিত সেনগুপ্ত ১৯৩১ সালের ১৫ই আগস্ট মৃত্যুবরণ করেন। তিনি ছিলেন একজন অক্লান্ত বিপ্লবী এবং স্বাধীনতা সংগ্রামের একজন কেন্দ্রীয় ব্যক্তিত্ব।
ছাত্রলীগের প্রাথমিক লক্ষ্য ও উদ্দেশ্য
ছিল শিক্ষার্থীদের স্বার্থ রক্ষা করা, শিক্ষা ব্যবস্থার উন্নয়ন করা এবং সামাজিক ও রাজনৈতিক সচেতনতা বাড়ানো। এছাড়াও, ছাত্রলীগের লক্ষ্য ছিল শিক্ষার্থীদের মধ্যে ঐক্য ও সংহতি গড়ে তোলা এবং তাদের নেতৃত্ব গুণাবলী বিকাশে সহায়তা করা। ছাত্রলীগের প্রতিষ্ঠাতা সভাপতি ছিলেন শেখ মুজিবুর রহমান।
উপসংহার
ছিল শিক্ষার্থীদের স্বার্থ রক্ষা করা, শিক্ষা ব্যবস্থার উন্নয়ন করা এবং সামাজিক ও রাজনৈতিক সচেতনতা বাড়ানো। এছাড়াও, ছাত্রলীগের লক্ষ্য ছিল শিক্ষার্থীদের মধ্যে ঐক্য ও সংহতি গড়ে তোলা এবং তাদের নেতৃত্ব গুণাবলী বিকাশে সহায়তা করা। ছাত্রলীগের প্রতিষ্ঠাতা সভাপতি ছিলেন শেখ মুজিবুর রহমান।
Leave a Reply