পর্যায় সারণীতে বাম থেকে ডানে: পরমাণুর আকারের রহস্য উন্মোচন

পর্যায় সারণীতে বাম থেকে ডানে: পরমাণুর আকারের রহস্য উন্মোচন

পর্যায় সারণী হলো রাসায়নিক মৌলসমূহের একটি সুবিন্যস্ত তালিকা, যা পরমাণু ক্রমিক সংখ্যা, ইলেকট্রন কনফিগারেশন এবং পুনরাবৃত্ত রাসায়নিক বৈশিষ্ট্যের উপর ভিত্তি করে সাজানো। এটি একটি অত্যন্ত মূল্যবান সরঞ্জাম যা রসায়নবিদগণ মৌলগুলির বৈশিষ্ট্য বুঝতে এবং তাদের আচরণের পূর্বাভাস দিতে ব্যবহার করেন। এই ব্লগ পোস্টে, আমি পর্যায় সারণীর গঠন এবং কাঠামো, পরমাণুর আকার এবং পর্যায় সারণী, বাম থেকে ডানে যাওয়ার সাথে সাথে পরমাণুর আকারের পরিবর্তন এবং এই পরিবর্তনের কারণসহ এই পরিবর্তনের উদাহরণ এবং অ্যাপ্লিকেশনগুলি আলোচনা করব। এই বিষয়গুলি বুঝতে আমি আপনাকে এই পোস্টটি পড়ার জন্য অনুরোধ করছি, যা আপনাকে রসায়নের মৌলিক বিল্ডিং ব্লকগুলির একটি ভাল উপলব্ধি দেবে।

পর্যায় সারণী কি?

পর্যায় সারণী হলো রাসায়নিক মৌলসমূহের একটি সারণী যা পরমাণু ক্রম সংখ্যা, ইলেকট্রন বিন্যাস এবং পুনরাবৃত্তি রাসায়নিক বৈশিষ্ট্যের ভিত্তিতে সাজানো হয়েছে। একে আধুনিক পর্যায় সারণীর জনক রাশিয়ান রসায়নবিদ দিমিত্রি মেন্ডেলিভ ১৮৬৯ সালে প্রকাশ করেছিলেন। পর্যায় সারণীর বাম থেকে ডানে গেলে পরমাণুর আকার ক্রমশ হ্রাস পায়। এটি ঘটে কারণ যত ডানদিকে গেলে পরমাণুর পরমাণু ক্রম সংখ্যা তত বৃদ্ধি পায়, যার ফলে নিউক্লীয় চার্জ বৃদ্ধি পায়। এই বর্ধিত নিউক্লীয় চার্জ পরমাণুর চারপাশে ইলেকট্রনগুলিকে আরও দৃঢ়ভাবে আকর্ষণ করে, যার ফলে পরমাণুর ব্যাস হ্রাস পায়। ফলস্বরূপ, একই পর্যায়ে বাম থেকে ডানে এগোলে পরমাণুগুলির আকার হ্রাস পেতে থাকে।

পর্যায় সারণীর গঠন

পর্যায় সারণীতে বাম থেকে ডানে গেলে পরমাণুর আকার কেমন হয়?

যখন তুমি পর্যায় সারণীর বাম থেকে ডানে যাও, তখন পরমাণুর আকার হ্রাস পায়। এর কারণ হলো, পর্যায় সারণীর প্রতিটি সারির সাথে পারমাণবিক সংখ্যা বাড়ে। পারমাণবিক সংখ্যা হলো পরমাণুর নিউক্লিয়াসে প্রোটনের সংখ্যা। প্রোটনগুলি ধনাত্মকভাবে চার্জিত কণা এবং তারা পরমাণুর কেন্দ্রকে একসাথে ধরে রাখে। যখন পারমাণবিক সংখ্যা বৃদ্ধি পায়, তখন নিউক্লিয়াসে প্রোটনগুলির সংখ্যা বৃদ্ধি পায়। এটি নিউক্লিয়াসের আকর্ষণীয় বলকে বাড়িয়ে তোলে। এই বাড়তি আকর্ষণীয় বল ইলেকট্রনগুলিকে নিউক্লিয়াসের কাছাকাছি টানে, যার ফলে পরমাণুর আকার হ্রাস পায়।

See also  গ্যালভানিক কোষে লবণ সেতুর প্রয়োজনীয়তা: ব্যাখ্যা ও প্রয়োগসমূহ

পরমাণুর আকার এবং পর্যায় সারণী

পর্যায় সারণীর বাম থেকে ডানে গেলে পরমাণুর আকার কেমন হয়?

পর্যায় সারণীতে বাম থেকে ডানে গেলে পরমাণুর আকার হ্রাস পায়। কারণ, বাম দিকের মৌলগুলোর ভ্যালেন্স ইলেকট্রনের সংখ্যা বেশি। ভ্যালেন্স ইলেকট্রন হলো পরমাণুর সর্ববহিঃস্থ শক্তিস্তরে থাকা ইলেকট্রন, যা রাসায়নিক বন্ধনে অংশ নেয়। ভ্যালেন্স ইলেকট্রন সংখ্যা বেশি হলে পরমাণুর আকার বড় হয়। কারণ, ভ্যালেন্স ইলেকট্রনগুলো পরমাণুর কেন্দ্রক থেকে অপেক্ষাকৃত দূরে থাকে, যার ফলে পরমাণুর ব্যাসার্ধ বড় হয়। ডান দিকে যাওয়ার সাথে সাথে ভ্যালেন্স ইলেকট্রনের সংখ্যা হ্রাস পায়, ফলে পরমাণুর আকারও হ্রাস পায়। সুতরাং, পর্যায় সারণীর বাম থেকে ডানে গেলে পরমাণুর আকার হ্রাস পায় কারণ ভ্যালেন্স ইলেকট্রনের সংখ্যা হ্রাস পায় এবং পরমাণুর কেন্দ্রকের সাথে ভ্যালেন্স ইলেকট্রনগুলোর দূরত্ব কমে যায়।

পর্যায় সারণীর বাম থেকে ডানে যাওয়ার সাথে পরমাণুর আকারের পরিবর্তন

পর্যায় সারণীতে বাম দিক থেকে ডান দিকে যাওয়ার সাথে সাথে পরমাণুর আকার ক্রমশই ছোট হয়। এর কারণ হলো, ডান দিকে যাওয়ার সাথে সাথে প্রতিটি শক্তিস্তরে ইলেকট্রন সংখ্যা বাড়ে, কিন্তু নিউক্লিয়াসের আকার একই থাকে। ফলে, নিউক্লিয়াসের প্রতি ইলেকট্রনের আকর্ষণ শক্তি বাড়ে এবং ইলেকট্রনগুলি নিউক্লিয়াসের কাছাকাছি টানা হয়। এর ফলে পরমাণুর আকার ছোট হয়ে যায়। উদাহরণস্বরূপ, লিথিয়াম পরমাণুর আকার সোডিয়াম পরমাণুর আকারের চেয়ে ছোট, এবং সোডিয়াম পরমাণুর আকার পটাশিয়াম পরমাণুর আকারের চেয়ে ছোট।

এই পরিবর্তনের কারণসমূহ

পর্যায় সারণীর বাম থেকে ডানে গেলে পরমাণুর আকার কেমন হয়?

:
আপনি যখন পর্যায় সারণীর বাম থেকে ডানে যান, ইলেকট্রনগুলি নিউক্লিয়াসের কাছাকাছি একটি শেল থেকে অন্য শেলে যায়। এটি নিউক্লিয়াসের ধনাত্মক চার্জকে আরও কার্যকরভাবে প্রতিরোধ করে, যার ফলে পরমাণুর আকার হ্রাস পায়।

  • ইলেকট্রন সংখ্যা: প্রতিটি পর্যায়ে যখন আপনি ডান দিকে যান, একটি নতুন ইলেকট্রন শেলে যুক্ত হয়। যেমনটি ইলেকট্রনগুলি একটি নির্দিষ্ট শেল পূরণ না হওয়া পর্যন্ত যুক্ত হয়, পরমাণুর আকার বৃদ্ধি পায়।
  • নিউক্লিয়াসের চার্জ: পর্যায় সারণীর একটি নির্দিষ্ট সারিতে যখন আপনি ডান দিকে যান, প্রোটন সংখ্যা বৃদ্ধি পায়। এটি নিউক্লিয়াসের ধনাত্মক চার্জ বাড়ায়, যা ইলেকট্রনগুলিকে নিউক্লিয়াসের দিকে আকর্ষণ করে। এটি পরমাণুর আকারকে হ্রাস করে।
  • ইলেকট্রন-নিউক্লিয়াস আকর্ষণ: যেমনটি উল্লেখ করা হয়েছে, নিউক্লিয়াসের ধনাত্মক চার্জ ইলেকট্রনগুলিকে আকর্ষণ করে। এই আকর্ষণ পরমাণুর আকারকে নিয়ন্ত্রণ করে। বাম থেকে ডানে যাওয়ার সাথে সাথে নিউক্লিয়াসের আকর্ষণ শক্তিশালী হয়ে ওঠে, যার ফলে পরমাণুর আকার হ্রাস পায়।
See also  অ্যালকিন ও অ্যালকাইনের মধ্যে কোনটি অধিক সক্রিয়? জানুন এর কারণ

তবে, কিছু ব্যতিক্রম রয়েছে। উদাহরণস্বরূপ, সোডিয়াম (Na) থেকে অ্যালুমিনিয়াম (Al) পর্যন্ত যাওয়ার সাথে সাথে পরমাণুর আকার বৃদ্ধি পায়। এটি ঘটে কারণ নতুন শেলের পূরণ হওয়ার সাথে সাথে ইলেকট্রন-নিউক্লিয়াস আকর্ষণের প্রভাবকে ইলেকট্রন-ইলেকট্রন বিকর্ষণ অতিক্রম করে।

উদাহরণ এবং অ্যাপ্লিকেশন

পর্যায় সারণীর বাম থেকে ডানে গেলে পরমাণুর আকার কেমন হয়?

পর্যায় সারণীর প্রত্যেক সারি একটি পর্যায় নামে পরিচিত এবং প্রত্যেক কলাম একটি মূলক নামে পরিচিত। যখন আপনি পর্যায় সারণীর বাম থেকে ডানে যান, তখন আপনি পরমাণু সংখ্যা বা প্রোটন সংখ্যা বাড়িয়ে যাচ্ছেন। যেহেতু প্রোটনগুলি নিউক্লিয়াসে অবস্থিত, প্রোটন সংখ্যা বৃদ্ধির সাথে সাথে নিউক্লিয়াসের আকর্ষণ শক্তিও বৃদ্ধি পায়। এই বর্ধিত আকর্ষণ শক্তি ইলেকট্রনকে নিউক্লিয়াসের দিকে টানে, ফলে পরমাণুর ব্যাসার্ধ হ্রাস পায়। সুতরাং, পর্যায় সারণীর বাম থেকে ডানে যাওয়ার সাথে সাথে পরমাণুর আকার হ্রাস পায়।

Susmita Avatar

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *