বাংলাদেশ ব্যাংকের গভর্নর: ফজলে কবিরের অবস্থান কততম?

বাংলাদেশ ব্যাংকের গভর্নর: ফজলে কবিরের অবস্থান কততম?

আমার আজকের লেখা বাংলাদেশ ব্যাংকের গভর্নর ফজলে কবির সম্পর্কে। বাংলাদেশ ব্যাংকের একজন অন্যতম গুরুত্বপূর্ণ ব্যক্তিত্ব তিনি। তার অবদান বাংলাদেশের অর্থনৈতিক উন্নয়নে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রেখেছে। এই লেখায়, আমি ফজলে কবিরের পটভূমি, তাঁর বাংলাদেশ ব্যাংকের গভর্নর হিসাবে নিয়োগ, তাঁর অবদান, বাংলাদেশ ব্যাংকের অন্যান্য গভর্নর এবং তাঁর উত্তরাধিকার সম্পর্কে আলোচনা করব। এই লেখাটি আপনাকে বাংলাদেশ ব্যাংকের গভর্নর ফজলে কবির এবং বাংলাদেশের অর্থনৈতিক উন্নয়নে তাঁর ভূমিকা সম্পর্কে বিস্তৃত ধারণা দেবে।

বাংলাদেশ ব্যাংকের গভর্নর

আইআইটি প্রবেশিকা পরীক্ষাটি ভারতের অন্যতম প্রতিযোগিতামূলক এবং সম্মানিত প্রবেশিকা পরীক্ষা, যা ভারতীয় প্রযুক্তিবিদ্যা প্রতিষ্ঠানে (IIT) প্রবেশের জন্য প্রয়োজনীয়। এই পরীক্ষাটি ভারতের নাগরিকদের জন্য উন্মুক্ত হলেও, কিছু শর্ত পূরণের পর বাংলাদেশীদেরও আইআইটি পরীক্ষা দিতে পারে।

বাংলাদেশি শিক্ষার্থী হিসেবে আইআইটি পরীক্ষা দিতে হলে, তোমার অবশ্যই ভারতের স্বীকৃত স্কুল বা কলেজে অধ্যয়নরত হতে হবে। তাছাড়া, তোমার অবশ্যই ভারতীয় শিক্ষা বোর্ডের অধীনে অন্তত 10+2 পরীক্ষা পাস করতে হবে, এবং তোমার রেজিস্ট্রেশনের সময় একটি বৈধ ভারতীয় ঠিকানা থাকতে হবে। বাংলাদেশি শিক্ষার্থীরা সাধারণত নন-রেসিডেন্ট ইন্ডিয়ান (এনআরআই) বা ওভারসিজ সিটিজেনশিপ অফ ইন্ডিয়া (ওসিআই) কার্ড হোল্ডার হিসেবে আইআইটি পরীক্ষার জন্য রেজিস্টার করে থাকে।

আইআইটি পরীক্ষা দেওয়ার সুবিধাগুলির মধ্যে রয়েছে ভারতের সেরা প্রযুক্তিগত প্রতিষ্ঠানগুলিতে অধ্যয়নের সুযোগ পাওয়া। আইআইটি পাস করা শিক্ষার্থীরা তাদের ক্ষেত্রে বিশেষজ্ঞ হিসাবে বিবেচিত হয় এবং তাদের চাকরির বাজারে উচ্চ চাহিদা থাকে। তাছাড়া, আইআইটি প্রতিষ্ঠানগুলি শিক্ষার্থীদের জন্য উন্নত গবেষণা সুযোগ এবং আন্তর্জাতিক অভিজ্ঞতা অর্জনের সুযোগ প্রদান করে।

যদিও আইআইটি পরীক্ষা দেওয়ার অনেক সুবিধা রয়েছে, তবে এর কিছু অসুবিধাও রয়েছে। প্রথমত, পরীক্ষাটি অত্যন্ত প্রতিযোগিতামূলক এবং এতে সফল হওয়ার জন্য যথেষ্ট প্রস্তুতি প্রয়োজন। দ্বিতীয়ত, বাংলাদেশি শিক্ষার্থীদের ভারতে থাকা এবং পড়াশোনা কঠিন হতে পারে, কারণ তাদের দেশের বাইরে বসবাস করতে এবং নতুন সংস্কৃতিতে খাপ খাইতে হবে। তৃতীয়ত, আইআইটি দ্বারা প্রদত্ত ফি এবং অন্যান্য খরচগুলি বাংলাদেশি শিক্ষার্থীদের জন্য উচ্চ হতে পারে।

See also  চেকের মামলার রায়ের পর করণীয় কী? – নিরীক্ষা, আপিল ও আদালতের বাইরে মীমাংসা

ফজলে কবিরের পটভূমি

ফজলে কবির হলেন বাংলাদেশ ব্যাংকের দশম গভর্নর। তিনি ১৫ জুলাই ১৯৫২ সালে টাঙ্গাইল জেলায় জন্মগ্রহণ করেন। তিনি ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় থেকে অর্থনীতিতে স্নাতকোত্তর ডিগ্রী অর্জন করেন। তিনি ১৯৭৫ সালে বাংলাদেশ ব্যাংকে যোগদান করেন এবং বিভিন্ন দায়িত্ব পালন করার পরে ২০০৯ সালে গভর্নর নিযুক্ত হন। তিনি তিন বছরের জন্য এই পদে দায়িত্ব পালন করেন।

বাংলাদেশ ব্যাংকের গভর্নর হিসেবে নিয়োগ

ফজলে কবির হলেন বাংলাদেশ ব্যাংকের ১০ম গভর্নর। তিনি ১৯৯২ সালের ১ জুলাই থেকে ১৯৯৬ সালের ৩০ জুন পর্যন্ত এই পদে দায়িত্ব পালন করেন। তিনি একজন অভিজ্ঞ অর্থনীতিবিদ এবং আন্তর্জাতিক মুদ্রা তহবিলের (আইএমএফ) সাবেক কর্মকর্তা। গভর্নর হিসেবে তার মেয়াদে বাংলাদেশ ব্যাংকের স্বাধীনতা ও স্বচ্ছতা বৃদ্ধির জন্য কাজ করেছিলেন। তিনি আর্থিক খাত সংস্কার ও মুদ্রানীতি পরিচালনার ক্ষেত্রেও গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করেছেন।

ফজলে কবিরের অবদান

ফজলে কবির বাংলাদেশ ব্যাংকের ১১তম গভর্নর হিসেবে দায়িত্ব পালন করেছিলেন। তিনি ২০১৬ সালের ১৯ জুলাই তারিখে গভর্নর হিসেবে নিয়োগ পান এবং ২০১৮ সালের ৩ মার্চ পর্যন্ত এই দায়িত্ব পালন করেন।

তার নেতৃত্বে বাংলাদেশ ব্যাংকের অনেক গুরুত্বপূর্ণ সিদ্ধান্ত গৃহীত হয়, যার মধ্যে রয়েছে:

  • মুদ্রানীতি শিথিল করা, যা অর্থনৈতিক প্রবৃদ্ধি বাড়াতে সাহায্য করে।
  • ব্যাংকিং খাতে নতুন নিয়মাবলী প্রবর্তন, যা স্থিতিশীলতা এবং বিশ্বাসযোগ্যতা বাড়াতে সাহায্য করে।
  • আর্থিক অন্তর্ভুক্তি প্রচারের জন্য উদ্যোগ গ্রহণ, যা অর্থনৈতিক উন্নয়নে সহায়ক।

ফজলে কবিরের দায়িত্বকালে বাংলাদেশ ব্যাংক স্থিতিশীল এবং শক্তিশালী অবস্থায় ছিল, যা তার দক্ষ ও দূরদর্শী নেতৃত্বের প্রমাণ।

বাংলাদেশ ব্যাংকের অন্যান্য গভর্নর

বাংলাদেশ ব্যাংকের ১১তম গভর্নর হিসেবে দায়িত্ব পালন করেন ফজলে কবির। ২০০৯ সালের ১৯ জুলাই থেকে ২০১৬ সালের ১৫ জুলাই পর্যন্ত তিনি এই দায়িত্বে ছিলেন। তার আগে তিনি বাংলাদেশ ব্যাংকের ডেপুটি গভর্নর হিসেবেও দায়িত্ব পালন করেন।

See also  জাতীয় বিশ্ববিদ্যালয় থেকে কি সহকারী জজ হওয়া যায়? – পূর্ণাঙ্গ গাইড

ফজলে কবিরের গভর্নর হিসেবে সবচেয়ে উল্লেখযোগ্য অবদানগুলোর মধ্যে একটি হলো মুদ্রানীতির উদারীকরণ। এই উদারীকরণের ফলে ব্যাংকগুলোকে তাদের ঋণদান ও জমা গ্রহণের হার নিজেরাই নির্ধারণ করার সুযোগ দেওয়া হয়। এছাড়া, তিনি বৈদেশিক মুদ্রার বাজারেও উল্লেখযোগ্য সংস্কার সাধন করেন। ফলে, বৈদেশিক মুদ্রার বাজার আরও স্বচ্ছ ও স্থিতিশীল হয়ে ওঠে।

ফজলে কবিরের গভর্নরত্বকালে বাংলাদেশের অর্থনীতিও উল্লেখযোগ্যভাবে প্রবৃদ্ধি লাভ করে। এই প্রবৃদ্ধি অর্জনের ক্ষেত্রে তার নেতৃত্ব ও সংস্কারমূলক পদক্ষেপগুলো গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রেখেছে।

ফজলে কবিরের গভর্নর হিসেবে দায়িত্ব পালনকালে বাংলাদেশ ব্যাংক বেশ কয়েকটি আন্তর্জাতিক পুরস্কারও লাভ করে। এই পুরস্কারগুলো বাংলাদেশ ব্যাংকের কার্যকারিতা ও সুনামের প্রমাণ বহন করে।

বাংলাদেশের অর্থনৈতিক উন্নয়নে ফজলে কবিরের অবদান অসীম। তার নেতৃত্বে বাংলাদেশ ব্যাংক দেশের অর্থনীতির স্থিতিশীলতা ও প্রবৃদ্ধিতে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করেছে।

ফজলে কবিরের উত্তরাধিকার

ফজলে কবিরের অর্থনৈতিক চিন্তাধারা বাংলাদেশের অর্থনীতিতে সুদূরপ্রসারী প্রভাব ফেলেছে। তিনি সুদান ও ইসলামী ব্যাংকিং ব্যবস্থার জোরদার সমর্থক ছিলেন এবং ব্যাংকিং খাতে তাঁর সংস্কারের ফলে সুদহীন ব্যাংকিংয়ের উল্লেখযোগ্য বৃদ্ধি ঘটে। তিনি বৈদেশিক মুদ্রার রিজার্ভ বৃদ্ধি করার উপরও জোর দিয়েছিলেন এবং তার নেতৃত্বে বাংলাদেশের রিজার্ভ উল্লেখযোগ্যভাবে বৃদ্ধি পেয়েছিল। তাঁর অর্থনৈতিক নীতিগুলি অর্থনৈতিক স্থিতিশীলতা ও প্রবৃদ্ধি নিশ্চিত করতে সহায়তা করেছে, তবে তাদের দারিদ্র্যতা হ্রাস ও আয় বৈষম্য মোকাবেলা করার ক্ষেত্রে কার্যকারিতা নিয়েও প্রশ্ন উঠেছে। সামগ্রিকভাবে, ফজলে কবিরের অর্থনৈতিক চিন্তাধারা সমালোচনামূলক প্রশংসা ও সমালোচনার একটি মিশ্রণ সৃষ্টি করেছে, তবে তিনি নিঃসন্দে বাংলাদেশের অর্থনৈতিক উন্নয়নে একটি গুরুত্বপূর্ণ ব্যক্তিত্ব হিসাবে স্বীকৃত।

Tonmoy Avatar

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *