বাংলার প্রথম জনক: অজানা ইতিহাসের রহস্য উদঘাটন করুন

বাংলার প্রথম জনক: অজানা ইতিহাসের রহস্য উদঘাটন করুন

আপনাকে জানিয়ে দিতে পেরে আমি অত্যন্ত গর্বিত যে, আজকে আমি আপনাদের সাথে বাংলার প্রথম জনক সম্পর্কে কিছু তথ্য শেয়ার করব। বাংলার ইতিহাস অনেক প্রাচীন এবং সমৃদ্ধ। এই ইতিহাসের মধ্যে রয়েছে অসংখ্য রাজবংশ, রাজা-বাদশাহ, যুদ্ধ-বিগ্রহ, সাংস্কৃতিক উত্থান-পতন। আজকে আমি আপনাদের সাথে বাংলার প্রাচীন ইতিহাস, পুন্ড্ররাষ্ট্র ও সুহ্ম রাজ্য, বাংলার প্রথম রাজবংশ গৌড় রাজ্য, রাজা শশাঙ্ক এবং সর্বজন স্বীকৃত বাংলার প্রথম জনক সম্পর্কে কিছু তথ্য শেয়ার করব।

বাংলার প্রথম জনক কে?

মূলত বাংলার প্রথম জনক ভাষাবিদ কসম্বী মতে, ঢাকার পশ্চিমে দক্ষিণ রাঢ়ে গড় তোলা কিচক বংশজরা বাংলা ভাষার প্রথম উদ্ভাবক। প্রাচীনকালে এদেশটি বঙ্গ নামে পরিচিত ছিল। বঙ্গ নামটি সংস্কৃতের বঙ্গ বা বাঙ্গা শব্দ থেকে এসেছে, যার অর্থ সুন্দর। ৫ম-৬ষ্ঠ শতাব্দীতে ভারতের গুপ্ত সাম্রাজ্যের পতনের পর বাংলার ইতিহাসে গৌড় নরপতিদের শাসনামল শুরু হয়। তাদের রাজ্যটি গৌড় নামেও পরিচিত ছিল। সপ্তম শতাব্দীর শেষের দিকে গৌড় রাজা শশাঙ্কের আমলে বাংলা ভাষা আরও উন্নত হয়। তিনি তাঁর শাসনামলে তাঁর সাম্রাজ্যের বেশ কয়েকটি অংশে তাম্রলিপিতে লিখিত অসংখ্য তাম্রশাসন প্রদান করেন।

বাংলার প্রাচীন ইতিহাস

ইতিহাসের প্রথম পাতায় যাঁর নাম স্বর্ণাক্ষরে উৎকীর্ণ, তিনি বাংলার প্রথম জনক বাংলাসুর। তিনি রামায়ণ ও মহাভারতের মতো প্রাচীন ভারতীয় মহাকাব্যে উল্লেখযোগ্য একজন কিংবদন্তি চরিত্র। মনে করা হয়, তিনি একজন শক্তিশালী রাজা ছিলেন, যিনি বঙ্গ অঞ্চল শাসন করতেন। কিংবদন্তি অনুসারে, তিনি এমনই শক্তিশালী ছিলেন যে, দেবতারাও তাঁকে ভয় পেতেন। কিছু গ্রন্থে বলা হয়েছে, তিনি দেবী দুর্গার ভক্ত ছিলেন এবং তিনিই প্রথম দুর্গাপুজোর আয়োজন করেছিলেন। বাংলার জনগণ তাঁকে প্রথম জনক হিসেবে শ্রদ্ধা করে এবং তাঁর নামে অনেক মন্দির ও স্মৃতিস্তম্ভ রয়েছে। আজও ও সংস্কৃতিতে বাংলাসুরের নাম অমর হয়ে আছে।

পুণ্ড্ররাষ্ট্র ও সুহ্ম রাজ্য

পুণ্ড্ররাষ্ট্র ও সুহ্ম ছিল প্রাচীন ভারতবর্ষের উত্তর-পূর্বাঞ্চলের দুটি প্রধান রাজ্য। পুণ্ড্ররাষ্ট্র আজকের উত্তর বাংলাদেশ এবং পশ্চিম বঙ্গের কিছু অংশ জুড়ে বিস্তৃত ছিল, যখন সুহ্ম অবস্থিত ছিল আসামের ব্রহ্মপুত্র উপত্যকা ও বাংলাদেশের পূর্বাঞ্চলে।

See also  বাংলাদেশ বনাম মিয়ানমার: যুদ্ধে কে জিতবে, কে হারবে? বিশ্লেষণ করুন

পুণ্ড্ররাষ্ট্রের রাজধানী কুণ্ডিনপুর ছিল, যা বর্তমানে পশ্চিমবঙ্গের কোচবিহার জেলায় অবস্থিত। সুহ্ম রাজ্যের রাজধানী ছিল শ্রীহট্ট, যা বর্তমানে বাংলাদেশের একটি জেলা।

পুণ্ড্ররাষ্ট্র ও সুহ্ম উভয়ই কৃষিভিত্তিক রাজ্য ছিল এবং তাদের অর্থনীতি প্রধানত চাল, পাট এবং তুলা উৎপাদনের উপর নির্ভরশীল ছিল। তারা উল্লেখযোগ্য বাণিজ্য কেন্দ্র ছিল এবং ভারতের অন্যান্য অংশ এবং দক্ষিণ-পূর্ব এশিয়ার সাথে বাণিজ্য করত।

উভয় রাজ্যই বৌদ্ধধর্মের প্রধান কেন্দ্র ছিল। বৌদ্ধধর্মের প্রথম প্রচারকদের মধ্যে একজন, মহাকাশ্যপ, পুণ্ড্ররাষ্ট্রে জন্মগ্রহণ করেছিলেন। সুহ্ম রাজ্যেও বৌদ্ধধর্মের একটি বড় অনুসরণকারী ছিল এবং এটি উল্লেখযোগ্য বৌদ্ধ স্থানগুলির আবাসস্থল ছিল, যেমন সোমপুরা মহাবিহার।

পুণ্ড্ররাষ্ট্র এবং সুহ্ম উভয় রাজ্যই 4র্থ শতাব্দীতে গুপ্ত সাম্রাজ্যের অধীনে এসেছিল। গুপ্ত সাম্রাজ্যের পতনের পর, তারা বেশ কয়েকটি ছোট রাজ্যে বিভক্ত হয়ে গিয়েছিল। mid-8th century AD, the region came under the control of the Pala dynasty, who ruled over much of Bengal and parts of Bihar. The Pala dynasty was succeeded by the Sena dynasty in the 12th century AD. The Sena dynasty was eventually overthrown by the Muslim conquest of Bengal in the 13th century AD.

বাংলার প্রথম রাজবংশ গৌড় রাজ্য

বাংলার ইতিহাসের পাতায় রচিত গৌড় রাজ্য চিত্রিত হয়েছে স্বর্ণাক্ষরে। এই রাজবংশই বাংলার প্রথম সুসংহত রাজনৈতিক শক্তির প্রতীক। গৌড় রাজ্যের প্রতিষ্ঠাতা ছিলেন শশাঙ্ক। তিনি সপ্তম শতাব্দীর গোড়ার দিকে রাজ্যটি প্রতিষ্ঠা করেছিলেন। গৌড়ের রাজধানী ছিল কর্ণসুবর্ণ, যা বর্তমানে পশ্চিমবঙ্গের মুর্শিদাবাদ জেলায় অবস্থিত।

গৌড় রাজ্যের সমৃদ্ধি অসাধারণ ছিল। রাজ্যটি বাণিজ্য ও কৃষির একটি কেন্দ্র ছিল। গৌড়ের রাজারা ছিলেন শক্তিশালী প্রশাসক এবং তারা রাজ্যের সুষ্ঠু শাসন ব্যবস্থা নিশ্চিত করেছিলেন। তারা শিল্প ও সংস্কৃতিরও পৃষ্ঠপোষক ছিলেন। গৌড়ের রাজত্বকালে মন্দির ও বিহার নির্মাণের ক্ষেত্রে উল্লেখযোগ্য অগ্রগতি হয়েছিল। এছাড়াও, এই সময় বাংলা ভাষা ও সাহিত্যের বিকাশে গুরুত্বপূর্ণ অবদান রাখে।

See also  বাংলাদেশের গণপরিষদের আদেশ জারি হওয়ার কারণ জানুন

রাজা শশাঙ্ক

রাজা শশাঙ্ক – বাংলার এক 傳奇 নরপতি। তিনি ৭ম শতকের প্রথমার্ধে গৌড় রাজ্যের শাসক ছিলেন। তাঁর রাজত্বকালকে বাংলার স্বর্ণযুগের সূচনা হিসেবে বিবেচনা করা হয়।

শশাঙ্ক একটি নিরুপম যোদ্ধা ও রাজনীতিবিদ ছিলেন। তিনি বহু যুদ্ধে জয়লাভ করে তাঁর রাজ্যের সীমানা বিস্তৃত করেন। তিনি শক্তিশালী হুণ সাম্রাজ্যকে পরাজিত করেন এবং পূর্ব ভারতের অধিকাংশ অংশকে গৌড় রাজ্যের অধীনে আনেন।

শশাঙ্কের রাজত্বকাল ছিল বৌদ্ধধর্মেরও একটি অগ্রগতির সময়। তিনি বৌদ্ধ বিহার ও প্রতিষ্ঠানগুলির পৃষ্ঠপোষকতা করেন। তাঁর রাজধানী কানসুবর্ণ (বর্তমানে পশ্চিমবঙ্গের মুর্শিদাবাদ) একটি গুরুত্বপূর্ণ বৌদ্ধ শিক্ষা ও সংস্কৃতির কেন্দ্র ছিল।

শশாঙ্কের বীরত্ব ও শাসনকৌশল আজও বাঙালিদের অনুপ্রাণিত করে। তিনি বাংলার ইতিহাসের সবচেয়ে বিখ্যাত এবং সম্মানিত শাসকদের একজন। তাঁর উত্তরাধিকার আজও বাংলার সংস্কৃতি ও ইতিহাসের অবিচ্ছেদ্য অঙ্গ।

সর্বজন স্বীকৃত বাংলার প্রথম জনক

বাংলার জনক বলতে আমি কী বুঝি? এটি একটি আকর্ষণীয় প্রশ্ন যা আমার মনে বহু বছর ধরে ঘুরে বেড়াচ্ছে। আমি বিশ্বাস করি যে বাংলার জনক হলেন সেই ব্যক্তি যিনি প্রথম বাংলা ভাষায় লিখেছিলেন। কেননা, ভাষাই একটি জাতির স্বাধীনতার ভিত্তি। আর বাংলা ভাষা আমাদের মাতৃভাষা। বাংলা ভাষার জনক হিসেবে আমি কবি কালিদাস রায়কেই মনে করি। কারণ, তিনিই প্রথম বাংলা ভাষায় “গীত গোবিন্দ” কাব্য রচনা করেছিলেন। যা বাংলা ভাষার প্রথম সাহিত্যকর্ম হিসেবে স্বীকৃত।

Ucchal Avatar

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *